ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্ত্রী হত্যার দায়ে রাজশাহীর আদালতে স্বামীর ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ২৯ জুন ২০১৬

স্ত্রী হত্যার দায়ে রাজশাহীর আদালতে স্বামীর ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর আদালতে বগুড়ার আদমদীঘিতে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ ও পায়ের রগ কেটে হত্যা মামলায় স্বামীকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। একই মামলায় অপর তিন আসামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-াদেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- এবং অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদ- দেয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম আহম্মেদ খলিলুর রহমান এ রায় দেন। রায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালশন গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে সোহেল ইবনে করিম (৩৫)। আর যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্তরা হলেন, বগুড়ার ফুলবাড়ি উপজেলার সরকারপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান সরকারের ছেলে শাকিল সরকার (২৮), আদমদীঘি উপজেলার সন্তোষ চন্দ্র ঘোষের ছেলে সেনগুপ্ত ঘোষ (৩৫) এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলার বাটাহারা গ্রামের খয়বর আলী ফকিরের ছেলে আহাদ আলী (৪০)। রায় ঘোষণার সময় আসামী শাকিল ও সেনগুপ্ত আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। তবে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত সোহেল ও আহাদ আলী এ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর জামিন নিয়ে পলাতক আছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁশলী এন্তাজুল হক বাবু জানান, ভিকটিম শিরিন আক্তার (২৫) সোহেল ইবনে করিমের তালাক দেয়া স্ত্রী ছিলেন। নানা কারণে সোহেল তাকে হত্যার হুমকি দিতেন। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে আসামীরা একটি মাইক্রোবাসে করে আদমদীঘি উপজেলার মুরইল গ্রামে শিরিন আক্তারের বাবা আজিজার রহমানের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় বাড়িতে তার বাবা-মা না থাকার সুযোগে আসামীরা তাকে জোর করে বাড়ির পেছনে নিয়ে যায়। এরপর তারা তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় তার দুই পায়ের রগও কেটে দেয়া হয়। এতে শিরিন আক্তার মারা গেছেন ভেবে আসামীরা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই সময় শিরিন আক্তার মারা না গেলেও চিরদিনের মতো বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ২০১৩ সালের ২৬ আগষ্ট শিরিন আক্তার মারা যান। এ ঘটনায় আসামীদের বিরুদ্ধে আদমদীঘি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হলে পুলিশ তাদের আটক করে। এরপর তারা আদালত থেকে জামিন পেলেও মামলাটি বগুড়া জজ আদালতে চলছিল। পরে এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বগুড়া থেকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় আদালত মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত এ রায় দেন।
×