ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত সীমান্তে সামরকি ক্ষমতা নতুন করে সাজাচ্ছে চিন

প্রকাশিত: ২০:২৬, ১৪ মে ২০১৬

ভারত সীমান্তে সামরকি ক্ষমতা নতুন করে সাজাচ্ছে চিন

অনলাইন ডেস্ক ॥ ভারতের সীমান্তে সামরিক ঘুঁটি নতুন করে সাজাতে শুরু করল চিন। ক্ষমতা এবং মর্যাদা বাড়ানো হল তিব্বতের দায়িত্বে থাকা সেনা কম্যান্ডের। সেখানেই শেষ নয়। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানাল, ভবিষ্যতে কোনও যুদ্ধে অংশ নিতে হতে পারে বলেই তিবেট মিলিটারি কম্যান্ডের এই শক্তিবৃদ্ধি করা হল। ঠিক কী ভাবে শক্তি বাড়ানো হচ্ছে চিনের টিবেট মিলিটারি কম্যান্ডের? এত দিন টিবেট মিলিটারি কম্যান্ড ছিল একটি প্রাদেশিক মিলিটারি কম্যান্ড, যার দায়িত্বে থাকতেন এক জন লেফটেন্যান্ট জেনারেল। এই প্রাদেশিক কম্যান্ডগুলিকে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির অংশ হিসেবে ধরা হয় না। ফলে পিপলস লিবারেশন আর্মির অন্তর্গত কম্যান্ডগুলির মতো উন্নত প্রশিক্ষণ, অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং বিপুল সমর পরিকাঠামো এই প্রাদেশিক কম্যান্ডগুলির থাকে না। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর নেতৃত্বাধীন সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, টিবেট মিলিটারি কম্যান্ড আর প্রাদেশিক বাহিনী হিসেবে কাজ করবে না। এই বাহিনীকে পিপলস লিবারেশন আর্মির স্থলবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে বাহিনীর মর্যাদা বাড়ছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেলের বদলে এক জন ফোর স্টার পর্যায়ের জেনারেল এ বার থেকে টিবেট মিলিটারি কম্যান্ডের দায়িত্বে থাকবেন। বাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্রশস্ত্র ও পরিকাঠামো বদলানো হবে। আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়ে উঠবে টিবেট মিলিটারি কম্যান্ড। চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, ভবিষ্যতে কোনও যুদ্ধে অংশ নিতে হতে পারে টিবেট মিলিটারি কম্যান্ডকে। সেই কারণেই শক্তি বাড়ানো হচ্ছে। তিব্বত চিরকালই চিনের জন্য স্পর্শকাতর এলাকা। তিব্বতকে ঘিরে ভারত-চিন সম্পর্কেও নানা টানাপড়েন এসেছে একাধিক বার। নির্বাসিত তিব্বত সরকারকে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে ভারত। তিব্বতিদের স্বাধীনতার লড়াইয়ের প্রতিও ভারতের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছ। অন্য দিকে চিন তিব্বতকে বার বার নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে। সঙ্গে ভারতের অরুণাচল প্রদেশকেও দক্ষিণ তিব্বত নাম দিয়ে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে। লাদাখেও সীমান্ত চিহ্নিতকরণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে ভারত-চিনের মধ্যে। কখনও চিনের টিবেট মিলিটারি কম্যান্ডের বিরুদ্ধে লাদাখে সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে ভারতের ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি)। কখনও টিবেটান মিলিটারি কম্যান্ড দাবি করেছে ভারতের আইটিবিপি চিনা এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছে। তিব্বতের সীমান্তে এই সব সমস্যা এবং বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা থাকলেও কখনওই সেখানে চিন-ভারত প্রকাশ্য সংঘর্ষে জড়ায়নি। বরং ভারতের অন্য অনেক সীমান্তের চেয়ে তিব্বত সীমান্ত শান্তিপূর্ণ। সেই তিব্বতের মিলিটারি কম্যান্ডকে ভবিষ্যতে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য চিন হঠাৎ প্রস্তুত করছে কেন? তিব্বতের সীমান্তে যুদ্ধ মানে ভারত আর চিনের মধ্যেই যুদ্ধ। কারণ তিব্বত লাগোয়া দেশ বলতে ভারত, নেপাল ও ভুটান। নেপাল, ভুটানের মতো দেশ চিনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে, তেমন প্রশ্নই ওঠে না। অতএব তিব্বত সীমান্তে চিনের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়াতে পারে এক মাত্র ভারত। তাই চিনের টিবেট মিলিটারি কম্যান্ড যখন ভবিষ্যতে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন যে প্রস্তুতি যে অবশ্যই ভারতের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হচ্ছে, সে ব্যাপারে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা একমত। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×