ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিজয় উদ্যাপন লিচেস্টারের

ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা কোচ রানিয়েরি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১৮ মে ২০১৬

ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা কোচ রানিয়েরি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লম্বা কোচিং ক্যারিয়ারে কখনই কোন বড় দলকে চ্যাম্পিয়ন করাতে পারেননি। অনেকবার তীরে এসে ডুবেছে তরী। সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রানার্সআপ হয়ে। সেই ক্লাউডিও রানিয়েরি এবার রূপকথার জন্ম দিয়েছেন। লিচেস্টার সিটিকে ১৩২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা এনে দিয়েছেন। দলটির মতো তাই একের পর এক পুরস্কারে ভাসছেন রানিয়েরিও। এবার তিনি ইংল্যান্ডের লীগ ম্যানেজার্স এ্যাসোসিয়েশনের (এলএমএ) বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার জিতেছেন। ২০০২ ও ২০০৪ সালে আর্সেনালের ফরাসী কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের পর ব্রিটিশ বা আইরিশ কোচদের বাইরে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এই পুরস্কার জিতলেন ৬৪ বছর বয়সী রানিয়েরি। রানিয়েরি এর আগে তার নিজ দেশ ইতালির মৌসুম সেরা কোচের পুরস্কারও জিতেছেন। ১৯৯৩ সাল থেকে এই বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার চালু হওয়ার পর বেশিরভাগ সময়ই সেটি জিতেছেন ইংল্যান্ডের কোচেরা। এ বছর ইংল্যান্ডের বাইরের দ্বিতীয় কোচ হিসেবে এই পুরস্কার উঠেছে রানিয়েরির হাতে। এর আগে দুইবার এ পুরস্কার জিতেছিলেন আর্সেনালের ফরাসী কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার, ২০০২ ও ২০১৪ সালে। সবচেয়ে বেশি চারবার বর্ষসেরা কোচের এই পুরস্কার জিতেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ স্যার এ্যালেক্স ফার্গুসন। বিশ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে ইউরোপের অনেক বড় বড় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। নেপোলি, জুভেন্টাস, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, ভ্যালেন্সিয়া, চেলসি, ইন্টার মিলান ঘুরে আসেন ইংল্যান্ডের ছোট্ট ক্লাব লিচেস্টার সিটিতে। আগে কখনই বড় কোন লীগের শিরোপা জিততে না পারলেও এবার লিচেস্টার সিটিকে ইপিএলের শিরোপা জিতিয়ে ফুটবল ইতিহাসে পাকাপাকি জায়গাই করে নিয়েছেন ইতালিয়ান এই কোচ। অবিস্মরণীয় এই সাফল্যের স্বীকৃতিই একের পর এক পাচ্ছেন রানিয়েরি। ইংল্যান্ডের বর্ষসেরা কোচের এই পুরস্কার দিয়ে থাকে লীগ ম্যানেজার্স এ্যাসোসিয়েশন (এলএমএ)। আর এ বছর সেরা কোচ নির্বাচন করতে গিয়ে রানিয়েরি ছাড়া অন্য কারও কথা হয়তো ভাবতেও হয়নি বিচারকদের। এবারের মৌসুমের শুরুতে লিচেস্টার সিটির কোচের দায়িত্ব নিয়ে সত্যিই যেন জাদুকরের মতো ক্লাবটিকে বদলে দিয়েছেন। দীর্ঘদিন পর ২০১৪ সালে প্রিমিয়ার লীগে খেলার সুযোগ পেয়ে প্রথম মৌসুমটা লিচেস্টার শেষ করেছিল ১৪তম অবস্থান নিয়ে। নিচের সারির সেই দলটিই যে এবার ইংল্যান্ড সেরার মুকুট পরবে তা কেউ ভাবতেও পারেননি। লিচেস্টার পাল্লা দিয়ে লড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনাল, চেলসি, টটেনহ্যাম, লিভারপুলের মতো বড় বড় ক্লাবের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত শিরোপাটাও জিতে নিয়েছে অন্য সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে লিচেস্টারের পয়েন্ট ব্যবধান ১০। এদিকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে এখনও উৎসব-উচ্ছ্বাসে ভাসছে লিচেস্টার সিটি। লন্ডনের স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে চেলসি-টটেনহ্যাম ম্যাচটা ড্র হলে শিরোপা নিশ্চিত হয় ভার্ডি-মাহরেজদের। ম্যাচটি শেষ হতে না হতেই রাস্তায় নেমে আসেন লিচেস্টারবাসী। কেউ কেউ রানিয়েরির নাম ধরে চিৎকার করেন, কেউ কেউ ভার্ডি, আবার কেউ কেউ সেøাগান দেন রিয়াদ মাহরেজের নামে। সোমবার রাতে আরও একবার উল্লাস করেছে ছোট্ট শহরের বাসিন্দারা। লীগে নিজেদের শেষ ম্যাচের পর ক্লাবের নীল-সাদা জার্সি পরে উল্লাসে ফেটে পড়েন ভক্ত-সমর্থকরা। এ সময় নেচে-গেয়ে শিরোপা উদযাপন করেন ভক্ত-সমর্থকরা।
×