ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাজীপুরে নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৫ মে ২০১৬

গাজীপুরে নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাজীপুর, ১৪ মে ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের হায়দরাবাদে শনিবার গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে পরে এক স্কুলছাত্র নিহত ও তার সহপাঠী আহত হয়েছে। নিহতের নাম মোঃ রুম্মানুর হোসাইন (৫)। সে স্থানীয় হায়দরাবাদ আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজর নার্সারির ছাত্র এবং টঙ্গীর বনমালা এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় রুম্মানুরের সহপাঠী স্থানীয় সুকন্দিরবাগ এলাকার আমীর আলীর ছেলে হাবিবুল ইসলাম সানি (৬) আহত হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। স্কুলের সহকারী শিক্ষক রুবেল শেখ জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের হায়দরাবাদে আবুল হাসেমের ভবন গত বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়ে হায়দরাবাদ আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন স্কুল এ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শাখা চালু করা হয়। এ ভবনের সামনে ৭/৮ মাস আগে একটি সাবমারসিবল (গভীর নলকূপ) স্থাপন করা হয়। কিন্তু ভাল পানি না ওঠায় আবার পাইপসহ ওই নলকূপ তুলে গর্তটি বালি দিয়ে ভরাট করে ঢেকে দেয়া হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্কুলের সাপ্তাহিক পরীক্ষা শেষে স্কুল থেকে বের হয়ে অন্যদের সঙ্গে সেখানে খেলা করছিল রুম্মানুর ও সানি। খেলা করার সময় হঠাৎ রুম্মানুর ১০-১২ ফুট গভীর ওই কূপে পড়ে যায়। এ সময় সহপাঠী সানিকে ধরে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে সানিও ওই কূপের ভিতর রুম্মানুরের ওপর গিয়ে পড়ে। এ সময় তাদের সহপাঠীদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে গর্ত খুঁড়ে প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টার চালিয়ে ওই দুই শিশু ছাত্রকে উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুম্মানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। আর সানিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের বাসা পাঠানো হয়। ওই শিক্ষক আরও জানান, গত দুইদিন প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে চোরাবালির মতো নিচের মাটি নরম হয়ে হয়ে যায়, যা বুঝা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ পারভেজ জানান, বাচ্চা দুইটি গর্তে পড়ে গিয়ে চিৎকার শুরু করলে তা শুনে দৌড়ে গর্তের কাছে যাই। সানির কাঁধে বাধা ব্যাগ টেনে ধরে তাকে উদ্ধার করা গেলেও রুম্মানুর আরও গভীরে চলে যায়। পরে গর্ত খুড়ে তাকেও উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসি এ ঘটনার জন্য ভবন মালিককে দায়ী করে বলেন, গর্তটি ভালভাবে ভরাট করা হলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটত না। টঙ্গী ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার মোঃ সেলিম মিয়া জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই এলাকাবাসী শিশু দুইটিকে উদ্ধার করে। রাস্তা খারাপের কারণে তাদের ঘটনাস্থলে যেতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। রুম্মানুর গর্তের নিচে পড়ে গেলে বালি চাপা পড়ে এবং সেখানে অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছে। আর সানির ওই অবস্থা হয়নি বলে সে প্রাণে বেঁচে গেছে। জয়দেবপুর থানার ওসি তদন্ত মোঃ মাহফুজুর রহমান, এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা নেয়া হবে।
×