তারেকের ইন্টারপোল রেড নোটিস প্রত্যাহার ॥ পুলিশ ব্যাখ্যা চেয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বড়ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারিকৃত ইন্টারপোলের রেড নোটিস প্রত্যাহার হয়েছে। তবে বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে ইন্টারপোল কোন ভিত্তিতে রেড নোটিস প্রত্যাহার করেছে তার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। ইন্টারপোলের সঙ্গে এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়। পুলিশ সদর দফতর জানায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ মোট ১৩টি মামলায় চার্জশীটভুক্ত আসামি হওয়ায় গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের অনুমতি সাপেক্ষে রেড নোটিস জারির অনুমতি চাওয়া হয়। বিচারাধীন পলাতক আসামিকে ইন্টারপোল রেড নোটিস জারির মাধ্যমে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা সম্পূর্ণ বিধিসম্মত এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রয়োজনীয়। ইন্টারপোল সচিবালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বার্থে রেড নোটিস জারি করেছিল। পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখার ধারণা, রেড নোটিস জারির পর তারেক রহমান বিভিন্ন প্রকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক লবির মাধ্যমে নিজের স্বপক্ষে বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করেন। যার প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল প্রথমে রিভিও এবং পরে রেড নোটিস বাতিল করে। রেড নোটিসটি রিভিউ করার পর্যায়ে এর কারণ সম্পর্কে জানতে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ইন্টারপোল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারেক রহমান প্রটেকটিভ স্ট্যাটাসে আছেন বিধায়, তার রেড নোটিস বাতিল করার সুযোগ রয়েছে। প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস বিষয়টি বোধগম্য না হওয়ায় কে বা কোন দেশ তাকে প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস প্রদান করেছে জানতে চাইলে এ সংক্রান্তে ইন্টারপোল থেকে কোন সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস রাজনৈতিক আশ্রয়ের মতো ও বিদেশে আশ্রয় গ্রহণের অন্য একটি উপায়। কোন তদন্তাধীন ফৌজদারি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করার বিধানের দৃষ্টান্ত রয়েছে। তারেক রহমান একাধিক ফৌজদারি মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি, যা আদালতে বিচারাধীন। এত কিছুর পরেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারিকৃত রেড নোটিস কি কারণে প্রত্যাহার হবে তা তাদের বোধগম্য নহে। বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। তবে যে মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছিল তা রাজনৈতিক মামলা নয়। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক বিবেচনায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন লোককে প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস বা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করে। সাধারণত যেসব দেশ মৃত্যুদ-কে সমর্থন করে না, সে সব দেশেই রাজনৈতিক আশ্রয় বা প্রটেকটিভ স্ট্যাটাস পাওয়ার সুযোগ বেশি। অনুরূপ কোন স্ট্যাটাস কোনভাবেই বাংলাদেশে ১৪টি ফৌজদারি মামলায় চার্জশীটভুক্ত, আদালতে চার্জশীট গৃহীত এবং বর্তমানে পলাতক অবস্থায় বিচারাধীন কোন আসামিকে তার দেশে জারিকৃত ফৌজদারি অপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করে না। অনুরূপভাবে ইন্টারপোলের রেড নোটিস প্রত্যাহার ও কোনভাবে কোন অপরাধীকে ফৌজদারি অপরাধ থেকে দায় মুক্তি প্রদান করে না। বিভিন্ন দেশের পুলিশের মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত আসামি গ্রেফতার, বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ বা সেমিনারের আয়োজন করে বিভিন্ন দেশের পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা ইন্টারপোলের দায়িত্ব। ইন্টারপোলের সদস্য দেশের ফৌজদারি বিচার কার্যক্রম সে দেশের নিজস্ব পদ্ধতিতে পরিচালিত হয় ও ইন্টারপোলের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট দেশের বিচার কার্যক্রমে কোনরূপ প্রভাব বিস্তার করে না।