ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রদীপ মালাকার

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাট্যগ্রন্থ দুই প্রবাসীর অনবদ্য অবদান

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৭ জুন ২০১৬

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাট্যগ্রন্থ  দুই প্রবাসীর অনবদ্য অবদান

বাংলা সাহিত্যে প্রায় সব বিষয়েই বহু নাট্যগ্রন্থ রচিত হয়েছে। ইতিহাস, রাজনীতি থেকে শুরু করে সমাজের নানা অসঙ্গতি উঠে এসেছে এসব গ্রন্থে। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়েও নানা প্রেক্ষাপটে নাট্যগ্রন্থ রচিত হয়েছে। তবে তাঁর জীবনীভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ নাট্যগ্রন্থ একেবারেই অপ্রতুল। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর গত ৪৫ বছরে (১৯৭১-২০১৬) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে বহু রচনা লেখা হলেও এ পর্যন্ত দুজন নাট্যকারের দুটি নাট্যগ্রন্থ ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের নানা স্থানে মঞ্চস্থও হয়েছে। এরা দুজনই প্রবাসী। লন্ডন প্রবাসী নন্দিত সাংবাদিক এবং মহান একুশের গানের কালজয়ী গীতিকার সর্বজনশ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রচনা করেন ‘পলাশী থেকে ধানম-ি’ এবং নিউইয়র্ক (আমেরিকা) প্রবাসী খান শওকত রচনা করেছেন ঐতিহাসিক নাট্যগ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর নাট্যগ্রন্থ উৎসর্গ করেছেন বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবকে। আর খান শওকতের গ্রন্থ উৎসর্গ করেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়কে। পলাশী থেকে ধানম-ি নাটকটি প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে ঢাকার জ্যোৎ¯œা পাবলিশার্স থেকে (১২/১৩, প্যারীদাশ রোড, বাংলা বাজার)। এই নাটকে লেখক প্রায় সোয়া দু’শ’ বছর আগে ১৭৫৭ সালে সংঘটিত বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতা হারানো ও হত্যার সঙ্গে কাল্পনিক যুক্তিতে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার সামঞ্জস্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে খান শওকতের গ্রন্থটি প্রকাশ পায় ২০১৬ সালে ঢাকার শিখা প্রকাশনী (৩৮/৪-ক, বাংলা বাজার) থেকে (প্রথম সংস্করণ প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ এবং ২য় সংস্করণ প্রকাশ : মে, ২০১৬)। খান শওকতের রচিত নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সময়কালের কোন প্রেক্ষাপট আনেননি। তিনি ১৯৪৯ সালে গঠিত পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ, ১৯৬৬-এর ৬ দফা, ৭০-এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর ২৫ মার্চে গণহত্যা থেকে ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা- বিষয়গুলোই আলোকপাত করেছেন। দুজনের নাটকের নায়ক (বঙ্গবন্ধু) ও বিষয়বস্তু এক হলেও উপস্থাপনার কৌশল সম্পূর্ণ ভিন্ন। একজনের প্রেক্ষাপট ১৭৫৭ থেকে ১৯৭৫ সাল, অন্যজনের প্রেক্ষাপট ১৯৪৭ থেকে ১৯৭৫ সাল। পলাশী থেকে ধানম-ি নাটকটির দৃশ্য সংখ্যা ১৫টি, পৃঃ সংখ্যা ১৬০, ১০ ফর্মায় মুদ্রিত। খান শওকতের গ্রন্থে দৃশ্য সংখ্যা ১০টি, পৃঃ সংখ্যা ১৫২, ১০ ফর্মায় মুদ্রিত। বঙ্গবন্ধু গবেষক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন লিখেছেন : মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় আসার পর, বঙ্গবন্ধু চর্চায় উৎসাহ অনেকগুণ বেড়েছে। এ ধরনের কর্মে বেশিরভাগই আছে আবেগ মিশ্রিত গদ্য এবং কিছু কবিতা। কয়েকটি উপন্যাসও ইদানীং লেখা হয়েছে। বরং বলতে পারি নাটকের অংশই কম। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী পলাশী থেকে ধানম-ি রচনা ও মঞ্চস্থ করেছিলেন। চলচ্চিত্রও করতে চেয়েছিলেন তিনি। এছাড়া আরও কয়েকজন নাটক রচনা করেছেন। কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। খান শওকত সেই অভাব পূরণে এগিয়ে এসেছেন। তার নাটকের নাম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।’ খান শওকতের গ্রন্থের ভূমিকায় মুনতাসীর মামুনও এই দুটি নাট্যগ্রন্থের কথাই বলেছেন। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর গ্রন্থে অন্য কোন ব্যক্তির কোন বক্তব্য বা মুখবন্ধ প্রকাশিত হয়নি। অন্যদিকে খান শওকতের গ্রন্থে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী এবং বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব জামালউদ্দীন হোসেনের লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী অভিজ্ঞ সাংবাদিক ও বিজ্ঞ ইতিহাসবিদ। তার রচনার জন্য তিনি তেমন কোন গ্রন্থের সহায়তা নেননি। কিন্তু খান শওকত তার রচনার জন্য ৮৪টি গ্রন্থের সহযোগিতা নিয়েছেন। সহযোগিতা নিয়েছেন দুটি চলচ্চিত্র এবং ১৮ জনের প্রকাশিত সাক্ষাতকার থেকে (পৃঃ ১৪৭)। পলাশী থেকে ধানম-ি নাটকের শেষ দৃশ্যে (পৃঃ ১৫৬) বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ডাকে কর্নেল জামিল ৩২ নং বাড়িতে এসেছেন, নিচতলার অফিসকক্ষে তার গলা শোনা গেছে, কিন্তু পরে তার কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে না। অর্থাৎ তিনি বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়িতে আসার পর নিহত হয়েছেন। কিন্তু খান শওকতের গ্রন্থে জানতে পারলাম কর্নেল জামিল বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আসার পথে সোবহানবাগ মসজিদের কাছে নিহত হয়েছিলেন (পৃঃ ১০৬)। পলাশী থেকে ধানম-ি গ্রন্থের শেষ দৃশ্যে (পৃঃ ১৫৯) বলা হয়েছে : বঙ্গবন্ধু এবং বেগম মুজিব ও রাসেলকে হত্যার পূর্বে তার পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়। কিন্তু খান শওকতের গ্রন্থে (পৃঃ ১৪১, ১৪২ ও ১৪৩) জানা যায় : প্রথমে শেখ কামাল, পরে বঙ্গবন্ধু এবং এরপর বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যার পর শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসও তাই বলে। পলাশী থেকে ধানম-ি নাটকে (পৃঃ ৮৯, ৯৪ ও ১৫৯) তিনজন মেজরকে কর্নেল বলেছেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী (কর্র্নেল হুদা, কর্নেল ফারুক ও কর্নেল আজিজ পাশা)। কিন্তু খান শওকতের গ্রন্থে (পৃঃ ৫৫, ৭০, ১১৬ ও ১৩৩) ওই ৩ জনকে মেজরই বলেছেন (মেজর হুদা, মেজর ফারুক ও মেজর আজিজ পাশা)। ইতিহাসের তথ্যও তাই। তরুণ মেজররাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। গ্রন্থ দুটিতে বিভিন্ন স্থানে এমন কিছু বৈসদৃশ রয়েছে। সামগ্রিক বিচারে দেখা যাচ্ছে খান শওকতের গ্রন্থখানিতে ঐতিহাসিক তথ্য অনেকটা নিখুঁতভাবে উঠে এসেছে। কারণ ৮৪টি গ্রন্থ পাঠ করে তিনি অনেক নতুন তথ্য পেয়েছেন। আরেকটা বিষয়ে এখানে আলোচনা করা যায়। তা হলো : ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে : লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা বা বাংলাদেশ যেখানেই পলাশী থেকে ধানম-ি মঞ্চস্থ হয়েছে বা পর্দায় প্রদর্শন করা হয়েছে সেখানেই সঠিক ইতিহাস যথাযথভাবে উপস্থাপন না করার অভিযোগ করা হয়েছে। এই দিকগুলো মাথায় রেখে আলোচনা করলে খান শওকতের রচনায় অনেকটা মুন্সিয়ানার ছাপ পাওয়া যায়। একদিকে তিনি যেমন ঐতিহাসিক তথ্যগুলোকে উপস্থাপনার সময় কোন পক্ষপাত করা থেকে বিরত থেকেছেন, অন্যদিকে উপস্থাপিত তথ্যের সূত্রগুলোকেও বলে দিয়েছেন অসঙ্কোচে। এজন্য তার নাট্যগ্রন্থখানি পড়ে আমার মনে হয়েছে তার লেখনি নিয়ে তেমন সমালোচনা হওয়ার সুযোগ কম। যেমন : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সারাবিশ্বের শতাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছিল : বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের দিবাগত রাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চের শুরুতেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। খান শওকত তার নাটকে এ ধরনের ৫০টি আন্তর্জাতিক প্রমাণও তুলে ধরেছেন। যাতে শুত্রু-মিত্র সবার কাছে স্পষ্ট হয়েছে বঙ্গবন্ধুই মহান স্বাধীনতার ঘোষক। এভাবেই বিতর্কহীনভাবে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তিনি নাটকটি রচনা করেছেন। তার উপস্থাপনার কৌশল নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। বিশেষ করে খান শওকতের নাট্যগ্রন্থে এমন কিছু তথ্য নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা অনেক বিতর্ককে সমাধান করতে সহায়তা করবে। গ্রন্থটি দেশের সকল নাট্যদল, আওয়ামী লীগের সকল শাখা এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোতে প্রেরণ করা হচ্ছে। পলাশী থেকে ধানম-িতে যুদ্ধাপরাধ বিষয়টি এবং বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গটি উঠে আসেনি। এই দুটি বিষয় খান শওকতের গ্রন্থে বেশ স্পষ্ট। তারপরও এ গ্রন্থ দুটি সকলের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। ঐতিহাসিক নাট্যগ্রন্থে চরিত্র সংখ্যা একটু বেশি হয়ে যায়। যেমন নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাটকে প্রায় ৫০টি চরিত্র ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে রচিত এ গ্রন্থ দুটিতে চরিত্র সংখ্যা অনেক। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর গ্রন্থে মোট চরিত্র ৫০টি, যার মধ্যে ১৭৫৭ সালের নবাবী আমলের চরিত্র ৭টি (নবাব সিরাজউদ্দৌলা, মীর জাফর, মীর কাশিম, মীরন, ভগবান গোলার ভ- পীর, উমি চাঁদ এবং মোহাম্মদী বেগ)। অন্যদিকে খান শওকতের গ্রন্থে মোট চরিত্র ৩২টি। তবে গাফ্ফার চৌধুরীর নাটক মঞ্চায়নে কমপক্ষে ২৭ জন শিল্পী প্রয়োজন। আর খান শওকতের নাটক মঞ্চায়নের জন্য কমপক্ষে ২০ জন শিল্পীর প্রয়োজন। গাফ্ফার চৌধুরীর গ্রন্থে জাহান এবং কুলসুম চরিত্র দুটি দর্শকদের কাছে আলাদা আগ্রহ তৈরি করেছে। একইভাবে খান শওকতের গ্রন্থে রাজাকার, অধ্যাপক, গ্রাম্যলোক আব্দুল মান্নান, খানসেনা এবং ৪ জন শিক্ষার্থীর চরিত্র আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। খান শওকত (পৃঃ ২০) লেখকের জবানীতে লিখেছেন, “দীর্ঘ ২১ বছরের ধারাবাহিক কষ্টের ফসল আমার এ নাট্যগ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’। এটি ইতিহাস আশ্রিত নাটক। নাটকে সবসময় বিশুদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরা যায় না। এতে কল্পনা, আবেগ, কাব্য, সাহিত্য ও অভিনয় তুলে ধরতে হয়। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন-‘কাব্য হিসাবে সর্বাঙ্গ সুন্দর করিতে হইলে সমগ্র ইতিহাসকে অবিকৃতভাবে গ্রহণ করা যায় না। নাটক ইতিহাস নয়। নাটক সাহিত্য। সাহিত্যের সত্য আর ইতিহাসের সত্য এক নয়। আমার নাটকটিও সেই একই নিয়মে রচিত হয়েছে। ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে কল্পনা মিলিয়ে কিছু সত্য চরিত্র ও কিছু কাল্পনিক চরিত্র এনে এটা রচিত হয়েছে। তারপরও কোন নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি যদি কোন সংলাপ অহেতুক আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে সেটি একান্তই অনিচ্ছাকৃত। নাটক ইতিহাসও নয় বা ধর্মগ্রন্থও নয় যে, পরিবর্তন করা যাবে না। আমার নাটকের কোন অংশ সংশোধন বা বিয়োজনের বিষয়ে আপনার যদি কোন পরামর্শ থাকে সরাসরি আমাকে লিখুন। গ্রন্থটির পরবর্তী সংস্করণে তা তুলে ধরব। আমার উদ্দেশ্য সত্য ইতিহাস প্রতিষ্ঠায় কাজ করা।’ নিরপেক্ষভাবে লেখার চেষ্টা অভিনন্দনযোগ্য।” আগেই বলেছি : বাংলা সাহিত্যে প্রায় সকল বিষয় নিয়ে প্রচুর নাট্যগ্রন্থ রয়েছে। কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নাট্যগ্রন্থ একেবারেই অপ্রতুল। মঞ্চে পারফরমেন্সের মাধ্যমে দর্শকদের মনের ভেতর দ্রুত একটি ধারণা দৃঢ়ভাবে স্থান করে নিতে মঞ্চনাটক অত্যন্ত উপযোগী একটি মাধ্যম। খান শওকত লেখকের জবানীতে লিখেছেন, ‘আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর পলাশী থেকে ধানম-ি দেখার পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটকটি লেখার জন্য আমার আগ্রহ বেড়ে যায়।’ এটাই সত্য। গাফ্ফার চৌধুরীর পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন খান শওকত। এদের অনুসরণ করবেন ভবিষ্যতের আরও অনেকেই। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং একই বছর ২ জুলাই তারিখে তাকে হত্যা করা হয়। সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর ১৪১ বছর পর ১৮৯৮ সালে তাকে নিয়ে প্রথম নাটক রচনা করেন নাট্যকার অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়। এরপর ১৯০৬ সালে বঙ্গভঙ্গ-রদ আন্দোলনের সময় তাকে নিয়ে সর্বাধিক জনপ্রিয় যাত্রানাটক রচনা করেন গীরিশ চন্দ্র ঘোষ। তারপর ১৯৩৭ সালে শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত এবং ১৯৫১ সালে সিকান্দার আবু জাফর রচনা করেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা নাটক। অবশেষে ২০১৫ সালে খান শওকতের রচনায় প্রকাশিত হয় ‘বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ নাটক। ১৮৯৮ সালে সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে প্রথম নাটক রচনার সময় এ নাটকে উল্লিখিত কোন চরিত্রই জীবিত ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটক লেখা যতটা সহজ ভাবা যায়, বাস্তবতা তা নয়। আজও মুক্তিযুদ্ধের অনেক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজন রয়েছে। তবুও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে এ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ নাটক রচিত হলো মাত্র দুটি এবং তা লিখলেন দুজন প্রবাসী। তারা আমাদের ইতিহাসের অংশ হয়ে রইলেন। তাদের দুজনকেই সাধুবাদ, অভিনন্দন। লেখক : নিউইয়র্ক প্রবাসী
×