ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবার জেগে উঠবে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২৮ মার্চ ২০১৬

আবার জেগে উঠবে বাংলাদেশ!

মিথুন আশরাফ, কলকাতা থেকে ॥ সবদিকে যেন শুনশান নীরবতা নেমে এসেছে! এতদিন বাংলাদেশ ক্রিকেটপ্রেমীদের ভিড়ে কি জমজমাটই না ছিল কলকাতা। যেখানেই ক্রিকেটাররা টি২০ বিশ্বকাপে খেলেছেন, সেখানেই বাংলাদেশ ক্রিকেটপ্রেমীরা যেন মৌচাকের মতো দলের সঙ্গে লেগে ছিলেন। দল বেঁধে পিঁপড়ার মতো মাঠে দলকে সমর্থন দিতে গিয়েছেন। টি২০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ধর্মশালায়, এরপর ‘সুপার টেনে’ কলকাতা, ব্যাঙ্গালুরু হয়ে আবার কলকাতায় খেলেছে বাংলাদেশ দল। প্রত্যেক জায়গাতেই ক্রিকেটপ্রেমীরা হাজির হয়েছেন। ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ গর্জন শোনা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ ক্রিকেট সমর্থক দেখা গেছে কলকাতায়। ‘সুপার টেনে’র শুরুর ম্যাচটি এবং শেষের ম্যাচটি যে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে খেলেছে বাংলাদেশ। সেই কলকাতা এখন নীরব হয়ে গেছে। বাংলাদেশ দল রবিবার চলে গেছে বাংলাদেশে। ক্রিকেটপ্রেমীরাও দেশে ছুটতে শুরু করেছেন। তবে আবার ভারতে আসবে বাংলাদেশ দল এবং সেটি আগস্টেই। ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলতে আসবে বাংলাদেশ দল। যতদূর জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার আগস্টের মাঝামাঝি একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি হবে। এ টেস্টটির সঙ্গে শুরুতে কোন ওয়ানডে না থাকলেও এখন শোনা যাচ্ছে তিনটি ওয়ানডেও হতে পারে। সবকটি ম্যাচই আসলে কলকাতার ইডেন গার্ডেনেই হওয়ার কথা। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, ইডেন গার্ডেনে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের একমাত্র টেস্টটি নাও হতে পারে। সেটি অন্য কোথাও হতে পারে। কারণ হিসেবে জানা গেল, আগস্টের মাঝামাঝি খেলা হওয়া মানেই হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে যে কোনদিন খেলা শুরু হওয়া। সেই সময় এবং তার কয়েকদিন আগে স্বাধীনতা দিবস নিয়ে ভারতের অনেক প্রোগ্রাম থাকে। ১৫ আগস্ট হচ্ছে ভারতের স্বাধীনতা দিবস। সেই দিবসে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলোর মতো কলকাতাতেও অনেক আয়োজন থাকে। এমন সময়ে ইডেন গার্ডেনে খেলা নাও হতে পারে। এমন কোন স্থানে খেলা হতে পারে, যেখানে খেলা হলে স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনগুলোও ঠিকমতো হবে। আবার খেলাও চলবে ঠিকমতোই। সেই স্থানটিই এখন খোঁজা হচ্ছে। আবার একটি ভেন্যুর নামও শোনা যাচ্ছে। সেটি ধর্মশালা স্টেডিয়াম। নিশ্চিত কিছুই এখনও হয়নি। তবে বিসিবির একটি সূত্র এমনই আভাস দিয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অবশ্য বললেন, ‘দ্বিপাক্ষিক একটি চুক্তি হয়েই আছে। আগস্টে একটি টেস্ট হবে। বাংলাদেশ-ভারত খেলবে। কিন্তু এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। সবকিছু আলোচনা হবে।’ সেই আলোচনা কবে হবে? সুজন জানালেন, ‘তা এখনও ঠিক হয়নি।’ যতদূর জানা গেছে, বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগেই বিসিবির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিসিসিআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এ নিয়ে আলোচনা হবে। সুজন বললেন, ‘এখনও আলোচনা হওয়ার কোন দিনক্ষণ তৈরী হয়নি।’ তাহলে ভেন্যু কি ইডেন গার্ডেন থাকবে? বিসিবির সিইও বললেন, ‘এ নিয়ে আসলে বিস্তারিত আলোচনা করার সময় এখনও আসেনি। আর ভেন্যুতো এখনও ঠিকই হয়নি। ইডেন গার্ডেনের নামই বা কোত্থেকে আসল! এ নিয়ে কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ভেন্যুর বিষয়টি সফরকারী দলের হাতে থাকে না। এটি স্বাগতিক দলই নির্ধারণ করে।’ দেখা যাক এখন শেষ পর্যন্ত কোন ভেন্যুতে খেলে বাংলাদেশ। টেস্ট, ওয়ানডে, টি২০ মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে ১৯৮৮ সাল থেকে খেলে বাংলাদেশ। শুরুতে ওয়ানডে দিয়ে শুরু এরপর ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলেই টেস্টে পাঁ রাখে বাংলাদেশ। আর টি২০তো ২০০৯ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথম খেলেছে বাংলাদেশ। ২৮ বছর ধরে ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেট খেলে এখন পর্যন্ত ভারতের মাটিতে কোন পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। যতবারই খেলেছে, হয় টুর্নামেন্ট, নয়তো ত্রিদেশীয় কোন সিরিজে খেলেছে। আর খেলেছেও খুব বেশি নয়, চারটি মাত্র ম্যাচ। ভারতের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি২০ ম্যাচ খেলেছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে খেলার আমন্ত্রণ জানায়নি ভারত। এবার ভারতের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তিতে এ বছর আগস্টে একটি টেস্ট খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। যেটি আইসিসির ভবিষ্যত সফরসূচীতেও যুক্ত আছে। কিন্তু সেই ম্যাচটি হলেও, স্বাভাবিকভাবেই আশা ইডেন গার্ডেনে হবে। কিন্তু সেই সুযোগটি কি শেষ পর্যন্ত পাবে বাংলাদেশ? সেই প্রশ্ন থাকছেই। সেই সঙ্গে অপেক্ষাতেই থাকতে হচ্ছে খেলা হবে কোথায়। যেখানেই খেলা হোক, রবিবার যে টি২০ বিশ্বকাপ থেকে হতাশা নিয়ে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা, আবার তিন মাসের মধ্যেই হয়তো বাংলাদেশ দলকে ভারতে আসতে হবে। ভারতে আবার আসবে ফিরে বাংলাদেশ।
×