ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অস্ত্র, বোমা, বিস্ফোরক উদ্ধার

ঢাকার আমিরসহ জেএমবির চার জঙ্গী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৩ মে ২০১৬

ঢাকার আমিরসহ জেএমবির চার জঙ্গী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবির ঢাকার আমিরসহ চার জেএমবি জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা জামায়াতের ডাকা হরতালে নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ, পেট্রোলবোমা, বিস্ফোরক, জিহাদী বই ও পত্রিকা উদ্ধার হয়েছে। বুধবার রাতে র‌্যাব-৩ এর একটি দল রাজধানীর খিলগাঁও বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায়। অভিযানে জেএমবির ঢাকা জেলার ভারপ্রাপ্ত আমির মোঃ আব্দুল বাতেন ওরফে খাইরুল ইসলাম ওরফে মামুনুল হককে (২৮) একটি বিদেশী পিস্তল ও ৪ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার হয়। তার তথ্যমতে রাজধানীর গুলশান-বাড্ডার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেএমবির সক্রিয় সদস্য মোঃ মনির মোল্লা ওরফে মনিরকে (২৯) ১৪টি পেট্রোলবোমা, বোমায় ব্যবহৃত লোহার নাট, বল্ট, জিহাদী বই ও পত্রিকাসহ গ্রেফতার করা হয়। এ দু’জনের তথ্যমতে, ঢাকার কমলাপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় জেএমবি সদস্য মোঃ গোলাম কিবরিয়া ওরফে আক্তার (৬২) ও মোঃ রোমান খান ওরফে রুমনকে (২৭)। এদের কাছ থেকে ৫টি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজ), এক কেজি বিস্ফোরক ও ১৭টি পেট্রোলবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব জানায়, ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর ভারতের বর্ধমানে জেএমবি কর্তৃক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর তদন্তে বাংলাদেশের তৎকালীন জেএমবির শীর্ষ নেতা শেখ রহমতুল্লাহ ওরফে মাছুম ওরফে সাজিদ ও মোঃ নাঈমের নাম প্রকাশ পায়। নাঈমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হচ্ছে মোঃ আব্দুল বাতেন। বাতেনের নেতৃত্বে গুলশান-বাড্ডা এলাকায় জেএমবির জনবল বৃদ্ধি ও অর্থ সংগ্রহের প্রধান হিসেবে কাজ করত মোঃ মনির মোল্লা। আর গ্রেফতারকৃত গোলাম কিবরিয়া ২০০৭ সাল থেকে জেএমবির দাওয়াতি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া বিভিন্ন আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ, সমন্বয় রক্ষা, কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকনির্দেশনা বিভিন্ন সদস্যদের পৌঁছানোর কাজটি করত। পাশাপাশি ছদ্মবেশে বিস্ফোরক দ্রব্য স্থানান্তরের কাজ করত। গ্রেফতারকৃতদের কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় একত্রিত হয়ে যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর উপলক্ষে দলটির ডাকা হরতালে নাশকতা চালানোর কথা ছিল। লালমনিরহাটে আটক ৩ ॥ লালমনিরহাট থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, যুদ্ধাপরাধী নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর গায়েবানা জানাজা পড়ায় জেএমবি ও আনসারুল্লা বাংলা টিমের তিনজন নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। আরও কয়েক জনকে আটক করতে যৌথ অভিযান চলছে। লালমনিরহাটে জেএমবি ও আনসারুল্লা টিমের সাত জন বড়মাপের নেতা এসেছে বলে শহর ও গ্রামে মানুষের মুখেমুখে খবর প্রচার হচ্ছে। আটককৃতরা হচ্ছে আবদুর রহমান মুকুল, হানিফ (৩৫) ও রোকনুজ্জামান (৩২)। এই ঘটনায় বুধবার রাতে পাটগ্রাম থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি জেলা শহরের বত্রিশ হাজারিতে বসবাসরত হাফেজ আব্দুর রহমান মুকুলকে (৩৩) নিজ গ্রামের বাড়ি জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন হতে পুলিশ আটক করে। হানিফকে (৩৬) নীলফামারী জেলার ডিমলার ভাঙ্গারহাট হতে রাতেই আটক করে। এদিকে যুদ্ধাপরাধী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নিজামীর গায়েবানা জানাজায় পাটগ্রামের বাউড়ায় আয়োজন করার অপরাধে শিবিরের নেতা ও জেএমবি সদস্য রোকনুজ্জামানকে (৩৫) পুলিশ বুধবার রাতে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। লালমনিরহাট পুলিশ সুপার জানান, র‌্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে জেএমবি ও আনছারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা কর্মীদের ধরতে মাঠে জাল বিছিয়েছে। জনগণকে সহায়তা করতে পুলিশ সুপার জানান, এলাকায় ১৫ হতে ৩০ বছর বয়সের নতুন কাউকে দেখা গেলে সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
×