ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে মাঠে ক্ষোভ ॥ বাণিজ্যের অভিযোগ

তৃণমূলের মত উপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৫ মে ২০১৬

তৃণমূলের মত উপেক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করায় দমানো যাচ্ছে না বিদ্রোহীদের। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপিও একই ধারায় মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ফলে দুই দলেই মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি থেকে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা। জেলার পবা, মোহনপুর দুর্গাপুর ও চারঘাটে দুই দলেও একাধিক বিদ্রোহী মাঠে থাকায় বিপাকে পড়েছেন মনোনীতরাও। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে এরই মধ্যে জেলার বাগমারায় ঝরে গেছে চারজনের প্রাণ। ওই উপজেলার সব ইউনিয়নেই শেষ পর্যন্ত ভোট স্থগিত করা হয়। এবার পবা ও মোহনপুর ও চারঘাটেও একই ঘটনা ঘটনার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলার পবা ও মোহনপুরে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ায় প্রায় ইউনিয়নে রয়েছে বিদ্রোহী। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে সহিংসতার শঙ্কা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পবার হরিয়ান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৃণমূলের সমর্থন পেয়েছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেবের আলী ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি সম্পাদক নূর হোসেন। তবে তৃণমূলের সমর্থন উপেক্ষা করে দল মনোনয়ন দিয়েছে হাসান আলীকে। তৃণমূলের সমর্থিত প্রার্থীরা উপেক্ষিত হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তৃণমূলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষার কারণ হিসেবে তারা অভিযোগ করেছেন মনোনয়ন বাণিজ্যের। জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তৃণমূল নেতাদের। একই উপজেলার পারিলা ও বড়গাছীতে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থরা উপেক্ষিত হয়েছেন। বড়গাছিতে গত নির্বাচনে ৩২৫ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন এমদাদুল হক। এবারও তৃণমূল থেকে তার নাম সমর্থন করা হয়। কিন্তু মনোনয়ন দেয়া হয়েছে মোবারক হোসেনকে। হড়গ্রাম ইউনিয়নে তৃণমূলের সমর্থন পান ফারুক হোসেন। সেখানে মনোনয়ন পেয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল ইউনিয়নে তৃণমূলের সমর্থন পান অধ্যাপক আবদুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক দুলাল। কিন্তু মনোনয়ন দেয়া হয়েছে আল মমিন শাহ হাবলুকে। রায়ঘাটী ইউনিয়নে সমর্থন পান খলিলুর রহমান। ওই ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন সুরঞ্জিত। ফলে দলের এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এখন নির্বাচনের মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মনোনয়ন বঞ্চিত দলীয় নেতারা। হরিয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেবের আলী জানান, তৃণমূলের সমর্থন পাওয়ার পরও তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তার অভিযোগ জেলার নেতারা বাণিজ্য করেছেন। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ মনোনয়ন বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, বড় দল হিসেবে অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমরা সবার নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম। দল সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মনোনয়নের জন্য প্রার্থী বাছাই ফরমে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মনোনীত প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠাবেন। তবে কোথাও কোন না কোনভাবে ‘ফাঁক’ থাকার কারণে তৃণমূলের মূল্যায়ন উপেক্ষা করা হয়েছে। জেলার চারঘাটেও একই কারণে মাঠে রয়েছেন বিদ্রোহীরা। এরই মধ্যে দুর্গাপুরে সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। সবচেয়ে প্রার্থিতা নিয়ে জটিল আকার ধারণ করেছে পবা ও মোহনপুরে। এদিকে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা বিএনপিতেও। পবা উপজেলায় তৃণমূলের সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়ন পাননি।
×