ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

ফুলবাড়িয়ার ওয়াজউদ্দিনকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৭ মে ২০১৬

ফুলবাড়িয়ার ওয়াজউদ্দিনকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পলাতক রাজাকার ওয়াজউদ্দিনকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের জন্য দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে একটি বাংলা অপরটি ইংরেজী। পরবর্তী আদেশের জন্য ১৯ জুন দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা ও শেখ মুশফেক কবির। এর আগে তিন রাজাকারের মধ্যে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন, রিয়াজ উদ্দিন ফকির ও আমজাদ হাজী। পরবর্তীতে আমজাদ হাজি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২২ আগস্ট থেকে ২১ নবেম্বর পর্যন্ত ফুলবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তারা অপরাধগুলো সংঘটিত করেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ বছর ৪ মাস ৭ দিন তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন। মোট ৬০ জনের বেশি ব্যক্তির জবানবন্দী গ্রহণ করা হলেও ৩৬ সাক্ষী ২ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ফুলবাড়িয়ার আলবদর বাহিনীর প্রধান রিয়াজউদ্দিন ফকির এবং ওয়াজউদ্দিন ছিলেন এ মামলার আসামি। ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভালুকজান গ্রামের শহীদ তালেব ম-লের ছেলে খোরশেদ আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার বাবা তালেব ম-লকে আখিলা নদীর ব্রিজের ওপর গুলি করে হত্যা করেন থানা রাজাকার বাহিনীর প্রধান আমজাদ ও আলবদর বাহিনীর প্রধান রিয়াজ ফকিরের নেতৃত্বে ওয়াজউদ্দিনসহ রাজাকাররা। এছাড়া মামলায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রিয়াজউদ্দিন ফকির ও ওয়াজউদ্দিন হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধে নেতৃত্ব দেন। আছিম যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ বহু মানুষকে হত্যা ও পাটিরায় দুই হিন্দু নারীকে ধর্ষণের অভিযোগও করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত বছরের ১১ আগস্ট আমজাদ ও রিয়াজকে ফুলবাড়িয়া উপজেলার কেশরগঞ্জ ও ভালুকজান গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১২ আগস্ট ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করার উদ্দেশে ময়মনসিংহ থেকে দুই আসামিকে নিয়ে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যান। এতে চার পুলিশ ও আসামি আমজাদ হাজী গুরুতর আহত হন। পরে আমজাদকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান তিনি। ফলে বর্তমানে রিয়াজ উদ্দিন ফকির ও পলাতক ওয়াজউদ্দিন এ মামলার আসামি। গ্রেফতারকৃত রিয়াজ উদ্দিন ফকিরকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা।
×