ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে আদালত পুলিশের বাণিজ্য

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২৮ জুন ২০১৬

চট্টগ্রামে আদালত পুলিশের বাণিজ্য

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ আদালতের হাজতখানায় মামলার আসামিদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনদের অবৈধ সাক্ষাতকে কেন্দ্র করে কোর্ট পুলিশের রমরমা বাণিজ্য চলছে। হাজতখানার দায়িত্বে পুলিশ সদস্যদের মোবাইল থেকে আসামিদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনসহ বিভিন্নজনের যোগাযোগ করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা ও মেট্রো হাজতখানায় এ ধরনের চিত্র নিত্যনৈমিত্তিক কর্মকা-ে পরিণত হয়েছে। ফলে যে কোন সময় আসামিরা ওইসব মোবাইল থেকে বিত্তশালীদের কাছে চাঁদা দাবি ও মামলার বাদীকে হুমকি প্রদর্শনের ঘটনাও ঘটছে। তবে এক্ষেত্রে ফেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে অর্থের বিনিময়ে মোবাইলে সুবিধা প্রদানকারী পুলিশ সদস্যদের। সোমবার চট্টগ্রাম আদালতে মেট্রো হাজতখানার পিছনের বারান্দায় দুপুর দেড়টার দিকে দেখা গেছে তিন সন্ত্রাসী পুলিশের এসআই ও এক কনস্টেবলের মোবাইল থেকে কথা বলছে। শুধু তাই নয়, এক সন্ত্রাসী তার স্ত্রীর সঙ্গে বসে পারিবারিক আলাপ-আলোচনাও সারছে। অথচ সেখানে বহিরাগত তো দূরে থাক দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ব্যতীত কোর্টের কোন কর্মচারীরও যাওয়া নিষিদ্ধ। তবে এডিসি প্রসিকিউশন বিষয়টি তিনি দেখছেন বলে জানান। চট্টগ্রাম আদালতের হাজতখানার আশপাশ ঘুরে দেখা গেছে, আসামিদের ঘিরে পুলিশের অর্থ আদায়ের বাণিজ্য জেঁকে বসেছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত হাজতখানার দায়িত্বে হাবিলদার ও কনস্টেবলসহ প্রত্যেকের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার নামে আসামিদের আত্মীয়স্বজন থেকে অর্থ আদায় করছে। তবে এ ধরনের অর্থের ভাগবাটোয়ারা কোর্ট পুলিশের দায়িত্বে কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছানোর কারণে অর্থ বাণিজ্যের ক্ষেত্রটি চালু রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে অর্ধসহস্র আসামিকে কারাগার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে নিয়ে আসা হয় বিভিন্ন মামলার হাজিরা দিতে। জানা গেছে, প্রতিদিন সরকারী কার্যদিবসে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী থেকে শুরু করে জঙ্গী সদস্য এমনকি খুন, রাহাজানি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিভিন্ন মামলার আসামিকে সাক্ষী, শুনানি ও হাজিরার জন্য প্রথম দফায় কোর্ট হাজতে এনে রাখা হয়। এ সময় জেলা ও মেট্রো আদালতের হাজতখানায় দেখা করতে আসে আসামিদের আত্মীয়স্বজন ও সহযোগী এবং সহচররা। ২শ’ থেকে পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে তথা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী থেকে ছিঁচকে চোর পর্যন্ত এমন আসামির সাক্ষাতের মূল্যায়ন করে কোর্ট হাজতের দায়িত্বে হাবিলদার ও কনস্টেবলরা।
×