ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেন বা জঙ্গী হচ্ছে, ফিরবেও বা কোন্ পথে -স্বদেশ রায়

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ২৯ জুন ২০১৬

কেন বা জঙ্গী হচ্ছে, ফিরবেও বা কোন্ পথে -স্বদেশ রায়

ফ্রান্সের, আমেরিকার ও বাংলাদেশের মাদারীপুরের হামলাকারী তিন জনের ওপর মিডিয়ায় ও সোশ্যাল ফোরামে যত লেখালেখি হয়েছে, বিশেষ করে হত্যাকারী বা হত্যার চেষ্টাকারীকে নিয়ে সেগুলো যতটা পারি পড়ার চেষ্টা করেছি। এই তিন হামলাকারীর পরিচিত জনের কথাগুলো বার বারই পড়েছি, হামলাকারীর চরিত্র বোঝার জন্য। তিন হামলাকারীর এক জায়গাতে মিল, তিনজনই খুব বেশি আত্মমুখী (ইনট্রোভার্ট)। তিন জনই সচ্ছল পরিবারের ছেলে। আশির দশকে বাংলাদেশে যখন ইসলামী ছাত্রসেনা, ইসলামী ছাত্রশিবির হত্যাকাণ্ড শুরু করে তখন একটা কথা প্রায়ই বুদ্ধিজীবীরা বলতেন, দরিদ্র ছেলেদের ব্যবহার করা হচ্ছে, তাদের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে। জামায়াতে ইসলামী ও তৎকালীন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মুসলিম লীগ মার্কা একটি সংগঠন এরা তাদের প্রতি মাসে মাসোহারা দেয়- তাদের কথামতো এই দরিদ্র ছেলেমেয়েগুলো এ কাজ করছে। রিপোর্টার হিসেবে তখন কখনও এ বিষয়টি খোঁজ নেয়নি। তাই ওই কথার সত্যতা কতখানি তা বলতে পারব না। তবে নব্বই দশকে একটি বিশেষ কলেজে ছাত্রশিবিরের একজন সভাপতির নাম জানার পরে চমকে যাই, কারণ তার পরিবারকে চিনি। বনেদি উচ্চ পরিবার এবং খুবই সচ্ছল। তারা এক সময়ে মুসলিম লীগ করতেন। ওই সময়ে অধিকাংশ সম্পন্ন মুসলিম পরিবার মুসলিম লীগ করতেন। তারা পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন কিন্তু ব্যক্তি জীবনে কখনই সাম্প্রদায়িক ছিলেন না। বরং যথেষ্ট সংস্কৃতির চর্চা ছিল ওই সব পরিবারে। ওই ছাত্রশিবিরের সভাপতির বাবাকে জানতাম। তিনি সাহিত্যের মানুষ ছিলেন- এমনকি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একজন গুণগ্রাহী ছিলেন। তিনি এমনও বলতেন, বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিম ছাড়া কেউ তো কোন সাহসী ও সার্থক উপন্যাস লিখতে পারেননি। এই পরিবারের তৎকালীন পাকিস্তান আন্দোলনের মুসলিম করা মানায়, পরবর্তীতে এসব পরিবার আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। আবার এ ধরনের অনেক পরিবারের ছেলেরা বামপন্থীও হয়েছে ষাটের দশকে, যেমন রাশেদ খান মেননদের পরিবার। যখন শুনি তার ছেলে একটি বড় কলেজের ছাত্রশিবিরের সভাপতি তখন অনেকটা চমকে যাই। কারণ আর যাই হোক তাদের কয়েক পুরুষের যে সম্পদ আছে তাতে তার তো অর্থের প্রয়োজন নেই। নব্বইয়ে তখন রাজপথের আন্দোলনসহ আরও অনেক খবরের কাজ, পাশাপাশি নানান কাজে এ বিষয়টির গভীরে যাওয়ার কোন সময় পাইনি বা সম্ভবও হয়নি। শুধু মাথার ভেতর চিন্তাটি থেকে যায়, কেন এমন পরিবার থেকে শিবিরে যাচ্ছে? এরপরে গত কয়েক বছরে যখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সচ্ছল ঘরের ছেলেমেয়েদের হিযবুত তাহ্রীতে যোগ দেয়ার ও তাদের নানা কর্মকাণ্ডের নিউজ আসতে থাকে তখন বার বার আমার রিপোর্টারদের বলেছি, তোমরা একটু ভাল করে খোঁজখবর নিয়ে নিউজ করার চেষ্টা কর তো- কেন এ ধরনের পরিবারের সন্তানেরা এখানে যাচ্ছে? নিশ্চয়ই অর্থের লোভে তারা যাচ্ছে না। তারা এ নিয়ে অনেক রিপোর্ট করেছে কিন্তু বিষয়টির গভীরে যেতে পারেনি। তাই তাদের রিপোর্ট থেকে এর কোন উত্তর পাইনি। বিবিসির প্রাক্তন রিপোর্টার ফ্রান্সিস হ্যারিসন ক্যাম্রিজ ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় বাংলাদেশের পলিটিক্যাল ইসলামের ওপর গবেষণাধর্মী বড় রিপোর্ট তৈরি করে। ফ্রান্সিসের এ কাজ করার সময় তার সঙ্গে কথায় কথায় আমি ইনডিরেক্টলি আমার দ্বিমতটি জানিয়েছিলাম। ফ্রান্সিস আসলে জঙ্গীবাদকে পলিটিক্যাল ইসলাম বলছে। যা হোক, পশ্চিমাদের জঙ্গীবাদ আর পলিটিক্যাল ইসলামের পার্থক্য বোঝানো খুবই মুশকিলের বিষয়। কারণ ওদের মাইন্ড সেট আপ ভিন্ন। যাক সে প্রসঙ্গ এখানে নয়। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ বা বিদেশী কোন রিপোর্ট বা গবেষণায় এই তথ্যটি স্পষ্টভাবে মেলেনি, কেন সচ্ছল পরিবারের মেধাবী ছেলেমেয়েরা জঙ্গীর পথে যাচ্ছে? নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, ইনডিপেনডেন্ট, গার্ডিয়ান কিছু নিউজ করেছে, কী ভাবে তারা যাচ্ছে এবং তাদের পরিবারের পারিপার্শ্বিকতা। কিন্তু সেখানেও বিষয়টি উঠে আসেনি। তাছাড়া কেন যেন মনে হয়, সাধারণ পশ্চিমাদের দ্বারা মুসলিম মাইন্ড এনালিসিস করা সম্ভব নয়। বিষয়টি যারা মুসলিম সমাজের অন্তর চেনে সে ধরনের মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া স্কলারদের হাত দিয়ে আসতে হবে। কারণ বিষয়টি এখন খুবই জরুরী। সমস্যাটি গ্লোবাল সমস্যা। এখানে ট্রাম্পের মতো সস্তা কথা বলে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না যে, মুসলিমদের মঙ্গলগ্রহে পাঠিয়ে দিন। তবে আমাদের মতো অর্ধশিক্ষিত ও সাধারণ সাংবাদিকদের চোখে কিছু কিছু বিষয় খুব হাল্কাভাবে আসে। গবেষকরা হয়ত এর গভীরে যেতে পারবেন। যেমন ফ্রান্স, আমেরিকা ও বাংলাদেশের মাদারীপুরের ঘটনা যে তিন জন ঘটিয়েছে এদের চরিত্রে একটি জায়গায় খুব মিল দেখা যাচ্ছে যা আগেই উল্লেখ করেছি। এরা খুবই আত্মমুখী। আত্মমুখী ছেলেমেয়েদের প্রধান সমস্যা হলো এদের সোশ্যালাইজেশন খুব কম হয়। তাই পারিবারিকভাবে ছোটবেলা থেকে এদের লেখাপড়া ও সংস্কৃতির ভিত্তিটা যদি শক্ত হওয়ার সুযোগ না পায়, তাহলে এরা যে কোন সময়ে যে কোন কিছুর দ্বারা সহজে প্রভাবিত হয়ে পড়তে পারে। তাছাড়া এখন স্মার্টফোনের যুগে এমনি কিন্তু মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। মানুষের থেকে সে বেশি টেকনোলজির সাহচর্যে থাকছে। কারণ ওই টেকনোলজিতে সে অনেক কিছু পাচ্ছে। এখন পরিবার থেকে পড়াশোনার ভিত্তিটা ছোটবেলা থেকে শক্ত হলে সে ওই টেকনোলজির দ্বারা তার পড়াশোনাকে আরও এগিয়ে নিতে পারে। অন্যদিকে এ ধরনের আইএস বা ব্রাদারহুডে যোগ দেয়া কয়েকটি ছেলেমেয়ের নিউজ পশ্চিমা পত্রপত্রিকায় যা পড়েছি, সেখানেও লক্ষ্য করেছি ছেলেমেয়েগুলো আত্মমুখী এবং তারা কারও দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার পরে পরিবার থেকেও মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর ওই স্মার্ট টেকনোলজিতে যে বিষয়ে অর্থাৎ আইএস বা ওই ধরনের কোন বিষয়ে সে প্রভাবিত হয়েছে, তার ওপরেই কেবল খোঁজ নিতে থাকে। যে শক্তিটা তরুণ বা কিশোরদের প্রভাবিত করছে তারা কিন্তু খুব সাকসেসফুলি এই স্মার্ট টেকনোলজি ব্যবহার করছে। সেখানে তারা এ বিষয়ে নানা কিছু জড়ো করে রেখেছে যা এদের প্রভাবিত হতে আরও সাহায্য করছে। এর থেকে সার্বিক কী ভাবে এসব ছেলেমেয়েকে বের করে আনতে হবে তা হঠাৎ করে কেউ বলতে পারে না। এটা অনেক বড় সামাজিক ও মানবিক বিপর্যয়। এ অবস্থা কাটানোর জন্য গোটা বিশ্বকে এক হয়ে কাজ করতে হবে এবং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি গবেষণা করে এদের চরিত্র বদলানোর পথ খুঁজতে হবে। অন্যথায় এই সমস্যা খুব শীঘ্রই নির্মূল হওয়ার নয়। বরং সমাজ ও রাষ্ট্র বাধ্য হচ্ছে এদের অনেক কিছু মেনে নিতে। অবচেতন ও খানিকটা ভীতু হয়ে মেনে নিতে নিতে সমাজ ও রাষ্ট্রগুলো এক পর্যায়ে গিয়ে আরো বিপদে পড়বে। তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের থেকে বাংলাদেশে এই সমস্যা সমাধান করা তুলনামূলক সহজ। কারণ বাঙালী চরিত্র সহজিয়া। যতই এদের কট্টর বানানো চেষ্টা করা হোক না কেন, বাস্তবে সে কাজ কঠিন। তার পরেও বাংলাদেশ যেখানে চলে গেছে, এখান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। যেমন এখন যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তা হলো ছাত্রছাত্রীরা ওইভাবে সোশ্যালাইজড হচ্ছে না। অথচ শিক্ষা মানে তো শুধু কয়েকটি সার্টিফিকেট যোগাড় নয়, একটি তরুণ বা কিশোরকে সামাজিক হয়ে উঠে একটি সার্বিক মানুষ হয়ে ওঠা। কিন্তু এখন সব থেকে বড় বিষয়, সমাজটাই কোথায় যেন ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, ধর্ম এবং রাষ্ট্রটাই কেবল দৃশ্যমান। রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে থাকে রাজনীতির ওপর, রাজনীতি দাঁড়িয়ে থাকে সমাজের ওপর। সমাজ ও রাজনীতির সীমারেখাটা এতই সূক্ষ্ম যে সাধারণ মানুষ এর পার্থক্য রেখা টানতে পারে না। যেহেতু রাজনীতিই রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করে তাই সবটুকুই সে রাজনীতি মনে করে বসে। কিন্তু মানুষের ভেতরগত জিন বা তার চারিত্রিক কম্পোনেন্টগুলো সমাজ থেকে আসে। মানুষ সমাজ গড়েছে হাজার হাজার বছর আগে আর রাজনীতি গড়েছে কয়েক শ’ বছর মাত্র। এ কারণে রাজনীতিও সমাজের একটি কম্পোনেন্ট মাত্র। তাই বাঙালী সমাজের চরিত্রই বাঙালী জিনে থাকবে। একে প্রভাবিত করে ভিন্ন পথে সাময়িক নিয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু একটু সঠিক পথে চেষ্টা করলেই একে ফেরানো যায় তার সহজিয়া গ্রহণমূলক বা আত্মীকরণমূলক চরিত্রে। তবে এর জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানের শিক্ষা ব্যবস্থা। বেসরকারী শিক্ষা ব্যবস্থাগুলো এত বেশি কমার্শিয়াল যে, সেখানে কেবল সার্টিফিকেট পাওয়া যায়, সার্বিক মানুষ হওয়ার কোন সুযোগ সেখানে তৈরি করা হয় না। একটি মানুষ বিকশিত হতে তার যতগুলো নান্দনিক দিক, যতগুলো চিন্তা বিকাশের দিক তা খুলে দেয়ার একটা পরিবেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখতে হয়। সেগুলোর কোন সুযোগই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশতেই রাখা হয়নি। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ক্রমেই এসব হারিয়ে ফেলছে। যে কারণে কী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, কী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র অনেক তরুণ মন আলোর পথে যাওয়ার বদলে অন্ধকারের পথে চলে যাচ্ছে। জঙ্গীরা, পশ্চাৎপদরা এ সুযোগটি নিচ্ছে। অন্যদিকে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতিও এক শ্রেণীর ছাত্রদের বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলোতে ছাত্র রাজনীতির কোন সুযোগ নেই। এই সুযোগ না থাকার সুযোগ নিয়ে জঙ্গীরা তথাকথিত নানা স্টাডি গ্রুপের নামে গড়ে তুলেছে তাদের সংগঠন। যার মাধ্যমে তারা মেধাবী আত্মমুখী ছেলেমেয়েদের প্রভাবিত করছে সহজে। এমনকি এখন এই জঙ্গী স্টাডি গ্রুপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়েও গড়ে উঠেছে। সেখানে ভাল ছাত্ররা গিয়ে বিপথগামী হচ্ছে। এর বিপরীতে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর যা অবস্থা তা দুঃখজনক। এক্ষেত্রে তাদের কিছুই করার নেই। কারণ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো এখন ওই অর্থে আর বিকশিত হওয়ার কোন স্থান নয়। জাতীয় রাজনীতিতে তারা না দিতে পারছে কোন নতুন নেতৃত্ব, তেমনি তারা কোন অবদান রাখতে পারছে না এক ঝাঁক সুন্দর তরুণ তৈরিতে। ওই অর্থে তারা বর্তমানের সঙ্গে মিল রেখে কোন আদর্শ তরুণদের সামনে আনতে পারছে না। তারা গড়ে তুলছে না বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি, সমাজ চিন্তার কোন ফোরাম যার ভেতর দিয়ে ছাত্ররা বিকশিত হবে। তাই সেখানে কোন ভাল ছাত্র ওই অর্থে যোগ দেয় না। কোন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবার চায় না তাদের সন্তানরা এই রাজনীতি করুক। এর ফলে যে কত ক্ষতি হচ্ছে দেশের- তা সম্প্রতি ওবায়দুল কাদের এক বক্তৃতায় কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গত বিশ বছর ডাকসু নির্বাচন হলে দেশ অন্তত চল্লিশজন নেতা পেত। সত্যি অর্থে দেশ এই চল্লিশজন নেতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং এই যে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ ও জাতি এটাও কিন্তু সকলে ভুলে গেছে। যে ছাত্ররা রাজনীতি করছে তারাও এখন ডাকসু নির্বাচনের থেকে একজন মন্ত্রীর ওখানে গিয়ে তদ্বির করতে বেশি পছন্দ করে। অথচ বর্তমানের এই জঙ্গীবাদ থেকে তরুণদের ফেরাতে হলে সবার আগে দরকার ছিল একটি আদর্শবাদী, সৎ ও প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতি। তরুণ প্রজন্মের ভেতর দিয়ে এই নেতৃত্ব না আসার ফলে এখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ক্রমেই চলে যাচ্ছে লুটেরাদের হাতে। আর লুটেরাদের হাতে রাজনীতি চলে যাওয়ায় সব থেকে বেশি নষ্ট হচ্ছে যুব সমাজের চরিত্র। যখনই যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তার যুব সংগঠনের কর্মী মানেই একটি আতঙ্ক। তাদের কাজ পান দোকান থেকে শুরু করে কনস্ট্রাকশন, বাস স্টেশন, অটোস্ট্যান্ড এমনি রিক্সাস্ট্যান্ড থেকেও চাঁদা আদায়। বর্তমানে সরকারের যে বদনাম হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গা দখল হচ্ছে এই দখলের মূলেও কিন্তু ওই লুটেরা রাজনীতিকরা এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় যুব রাজনীতিকরা। নদী দখল, খেয়াঘাট দখল, বাজার দখলÑ সব এরাই করছে। আর যেহেতু অনেক লুটেরা রাজনীতিকরা এখন বড় ব্যবসায়ী তাই তাদের তো পোয়াবারো। এ অবস্থায় আত্মমুখী যুবকদেরও সহজে প্রভাবিত করে জঙ্গীর পথে নেয়া সহজ। ঘটছেও তা। তাই শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্যে এখান থেকে চিরস্থায়ীভাবে বের হয়ে আসা যাবে না। এর জন্য প্রতিটি পরিবারকে হতে হবে সচেতন, তাদের খেয়াল রাখতে হবে সন্তানের বেড়ে উঠার ওপর। সাহায্য করতে হবে সন্তানকে একজন আধুনিক মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার জন্য। সমাজকে বিকশিত করার জন্য রাষ্ট্রকেও কাজ করতে হবে অনেক। পাশাপাশি রাজনীতির এই চরিত্র বদলে যুব ও ছাত্র রাজনীতিকে করতে হবে মানব বিকাশের স্থান। আর সবার ওপরে প্রয়োজন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়া। যে চেষ্টা একেবারেই অনুপস্থিত এ সমাজে। [email protected]
×