ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ড. ওয়াজেদ মিয়ার ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ০৮:১১, ৯ মে ২০১৬

ড. ওয়াজেদ মিয়ার  ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী  আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ জামাতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রখ্যাত পরমাণুবিজ্ঞানী মরহুম ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার আজ ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালের এই দিনে উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্টসহ বার্ধক্যজনিত রোগে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জের ফতেপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন এই বিজ্ঞানী। মরহুম আবদুল কাদের মিয়া ও মরহুমা ময়জুন নেছা বিবির সন্তান ওয়াজেদ মিয়াকে সবাই ‘সুধা মিয়া’ নামেই চিনতেন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু। ১৯৫৬ সালে জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন রাজশাহী সরকারী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবছরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ সম্পন্ন শেষে ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন মেধাবী ছাত্র ওয়াজেদ মিয়া। প্রথম শ্রেণীর এই বিজ্ঞানী ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান আনবিক শক্তি কমিশনে যোগ দিয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরে আনবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৬৯ সালে ইতালির খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র তাকে ‘এ্যাসোসিয়েটশিপ’ প্রদান করে। ১৯৬৯ সালের নবেম্বর থেকে ১৯৭০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন শহরে ড্যারেসবেরি নিউক্লিয়ার ল্যাবরেটরিতে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা করেন। ১৯৭৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে শুরু করে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ভারতের আনবিক শক্তি কমিশনের দিল্লীর ল্যাবরেটরিতে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন ড. ওয়াজেদ মিয়া। ব্যক্তিজীবনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে অভ্যস্ত এই বিজ্ঞানীর দুই সন্তান। ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই রাত ৮টায় প্রথম সন্তান কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম হয়। একমাত্র কন্যা মনোবিজ্ঞানী সায়মা হোসেন পুতুল। বঙ্গবন্ধুর জামাতা এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বামী হওয়া সত্ত্বেও ড. ওয়াজেদ মিয়াকে কখনও ক্ষমতার কাছাকাছি দেখা যায়নি। নির্লোভ, নিরহঙ্কার, সৎ এই খ্যাতনামা বিজ্ঞানীর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে বলেন, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া তার মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে জনগণের কল্যাণে যে কাজ করে গেছেন জাতি তা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তিনি তার কর্মের জন্য শুধু আমাদের কাছে নন, ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে ড. ওয়াজেদ মিয়ার আদর্শ নতুন প্রজন্মের পাথেয় হয়ে থাকবে। কর্মসূচীতে রয়েছেÑ রংপুরে পীরগঞ্জের ফতেপুরে ওয়াজেদ মিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ঢাকায় ও ফতেপুরে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, ফাতেহা পাঠ, মরহুমের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর আলোচনা ও স্মৃতিচারণ এবং গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ।
×