ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাকারিয়া স্বপন

আমাদের গর্ব বদরুল মুনির সারওয়ার এবং বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ২৮ মার্চ ২০১৬

আমাদের গর্ব বদরুল মুনির সারওয়ার এবং বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি

অনেক দিন পর এই গত সপ্তাহেই ফোনে কথা হচ্ছিল মুনিরের সঙ্গে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সময়ের পার্থক্যটা ঠিক ঘড়ির কাঁটায় উল্টো। তাই সপ্তাহান্ত ছাড়া ফোনে কথা বলার ভাল সময়টা হয়ে ওঠে না। আমাদের যখন রাত, তখন ওদের সকালে অফিসে যাওয়ার সময়। আর ওদের রাতে আমাদের সকাল। ওদের স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই অফিস থাকে। নিজেদের রান্না-বান্না থাকে, বাচ্চাকে তদারকি করে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার একটি বিষয় থাকে। এটাই প্রচলিত আমেরিকার জীবন। সেই জীবনে উইক-এন্ড ছাড়া কথা বলারও ফুসরত পাওয়া মুশকিল। তাই ওদের সঙ্গে কথা বলার জন্য উইক-এন্ডের জন্য অপেক্ষা করি। ওদের যখন উইক-এন্ড তখন আবার আমাদের অফিস থাকে। তাই গাড়িতে বসেই কথা হলো। আগামী মাসে সিলিকন ভ্যালি যাওয়ার কথা। আমি ওখানে গেলে ওদের বাসাতেই থাকি। মুনির বলল, তুই আসতে পারিস, তবে এপ্রিলের ১৩ তারিখ কানাডার মন্ট্রিলে যাব। তুই ওটার আগে-পিছে চলে আয়। সিলিকন ভ্যালি হলো আমেরিকার পশ্চিম তীরে, আর মন্ট্রিল হলো পূর্ব তীরে। পশ্চিম থেকে পূর্ব যাওয়াটা লম্বা একটি সফর। আমি হাসতে হাসতে বললাম, কী রে হঠাৎ করে আবার পূর্বে কেন! স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে মুনির বলল, একটা কনফারেন্সে যাব। বিভিন্ন কনফারেন্সে গবেষণাপত্র পড়তে যাওয়া কিংবা কনফারেন্সে এটেন্ড করতে যাওয়াটা মুনিরের কাজের অংশ। প্রায়ই দেখি ওকে বিভিন্ন কনফারেন্সে যাচ্ছে। আমি আর বিস্তারিত জিজ্ঞেস করলাম না। আমি বললাম, ঠিক আছে আমি তাহলে ওই তারিখের আগে কিংবা পরে আসব। টিকেট কনফার্ম করে তোকে জানাব। কিন্তু দু’দিন পরেই ওর স্ত্রীর (কাজী ইফ্ফাত হক) কাছে জানতে পারলাম, মুনির এমন একটি পুরস্কার আনতে মন্ট্রিল যাচ্ছে, যা গুগলের প্রতিষ্ঠাতা সার্গেই ব্রিন এবং ল্যারি পেজকে গত বছর দেয়া হয়েছিল। এই হলো আমাদের বদরুল মুনির সারওয়ার। লাজুক, নিজের সম্পর্কে এমন একটি বিশাল সংবাদ ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের বলতেও লজ্জা পায়। মুনির এবং ওর স্ত্রী দু’জনই আমার বুয়েটের ক্লাসমেট। ওর খবর জানতে হয় ওর স্ত্রীর কাছ থেকে। যারা মুনিরকে কাছ থেকে দেখেছে তারা জানে কতটা বিনয়ী এবং বিশাল মনের মানুষ ও। সেই মানুষটি বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে। মিডিয়া তাকে নিয়ে বড় কভারেজ দিচ্ছে। আমি কেবল দূর থেকে ওর লাজুক মুখটাই দেখতে পাচ্ছি। ॥ দুই ॥ মুনির যে গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেতে যাচ্ছে, সেই কাজটি সম্পর্কে আমরা বন্ধুরা আরও আগেই জানতাম। যারা তথ্যপ্রযুক্তির এই ধারার বাইরে তাদের জন্য বলা যায়, এই গবেষণাটায় ওরা পাইওনিয়ার ছিল। মুনির যখন ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটায় পিএইচডি করছিল তখন আরও তিনজন অধ্যাপকের সঙ্গে তারা এমন একটি এলগরিদম তৈরি করে যা দিয়ে ইন্টারনেটে আপনি কী কিনছেন এবং পরবর্তীতে কি কি কেনাকাটা করতে পারেন সেটা বলে দিতে পারে। বিষয়টা অনেকটা এ রকম যে, কম্পিউটার সিস্টেম আপনার প্রোফাইল এবং কেনাকাটার প্যাটার্ন দেখে বলে দিতে পারে যে, আপনি আর কী কী জিনিস পছন্দ করতে পারেন এবং এটাকে বলে ‘রেকমেন্ডেশন সিস্টেম’। আপনি ইন্টারনেটে একটি বই কিনলেন। মুহূর্তেই আপনার আগের কেনাকাটার ধরন এবং এই বইটি কেনার পর আপনাকে দেখাতে থাকবে আর কোন্ কোন্ বই কিংবা পণ্য আপনি পছন্দ করতে পারেন। অনেকেই হয়ত মনে করতে পারেন যে, আমি একটা গল্পের বই কিনেছি। আর কোন্ কোন্ গল্পের বই আমি পছন্দ করতে পারি- এটা বলতে পারা আর কেমন কী কঠিন কাজ? একটু ঠা-া মাথায় চিন্তা করুন তো। আমরা অনেক বছর প্রেম করার পরেও সঠিকভাবে বলতে পারি না আপনার প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার পছন্দের বিষয় কোন্টি। অনেক দিন কাছাকাছি থাকার পর হয়ত কিছুটা অনুমান করতে পারেন। কিন্তু একটি কম্পিউটার সিস্টেম কোটি কোটি মানুষের এই পছন্দ-অপছন্দকে কিভাবে জানতে পারে? কম্পিউটার তো আর আপনার সঙ্গে প্রেম করছে না? বর্তমানে বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত ইন্টারনেটে কেনাকাটার ওয়েবসাইট এমাজন.কম এবং অনলাইন ভিডিও দেখার সাইট নেটফ্লিক্সসহ আরও অনেক ওয়েবসাইট মুনিরদের তৈরি করা ওই এলগরিদম ব্যবহার করে থাকে। আপনি একটি সিনেমা দেখেছেন। লাখ লাখ সিনেমা থেকে আর কোন্ কোন্ সিনেমা আপনি পছন্দ করতে পারেন তা আপনাকে বলে দেবে। তখন আপনি সেটা ক্লিক করেই পেয়ে যেতে পারেন। যখনই এই এলগরিদমটি নিয়ে মুনিরের সঙ্গে কথা হয়েছে, তখনি সব মজার মজার তথ্য ও আমাদেরকে দিয়েছে। যেমন, আমেরিকাতে নাকি বিয়ার কেনার সঙ্গে ডায়পার কেনার একটি সম্পর্ক আছে। কেউ কি একটু চিন্তা করতে পারেনÑ এই দুটি পণ্যের মধ্যে সম্পর্ক হয় কিভাবে? একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিয়ার কিনছে। সেই মানুষটি একই সঙ্গে ডায়পার কিনছে কেন? কেউ কেউ বলছেন, বাচ্চাকে ডায়পার পরিয়ে দিয়ে নিজেরা আরাম করে বিয়ার খাবে- তাই। হবে হয়ত। কিন্তু এটাও কিন্তু এক ধরনের রেকমেন্ডশন সিস্টেমের ব্যবহার। আর তাই আমেরিকার অনেক স্টোরে বিয়ারের পাশে ডায়পার রাখা হয়। এমন আরও অনেক ইন্টারেস্টিং তথ্য আছে যা হয়ত আমরা সাধারণভাবে ধরতে পারি না। মানুষের রুচি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিকভাবে কোনও কিছু রেকমেন্ড করতে পারার মতো বুদ্ধিমত্তা আর কী হতে পারে? ২০০১ সালে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনফারেন্সে তাদের এই পেপারটি প্রথম পাবলিশ করা হয়। সেই থেকে গত ১৫ বছরে ৫১৫০টি গবেষণাপত্র তাদের এই গবেষণা করে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করেছে (গুগল স্কলার) এবং গত কয়েক বছরে এই গবেষণার ওপর নির্ভরতা আরও বেড়েই যাচ্ছে। তাদের এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আগামী এপ্রিলের ১৩ তারিখ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনফারেন্সে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। আমরা মুনিরের এই অর্জনে গর্বিত। তার বন্ধু হতে পেরে ধন্য। ॥ তিন ॥ আমাদের কোন মানুষ যখন দেশের বাইরে গিয়ে সফল হন, বাইরের কোন প্রতিষ্ঠিত পুরস্কারে ভূষিত হন, তখন আমরা বাংলাদেশীরা গর্বিত হই। যত বড় পুরস্কার, আমাদের বুক তত বেশি ফুলে ফেঁপে ওঠে। কিন্তু একটা বিষয় কি আমরা কেউ খেয়াল করেছি - এই মানুষগুলোর মেধাকে আমরা দেশে কেন কাজে লাগাতে পারলাম না। দেশের কোন সমস্যা সমাধানে তাদেরকে কেন যুক্ত করতে পারলাম না? অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের ব্যাংকে যা হয়ে গেল, তা কি আমরা একটিবারের জন্য চিন্তা করেছিলাম? আমরা কি ভেবেছিলাম, বাংলাদেশের এই বড় ক্ষতিটা হতে পারে। এবং এর জন্য সঠিক তথ্যপ্রযুক্তির মানুষগুলোকে জড়িত করাটা প্রয়োজন ছিল। আমি নিশ্চিত, আমরা সেটা অনুভব করিনি। বিগত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে সরাসরি কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ানো হয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রথম এই বিষয়ে একটি বিভাগ খুলে। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মতিন পাটওয়ারী বিশেষ পদক্ষেপ নিয়ে চালু করেন কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ। তারপর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই বিভাগটি খুলতে শুরু করে। সেই থেকে অনেকটা পথ এগিয়েছে বাংলাদেশে কম্পিউটার বিজ্ঞানে লেখাপড়া। বর্তমানে প্রতিবছর পনেরো হাজারের বেশি গ্র্যাজুয়েট বের হয়। এই বিশাল অঙ্কের মান যে খুব ভাল সেটা বলা যাবে না। যারা খুব ভাল তারা প্রথমেই পা বাড়ায় দেশের বাইরে। বর্তমানে বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। গুগল, ফেসবুক, বুকিংস.কম ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সরাসরি বাংলাদেশ থেকে রিক্রুট করে থাকে। ফলে অনেক ছাত্রছাত্রী পাস করেই বিদেশে চাকরি নিয়ে চলে যায়। আগে যেত লেখাপড়া করতে; তারপর চাকরিতে। এখন সরাসরি চাকরি। আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা পুরো পৃথিবীকে দাবড়িয়ে বেড়াক। একটা জাতি হিসেবে এটা যে কেউ চাইবে। কথায় কথায় আমরা ভারতের উদাহরণ নিয়ে আসি। ভারতের অসংখ্য ছেলেমেয়ে এই বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে সমৃদ্ধ করেছে; এবং করছে। পাশাপাশি তারা তাদের দেশের অনেক সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে পারছে। লাখ লাখ গ্র্যাজুয়েট এই ক্ষেত্রে যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করছে। কিন্তু আমরা পারছি না কেন? আমার কাছে মূলত দু’টি কারণ মনে হয়। ক. আমরা যত গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছি তার বেশিরভাগের মান আন্তর্জাতিক মানের নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির পর কয়েকটি মিডিয়াতেও আমি একটা কথা বলেছিলাম তাহলো, এই একটি খাতে আপনাকে আন্তর্জাতিকমানের হতে হবে। কারণ, আপনি যেই সিস্টেমটি বানাচ্ছেন তা বর্তমান এই পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে ব্যবহার করা যায়। ফলে এটা এখন আর স্থানীয় বিষয় নয়, পাড়া কিংবা মহল্লার বিষয় নয়। কিন্তু আমরা বিষয়টাকে পাড়া/মহল্লার বিষয় বানিয়ে ফেলেছি। বাংলাদেশে এখন সবাই তথ্যপ্রযুক্তি বুঝে, সবাই বিশেষজ্ঞ। আমি এমন অনেক মানুষ দেখছি, যারা এই ক্ষেত্রের মানুষই নয়, জীবনে এই বিষয়ে লেখাপড়াও করেননি, কিন্তু তারাই বড় বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কথা বলছেন। এটাই যখন আমাদের প্র্যাকটিস সেখানে স্থানীয় বাজারে ভাল বাংলাদেশী যোগ্য মানুষগুলো কাজ করার সুযোগ পাবে না। আমাদের প্রাইয়োরিটি হলো ফ্রিল্যান্সিং বাড়ানো। আমরা আসলে মূল বিষয়টি ধরতেই পারছি না। খ. তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে এখনও ভাল মানের কাজের জায়গা তৈরি হয়নি। তাই যারা অনেক ভাল, তারা জীবনের তাগিদে এবং তাদের মেধার বিকাশের জন্য ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশে চলে যাচ্ছে; এবং তাদের সমস্যা সমাধান করছে। আমরা কথায় কথায় মাইক্রোসফটের কথা বলি, গুগলের কথা বলি, ফেসবুকের কথা বলি, ইয়াহুর কথা বলি, ইন্টেল, সিসকো, ওরাকল, এ্যাপলের কথা বলি। কিন্তু আমি নিশ্চিত, যারা কথায় কথায় এগুলো বলেন, তারা মাইক্রোসফট, গুগল, ইয়াহু, ইন্টেল, সিসকো, ওরাকল, এ্যাপল সম্পর্কে তেমন ধারণাই রাখেন না। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা এবং কার্যক্রমের গভীরে যাওয়ার সুযোগ তাদের নেই। ফলে বাংলাদেশের কোন ভাল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ওই সব প্রতিষ্ঠান ছেড়ে বাংলাদেশে এসে কাজ করার কথা ভাবে না। বাংলাদেশে মাইক্রোসফট ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করে, কিন্তু তারা কোন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার খুলে না। স্যামসাং বেশ বড় একটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার খুলেছিল; তা এখন যে কোন মুহূর্তে বন্ধ হওয়ার পথে। প্রচুর কর্মীকে ছাঁটাই করে দিয়েছে এবং আগামী বছরই এটা পুরো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গুগল একজন দু’জন করে বাংলাদেশে লোক নিয়েছে, কিন্তু কোন অফিস দেয়নি। তারা বাসা থেকেই কাজ করেন। সিসকো, আইবিএম অফিস নিয়েছে- তবে মাত্র বিক্রি ও সেবা দেয়ার জন্য। আর কিছু ইউরোপীয় ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান এখানে কাজ করে, তবে সেগুলো তেমন বড় নয় যেখানে কর্মীরা তাদের ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন। সেগুলো মূলত বডি শপ। কিন্তু বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে কাজ করলে আমাদের ছেলেমেয়েরা বুঝতে পারত, আন্তর্জাতিক কাজের মানটি কোথায় এবং ঠিক কিভাবে কাজ করতে হয়। কাজের মাধ্যমে ট্রেনিংটা হয়ে যেত। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির জন্য এটা এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। ॥ চার ॥ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে একটি বড় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের গাজীপুরে একটি বিশাল আকারের হাইটেক পার্ক হচ্ছে যেখানে বিশ্বের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এসে তাদের ডেভেলপমেন্ট সেন্টার তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যতটা জানতে পেরেছি, ওখানে বিশাল ডাটা-সেন্টারও তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি অনেক অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। সেখানে তাদের জন্য বিশেষ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা ছাড়াও আরও অনেক আন্তর্জাতিকমানের ব্যবস্থা তৈরির কাজ চলছে। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা বুদ্ধিদীপ্ত- এটা নিয়ে কেউ কখনই প্রশ্ন তোলেননি। আমাদের ছেলেমেয়েরা যে ভাল তা বহুবার বহুভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের প্রয়োজন সঠিক ট্রেনিং, গাইডেন্স এবং টিম ওয়ার্ক। ভাল টিম ওয়ার্ক থাকলে যে আমরা ভাল করি তার প্রমাণ হলো আমাদের ক্রিকেট দল। মাত্র কয়েক বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোথা থেকে কোথায় চলে এসেছে। একইভাবে কাজ করলে কয়েক বছরের মধ্যই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও আন্তর্জাতিকভাবে শক্ত পায়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। আমি যখন এই লেখা লিখছি তখন বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৫ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। অনেকটা পথ হেঁটে ফেলেছে এই দেশ। তলাহীন ঝুড়ি থেকে দারুণ উঠতি একটি অর্থনীতিতে চলে এসেছে এই দেশ। তার মূল কারণ হলো এই দেশের মানুষ। তরুণ জনগোষ্ঠীর এই দেশ আরও ভাল করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর ৫ বছর পরেই আমরা পালন করব স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর। কী দারুণ একটি ব্যাপার হবে এই সময়ে। আজকের এই স্বাধীনতা দিবসে কি আমরা অঙ্গীকার করতে পারি, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতেও একটি শক্তিশালী দেশ হিসেবে এই বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে! আমাদের তৈরি হোক আরও অনেক বদরুল মুনির সারওয়ার; আর আমরাও হয়ে উঠি একটি শক্তিশালী জ্ঞাননির্ভর সমাজে। সেই প্রত্যাশায় সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। ২৬ মার্চ ২০১৬ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং সম্পাদক, প্রিয়.কম ুং@ঢ়ৎরুড়.পড়স
×