ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এলিনা হক

গরিবের ঘরে চাঁদের আলো

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১৪ মে ২০১৬

গরিবের ঘরে চাঁদের আলো

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীর আরেক সংবাদপত্র হকারের মেয়ে এলিনা হক দারিদ্র্যতাকে জয় করে এবারের এসএসপি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। এলিনা নগরীর অগ্রণী স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্তের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে। খুপড়ি ঘরে বসবাস করে অভাবী সংসারে ঠিকমতো দু’বেলা ভাত জোটেনি, কখনও জোটেনি ভাল পোশাক। প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়া বা নতুন বই কেনার সামর্থ্য ছিল না এলিনার অভিভাবকের। সংবাদপত্র শ্রমিক পিতা এনামুল হক অভাবী সংসারে মেয়ে এলিনা হককে নিয়ে দেখছেন নতুন স্বপ্ন। এনামুল জানান, তার মেয়ে এলিনা পড়ালেখায় খুব ভাল। কোন প্রাইভেট দেয়ার সামর্থ্য হয়নি। অভাবের সংসার। ঘরে বসেই মায়ের সঙ্গে সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করেছে সে। তার ইচ্ছে আরও পড়াশোনা করে অনেকদূূর এগিয়ে যাওয়া। বাবা-মায়ের স্বপ্নও তাই। তবে দারিদ্র্যতা তাদের স্বপ্নের কাছে যেন বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাবা এনামুল জানান, এলিনা নিজের আগ্রহ ও মেধার ভিত্তিতে অর্জন করেছে এ সাফল্য। মেয়ের সাফল্যে অনেক আনন্দের মধ্যে থাকলেও ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত অভাবী পিতা-মাতা। কারণ অভাবের কারণে এখন তার পরিবার কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে এলিনাকে। তৌহিদুল ইসলাম ইমন বাবার সঙ্গে প্রতিদিন ভোরে সাইকেল নিয়ে বের হতে হয় পত্রিকা বিলির কাজে। মানুষের বাড়ি বাড়ি পত্রিকা পৌঁছে দেয়ার কাজ বাবার মতো ইমনেরও। বাবা-ছেলে মিলে পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় তা দিয়েই চলে সংসার। এমন অভাবের সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে লেখাপড়া চালিয়ে তৌহিদুল ইসলাম ইমন এবারে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। দরিদ্রতাকে জয় করে ইমনের এগিয়ে চলায় তার পিতা-মাতা দারুন খুশি। ইমনের পিতা রাজশাহী সংবাদপত্র শ্রমিক নেতা দুলাল হোসেন। মসজিদ মিশন একাডেমি স্কুল বিনোদপুর শাখা থেকে বিজ্ঞান বিভাগে তৌহিদুল ইসলাম ইমন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভাল ফলাফলের পরেও মেধাবী তৌহিদুল ইসলাম ইমনের মনে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইমন তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড়। ইমনের পিতা দুলাল হোসেন জানান, তার সম্বল বলতে নগরীর বুধপাড়ায় ২ শতাংশ জমির উপরে একটি বাড়ি। পত্রিকা বিক্রি করে তাদের সংসার কোনভাবে চলে। ভাল কলেজে কিভাবে ইমনকে পড়াবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তিনি। ইমনের মা জেসমিন বেগম জানান, ভোরে সাইকেল নিয়ে বাবার সঙ্গে বেরিয়ে যায় ইমন। বাড়ি বাড়ি পত্রিকা বিলির পর যেতো স্কুলে। অর্থের অভাবে প্রাইভেট পড়াতে পারিনি।
×