ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় সংসদে পাস হলো সর্ববৃহৎ বাজেট

প্রকাশিত: ০০:১৮, ৩০ জুন ২০১৬

জাতীয় সংসদে পাস হলো সর্ববৃহৎ বাজেট

সংসদ রিপোর্টার ॥ জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতক্রমে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে। এই বাজেট পাসের মধ্যদিয়ে জাতীয় সংসদ আগামী ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্য অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারকে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা খরচের অনুমোদন দিয়েছে। এই অর্থ বরাদ্ধের জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকে মোট ৫৫টি মঞ্জুরী দাবি সংসদে উত্থাপন করা হয়। এসব মঞ্জুরী দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র ৯ জন সংসদ সদস্য মোট ৪২০টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। স্পীকারের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে এসব মঞ্জুরী দাবির মধ্যে তাঁরা ৭টি দাবীর ওপর আলোচনায় অংশ নেন। তবে সবগুলো ছাঁটাই প্রস্তাবই কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে ৫৫টি মঞ্জুরী দাবী সরকার ও বিরোধী দলের কন্ঠভোটে সংসদে গৃহীত হয়। বাজেট পাসের পর সংসদ অধিবেশন আগামী ১৭ জুলাই রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পর ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তরপর্বটি টেবিলে উত্থাপনের পর বাজেট পাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়। স্পীকার সরাসরি মঞ্জুরী দাবিগুলো নিয়ে ভোটে চলে যান। এ সময় ব্যাংক ও আর্থীক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের ওপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাব আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। মঞ্জুুরিকৃত দাবিগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নির্দিষ্টকরণ বিল- ২০১৬ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। বাজেট পাসের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্য টেবিল চাপড়িয়ে ‘সমৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার’ ইতিহাসের সর্ববৃহৎ বাজেট বাস্তবায়নের যাত্রাকে স্বাগত জানান। বাজেট পাসের পর অর্থমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে যোগদানের জন্য সকল সংসদ সদস্যকে আমন্ত্রণ জানান। সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মধ্যে সংসদের ওপর দায় ১ লাখ ৫৩ হাজার ১৪৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এই টাকা অনুমোদনের জন্য কোন ভোটের প্রয়োজন হয় না। সরাসরি সংসদ এই টাকা অনুমোদন করে। অবশিষ্ট ৩ লাখ ১১ হাজার ৪১০ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা ভোটের মাধ্যমে সংসদে গৃহীত হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ২ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে যে বাজেট পাস হয়েছে তার আকার দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। যা মূল বাজেটের চেয়ে এক লাখ ২৩ হাজার ৯৪৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বেশী। মূলতঃ এটি হচ্ছে সরকারের গ্রস বাজেট। আর সংসদে পাসকৃত এই বাজেটের পুরো অর্থ কখনো ব্যয় হয় না। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বিভিন্নখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হয়। এই অতিরিক্ত বরাদ্দ আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজেটের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। তবে নিট বাজেট হচ্ছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। যা আগামী অর্থবছরে সরকারের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যয় করা হবে। বাজেট পাসের আগে সাতটি মঞ্জুরী দাবী নিয়ে আলোচনা হয়। এই সাতটি মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরী দাবীর বিপরীতে যে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো আনা হয়েছে সেগুলো হলো- মিতব্যয়ী ছাঁটাই, নীতি অনুমোদন ছাঁটাই এবং প্রতীক ছাঁটাই। অর্থাৎ বাজেট বরাদ্দ না দিয়ে এক টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম ওমর, সেলিম উদ্দিন, নুরুল ইসলাম মিলন, কাজী ফিরোজ রশীদ, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও আবদুল মতিন। তবে তাঁদের সকল ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোই কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। ব্যাংক ও আর্থীক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ॥ এ খাতে বরাদ্দের কঠোর বিরোধীতা করে জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, ব্যাংক ও আর্থীক খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা নিচ্ছে, অথচ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। রিজার্ভ চুরি, শেয়ার চুরি, হলমার্ক কেলেঙ্কারী, বেসিক ব্যাংক থেকে চুরি, বিসমিল্লাহ গ্রুপের চুরি এবং ডেসটিনি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের কোন বিচার হয়নি। অর্থমন্ত্রী কী বাজেটের মাধ্যমে এই চুরি-লুন্ঠনের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন? আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে তাঁরা একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন। জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ব্যাংকিং খাতের লুটপাট নিয়ে সংসদ সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এজন্য তাঁদের ধন্যবাদ। ব্যাংকিং খাতের লুটপাট নিয়ে আমরাও চিন্তিত। এটা যাতে ভবিষ্যতে না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, লুন্ঠিত টাকা জনগণের। এজন্য রাষ্ট্র দায়িত্ব গ্রহণ করছে। প্রত্যেকটি চুরির তদন্ত ও মামলা হয়েছে। তবে বেসিক ব্যাংকের বিষয়ে এখনও মামলা হয়নি। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। আমি আপনাদের নিশ্চিন্ত করতে চাই যে, যারা দোষী অবশ্যই তাদের শাস্তি হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ॥ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের বিরোধীতা করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রায়শই বৈষম্য করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়, কিন্তু ব্যয় করতে পারে না। বাজেট বাস্তবায়ন করতে না পারলে ‘পরি’ উঠে যাবে, শুধু ‘কল্পনা’ থাকবে। ব্যয় করতে না পারলে বড় বড় প্রকল্প নিয়ে কী লাভ? এডিবি’র বাস্তবায়ন ঠিক সময়ে হয় না। শেষ সময়ে তড়িঘড়ি করে কাজ করতে গিয়ে মান খারাপ করে ফেলে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা তদারকি জোরদার করার দাবি জানান। জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, সবাই আশাবাদী মানুষ, আমারও কিছু আশা আছে। সবার ধারণা যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করি না, গ্রহণ করলেও সময়মত হয় না। আমি দৃঢ়কন্ঠে বলতে পারি, দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে যে সকল পরিকল্পনা গ্রহণ করে ও অনুমোদন দেই, তা অত্যন্ত স্বচ্ছ-দায়বদ্ধতা রেখেই বাস্তবায়ন করি। বিশাল বিশাল অর্জনগুলো কখনোই ম্লান করা যাবে না। সারা বছরই কাজ হয়, কিন্তু বছরের শেষে পেমেন্ট দেওয়া হয়। তখন মনে হয় বছরের শেষে তড়িঘড়ি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এটা মোটেও সঠিক নয়। তিনি আগামী অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশের বেশী অর্জিত হবে বলে সংসদকে আশ্বস্ত করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ॥ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দের বিরোধী করে জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা ছাঁটাই প্রস্তাব এনে বলেন, দুর্নীতি খাতেও দুর্নীতি ঢুকে গেছে। দুর্নীতি আকন্ঠ নিমজ্জিত। শিক্ষাখাতে বরাদ্দ হয় কিন্তু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি হয় না। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা কোয়ালিটি চাই, কোয়ান্টিটি চাই না। গোল্ডেন ফাইভ দরকার নেই, গুণগত শিক্ষায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেশি বরাদ্দ দিতে চাই কিন্তু শিক্ষার মান ভাল করেন। গড় আড়াই বছরে একটি স্কুল-কলেজ এমপিওভূক্ত হয়নি। মান-সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই এমপিওভূক্ত করতে হবে। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষাখাতে আরও ব্যয় বরাদ্দ প্রয়োজন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় গ্রহণ করার পর বিপুল সংখ্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভূক্তি করা হয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন নেই, তবে মান-সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দরকার। ৭শ’ কলেজে মাত্র এক-দুইজন করে ছাত্র ভর্তির জন্য আবেদন করেছে। আমরা কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি দুটোই বজায় রাখতে চাই। গুণগত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তিনি সংসদ সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ॥ এই মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দের বিরোধীতা করে জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, হাসি ও ভালোবাসা অনেক রোগ সেরে যায়। কিন্তু প্রকৃত চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। স্বাস্থ্যখাতে সেবার মান নি¤œমানের। হাসপাতালগুলোর গুনগতমান নেই। এতো অপরিস্কার-অপচ্ছিন্ন হাসপাতাল, রোগীদের প্রতি চিকিৎসকদের অবহেলা বেড়েই চলেছে। তাই সেবার মান অবশ্যই বাড়াতে হবে। গ্রামেই এখন মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে এটা অস্বীকার করছি না, কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে সেবার মান আরও বাড়াতে হবে। বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ এখন একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে, কারণ বিপুল পরিমাণ কালো টাকা রয়েছে মানুষের হাতে। তাঁরা স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বৃদ্ধির দাবি জানান। জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে গ্রামে চিকিৎসক দিয়েছি। চিকিৎসকরা ঠিকমত গ্রামে গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন কি-না তা তদারকি করার জন্য এমপিদের সভাপতি করা হয়েছে। এমপিদের প্রত্যয়ণপত্র ছাড়া কোন চিকিৎসকদের বদলী বা পদোন্নতি হবে না, এমন পরিকল্পনার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। আমাদের সম্পদ সীমিত, ইচ্ছা থাকলেও অনেক কিছু করা যায় না। সম্পদশালী এমপিরা গ্রামের হাসপাতালগুলোতে সহযোগিতা করেন, তবে অনেক সমস্যাই কমে যাবে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ॥ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দের বিরোধীতা করে জাতীয় পার্টি ও সংসদ সদস্যরা বলেন, স্থানীয় সরকার হলো গ্রামের মানুষের আশা-ভরসার স্থল। তবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে। শহর-গ্রামের মধ্যে বরাদ্দে চরম বৈষম্য চলছে। ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশরা রিক্সা চালায়, ঝাড়– দেয়। সচিবরা কোন সুযোগ পায় না। জেলা পরিষদকে যেন দেখার কেউ নেই। তাই ইউপিকে প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে ইউপিকে ঘোষণা দিতে হবে। জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি উন্নয়নমুখী সংস্থা। গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হয়। বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকারকে অনেক শক্তিশালী করেছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনও আর্থীকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেনি। প্রত্যেক বছরেই স্থানীয় সরকারে অতিরিক্ত থোক বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছে। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন করতে আরো বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজন। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ॥ এই মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দের বিরোধী করে জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, টেন্ডার ছাড়া অনেক কাজ প্রদানের কারণে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কাজগুলো নি¤œমানের হচ্ছে। সোলার লাইট প্রদানের নামে অবচয় হচ্ছে। এই মন্ত্রণালয় টিআর, খাবিখা, টিনসহ অনেক কিছু দেয়। এগুলো সুষ্ঠুভাবে জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দিতে গেলে দেশের চিত্রই পাল্টে যেত। কিন্তু তা হয় না। তাঁরা সোলার ব্যবস্থাকে ঢাকা থেকে শহর-গ্রামে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। জবাব দিতে গিয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, বিদ্যুত দেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে টিআর- খাবিখার অর্ধেকভাগ সোলার প্যানেলে অন্তর্ভূক্তি করার সিদ্ধান্ত নেই। তখন অনেক এমপি তা গ্রহণ করতে চাননি। এখন আবার সেসব এমপিই সোলারে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান। সোলারের মান নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর অবস্থানে। ইডকলের সরবরাহকৃত সোলার প্যানেল নিয়ে ব্যবহারকারীরা অত্যন্ত সন্তুুষ্ট। একটু বেশি খরচ হলেও মান সম্পন্ন পরীক্ষিত। ধর্ম মন্ত্রণালয় ॥ ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দের বিরোধীতা করে জাতীয় পার্টি ও সংসদ সদস্যরা বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে যে ব্যয় হচ্ছে তা স্বচ্ছ নয়। মসজিদ-মন্দিরের ব্যয় বরাদ্দ সত্যিই অপ্রতূল। হজযাত্রীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন। সরকারি অর্থে রাজনৈতিক কর্মী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি পিয়ন পর্যন্ত হজে যায়, অথচ অনেক বড় বড় আলেমরা অর্থের অভাবে হজে যেতে পারেন না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা হজের সময় ব্যবসা খুলে বসেন। হজ নিয়ে বাণিজ্য অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। জবাবে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, হজ নিয়ে কোন ধরণের অনিয়ম-গাফিলতি আমরা সহ্য করছি না। যার বিরুদ্ধেই কোন অভিযোগ আসছে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
×