ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউরোপে ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে হুঁশিয়ারি পুতিনের

সব হুমকি নিষ্ক্রিয় করে দেব

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৫ মে ২০১৬

সব হুমকি নিষ্ক্রিয় করে দেব

রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন মার্কিন নেতৃত্বে ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কর্মসূচীর উন্নয়নকে বিশ্বের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন। রাশিয়া সামরিক শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখতেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি সংকল্প ব্যক্ত করেন। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী সামরিক উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন। খবর এএফপি ও বিবিসির। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যুহের লক্ষ্য রাশিয়া নয়, বরং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করতেই ওই ব্যুহ গড়ে তোলা হচ্ছে, এমন মার্কিন দাবি উড়িয়ে দেন পুতিন। তিনি শুক্রবার মস্কোতে সামরিক কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে ভাষণ দিচ্ছিলেন। ন্যাটোর পদক্ষেপের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার দক্ষিণ রোমানিয়ার দেভেসেলুতে প্রায় ৮০ কোটি ডলার ব্যয়ে এক নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা স্টেশনকে সক্রিয় করে। ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলেটেনবার্গ ও সামরিক জোটের অন্যান্য উর্ধতন কর্মকর্তা এক সাবেক রোমানীয় বিমান ঘাঁটিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার ন্যাট্যে প্রকল্পের আরেক পর্যায় হিসাবে পোল্যান্ডে কর্মকর্তারা বান্টিক সাগরের কাছে রেদ জিকোয়োতে এক স্থাপনার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সেখানে ২০১৮ সালে ঈজিস ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে। পুতিন বলেন, রাশিয়ার পরমাণু শক্তিকে দুর্বল করাই এরই লক্ষ্য। তিনি উত্থানশীল হুমকি নিষ্ক্রিয় করার সংকল্প ব্যক্ত করেন। পুতিন বলেন, মাত্র কয়েক বছর আগে আমাদের পশ্চিমা, ইউরোপীয় ও মার্কিন অংশীদাররা সবাই এক গলায় আমাদের বলে এসেছেন যে, তাদের জন্য ইরানী ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্রের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। তিনি আরও বলেন, গত বছর ইরান ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে পরমাণু চুক্তি সই হওয়ার কোন হুমকি আর নেই। তিনি বলেন, ওই হুমকি চলে গেছে, কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ চলছে। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন এটি কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নয়। এটি মার্কিন সামরিক পরমাণু শক্তিকে মূল কেন্দ্র থেকে দূরবর্তী কোন স্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনারই অংশ। এক্ষেত্রে পূর্ব ইউরোপই এরূপ এক দূরবর্তী স্থান। এরূপ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের অবশ্যই জানা উচিত যে, এখনও পর্যন্ত তারা শান্তির সঙ্গে, বেশ ভালভাবে ও নিরাপদে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, এখন যেহেতু এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে, সেহেতু আমরা রুশ ফেডারেশনের প্রতি উত্থানশীল এসব হুমকিকে নিষ্ক্রিয় করার উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য হচ্ছি। হোয়াইট হাউসে সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও আইসল্যান্ডের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ওবামা বলেন, আমরা সবাই বাল্টিক নরডিক আঞ্চলে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি ও গতিবিধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, আমরা রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংলাপ বজায় রাখব এবং সহযোগিতা চাইব। কিন্তু আমরা যে প্রস্তুত ও শক্তিশালী রয়েছি, তাও আমরা নিশ্চিত করতে চাই। আর রাশিয়া যাতে এর সামরিক তৎপরতা চালানোর সময় আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পুরোপুরি মেনে চলে, সে জন্য রাশিয়াকে উৎসাহিত করতে চাই। মস্কো ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ অধিকার করার পর পাশ্চাত্য ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর আগে ক্রিমিয়ার আত্ম নিয়ন্ত্রণাধিকার প্রশ্নে এক গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি।
×