ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

লৌহজংয়ে এক মাসে ৭ খুন

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৪ মার্চ ২০১৬

লৌহজংয়ে এক মাসে ৭ খুন

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ লৌহজং উপজেলায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। গত এক মাসে এ উপজেলায় ৬টি খুন, ডাকাতি, চুরিসহ বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। মাত্র একটি মামলায় একজন আসামি গ্রেফতার ছাড়া বাকি মামলাগুলোর তেমন কোন অগ্রগতি নেই। রক্ষক হয়েও লৌহজং থানার পুলিশ যেন ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে। এসব হত্যাকা-সহ ডাকাতি, চুরি ও সংঘর্ষের ঘটনায় একটিরও কোনরকম সুরাহা না হওয়ায় এখন প্রশ্ন উঠেছে সব মহলে। পুলিশের দায়িত্বটা কী? গত সোমবার রাতে লৌহজং থানার ২০ গজের মধ্যে ব্যবসায়ী সঞ্জয় সরকারকে (২৫) নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পাথর দিয়ে তার মাথা থেঁতলে ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরেই তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে উপজেলার কুমারভোগের পদ্মা সেতুর আবাসন পল্লীর বাসিন্দা শিশু সায়মনকে (৯) অপহরণের তিন দিন পর হত্যা করে তার লাশ বাড়ির পাশে একটি ডোবার মধ্যে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। চলতি মাসের প্রথমদিকে উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে বাসশ্রমিক শিশু মিজানকে খুন করে লাশ ঘাটের পাশে ডোবায় ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। এরপর প্রায় সপ্তাহখানেক পর একই এলাকায় একটি এনজিওর গাড়িচালক আলফ্রেড (৪৩) রোজারিও নামের গাড়ির ড্রাইভারকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে তার লাশ পদ্মায় ফেলে দিলে তার দুই দিন পর উপজেলার সামুরবাড়ি এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। এর পরের সপ্তাহে উপজেলার কনকসারের ধীপপুর গ্রামে শিশু নিলয়কে হত্যা করে তার গলায় রশি পেঁচিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনার পরের দিন উপজেলার আটিগাঁও গ্রামের গৃহবধূ শিল্পী আক্তারকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় গত ১৩ মার্চ উপজেলার মাইজগাঁও গ্রামে বৃদ্ধ মোঃ আনোয়ার হোসেন শেখকে (৫৫) পিটিয়ে হত্যা করে একই এলাকার প্রতিপক্ষের লোকজন। চলতি মাসেই উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের মর্শদগাঁও গ্রামে রশিদ শেখের বাড়িতে ঘটে ডাকাতির ঘটনা। এসব ঘটনার কোনটারই সঠিক কোন তদন্ত বা মামলাগুলোর কোন অগ্রগতি করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, গত ৬ মাসে একবারও উপজেলার আইশৃঙ্খলা সভায় উপস্থিত থাকেননি লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন। এলাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। লৌহজংয়ের অর্ধশতাধিক স্পটে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি চললেও পুলিশের দৃষ্টিতে মাদকমুক্ত রয়েছে লৌহজং থানা। এসব কারণে ক্রমেই ভেঙ্গে পড়েছে লৌহজংয়ে আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন তারা।
×