ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দিনাজপুরে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের টার্গেট করছে জেএমবি

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৯ মার্চ ২০১৬

দিনাজপুরে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের টার্গেট করছে জেএমবি

সাজেদুর রহমান শিলু, দিনাজপুর ॥ নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্র মৌলবাদী জঙ্গী সংগঠন জেএমবি মাদ্রাসার পাশাপাশি এবার দিনাজপুরে স্কুল-কলেজের কোমলমতি মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের টার্গেট করে সদস্য সংগ্রহ শুরু করেছে। এমনকি সাইবার ক্যাফেগামী আধুনিক তরুণদেরও তাদের সংগঠনে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সিরিয়া, আফগানিস্তান, ইরাক ও ফিলিস্তিনে মার্কিন এবং ইসরাইল বিরোধী যুদ্ধের ভিডিও চিত্র দেখিয়ে তাদের জেহাদে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল অনুসন্ধান শেষে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে। শুধু শহরের ১০টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলোতে জেএমবি সদস্যরা ছাত্রদের দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনে নেয়ার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পরে তাদের দেখানো হয় এসব ভিডিও চিত্র। সংগৃহীত তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর জেলা পুলিশের একটি সূত্র। সূত্রটি জানায়, আগে জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল অশিক্ষিত জঙ্গী সদস্যরা। কিন্তু বর্তমানে তারা সংগঠিত হওয়ার জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কিছু তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী। আগে তারা শুধু মাদ্রাসার ছাত্রদের জঙ্গী প্রশিক্ষণ দিত। কিন্তু বর্তমানে এসব মেধাবী তরুণ বিভিন্ন স্কুল, কলেজে গিয়ে কোমলমতি ছাত্রদের দাওয়াতি কর্মসূচীর মাধ্যমে জেএমবির আদর্শে তাদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করছে। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন যুদ্ধের ভিডিও চিত্র। আর এসব চিত্র দেখে কোমলমতি ছাত্ররা তাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। সূত্রটি জানায়, জঙ্গী তৎপরতা চলার কারণে বর্তমানে আমরা যেসব স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শনাক্ত করেছি, সেগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে অভিভাবকদের দায়িত্ব হবে তাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া। তাদের খেয়াল রাখতে হবে সন্তানরা যেন বিপথগামী না হয়। সূত্রটি আরও জানায়, সদর দফতরের নির্দেশে দিনাজপুরের জঙ্গীবাদের তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ একটি দলকে মাঠে নামানো হয়। এই দলটি তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়েই বের হয়ে আসে শহরের স্কুল ও কলেজ এবং সাইবার ক্যাফেগুলোতে জঙ্গীদের দাওয়াতি কার্যক্রমের খবর। মূলত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া জেএমবির তৃতীয় সারির কিছু সদস্য এসব দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ প্রসঙ্গে দিনাজপুর আর্দশ কলেজের শিক্ষক ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পরিমল চক্রবর্তী তপন বলেন, ‘এ ধরনের তৎপরতা একটি বড় ধরনের অপরাধ। একে প্রশ্রয় দেয়া কোনভাবে উচিত হবে না। এখন থেকে আমরা এ বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সহায়তা করব। দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বারদেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোন কাজকে সমর্থন দেয়া উচিত নয়। কোমলমতি ছাত্রদের বিপথে নেয়া মানে পুরো দেশকে নষ্ট করে দেয়া। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
×