ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্পেন-ইতালি ময়দানী লড়াইয়ের আগেই উত্তাপ শুরু

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৬ জুন ২০১৬

স্পেন-ইতালি ময়দানী লড়াইয়ের আগেই উত্তাপ শুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত ইউরো ফুটবলের ফাইনালটা ছিল একেবারেই একপেশে। পুরো আসরে দুর্দান্ত খেলা ইতালিয়ানরা শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে স্প্যানিশদের কাছে ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছিল। পরস্পরের দেখা হয়েছিল গ্রুপ পর্বেও, সেটা ছিল ১-১ গোলে অমীমাসিংত। কিন্তু এবার দু’দলের দেখা হয়ে গেল মাঝপথেই। ফলে গত আসরের ফাইনাল খেলা দ্’ুদলের মধ্যে বিদায় নিতে হবে যে কোন একটিকে। সোমবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে দু’দলের ময়দানী লড়াই। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ের আগেই শুরু হয়ে গেছে কথার লড়াই। উভয়দলই পরস্পরকে হারিয়ে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আজ্জুরিরা চায় প্রতিশোধ, আর স্প্যানিশদের লক্ষ্য হ্যাটট্রিক শিরোপা জেতার আগে না থামার। সে জন্যই হাইভোল্টেজ এ ম্যাচকে ঘিরে উভয়দলের ফুটবলাররাও দারুণ উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন। ইতালির ডিফেন্ডার জিওর্জিও চিয়েল্লিনি এবং স্পেনের আলভারো মোরাতা, জেরার্ড পিকে ও সার্জিও রামোস সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দলকে জেতানোর জন্য সব উজাড় করে দিতে। এবার আগেভাগেই স্বপ্নভঙ্গ হবে একটি দলের। গত দুই ইউরো আসরের চ্যাম্পিয়ন এবং ২০১০ বিশ্বকাপ জয়ী স্পেন গ্রুপ পর্বেই একটি ধাক্কা খেয়েছে এবার। ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হারের কারণে দ্বিতীয় স্থান নিয়ে উঠে এসেছে প্রি-কোয়ার্টারে। এ কারণেই কঠিন প্রতিপক্ষ ইতালির বিরুদ্ধে এবার অগ্নিপরীক্ষা। এ বিষয়ে বর্তমান সময়ে স্পেনের বিতর্কিত ডিফেন্ডার পিকে বলেন, ‘আমাদের উচিত হবে সমালোচনার দিকে এখন মনোযোগ না দিয়ে একযোগে ইউরো জেতার দিকে।’ ৪ বছর আগে পিকে এবং রামোস একসাথে শিরোপা জয়ের আনন্দ করেছিলেন। আর বিতর্কের জবাবটাও চলতি ইউরো আসরের গ্রুপ পর্বে কিছুটা দিয়েছেন পিকে। চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই ১-০ গোলের জয়টি এসেছে তার করা ৮৭ মিনিটের গোলে। আর সে জন্য তাকে সর্বপ্রথম অভিনন্দন জানিয়েছিলেন দীর্ঘদিনের সেন্ট্রাল ডিফেন্স সতীর্থ ও বন্ধু রামোস। ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে আর কোন গোল হজম করেনি স্পেন। কিন্তু সেই রক্ষণভাগে প্রথম চিড়টা ধরেছে এবার ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে রামোস অনেকাংশেই ছিলেন দায়ী এবং অনেক ভুল-ভ্রান্তিও করেছেন তিনি। এ বিষয়ে রামোস বলেন, ‘বিশ্লেষণ করছি, সেসব নিজের মধ্যে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করছি, শিখছি এবং অবশ্যই উন্নতি করব। এটা আমাদের সবার জন্যই দরকার। ইউরো ২০১৬ জয়ের ক্ষেত্রে এটাই শাশ্বত পথ।’ স্পেনের আক্রমণভাগেও বেশ ভাল নৈপুণ্য দেখা যাচ্ছে। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত স্পেনের তরুণ স্ট্রাইকার মোরাতা যৌথভাবে শীর্ষ গোলদাতা। তুরস্কের বিরুদ্ধে জোড়া গোল এবং ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে শুরুতেই তার করা গোল বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বেশ দারুণ কার্যকরী অবস্থানে নিয়ে গেছে। কিন্তু শেষ আটে উঠার জন্য তিনি গোল করতে চান বিষয়টি এমন নয়, বরং মোরাতা দেখতে চান দল জিতেছে। সেক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের জালে যেই গোল পাঠাক সেটা হবে আনন্দের। এ বিষয়ে মোরাতা বলেন, ‘আমরা যদি হেরে যাই এবং আমি গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে থাকি সেটা আমার জন্য কোন গ্রহণীয় বিষয় হবে না।’ ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসের হয়ে খেলার কারণে মোরাতা বেশ ভাল করেই সে দেশের ফুটবল সম্পর্কে জানেন। তিনি মনে করছেন ইতালির বিরুদ্ধে খেলাটা ‘কঠিন’ হবে, কারণ ‘কৌশলগতভাবে নিখুঁত’ একটি দল আজ্জুরিরা। তারাও যে অতীত ভুলে এখন স্প্যানিশদের হারানোর জন্য মুখিয়ে আছে সেটা অন্যতম ডিফেন্ডার চিয়েল্লিনির কণ্ঠেই প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে আমরা পরস্পরের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টে এত আগেভাগেই খেলব। কিন্তু এটা খুবই বড় একটা ম্যাচ। খুবই কঠিন হবে। যেহেতু নকআউট খেলা তাই আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত নিজেদের সবকিছু উজাড় করে দিয়ে খেলে ম্যাচ জিততে। আমরা চেষ্টা করব টুর্নামেন্টে নিজেদের অভিযান অব্যাহত রাখার।’
×