ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে উজ্জীবিত ভারত, কৃতী ব্যাটসম্যানের প্রশংসায় অধিনায়ক ধোনি, আফ্রিদির কণ্ঠে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়

এভাবেই চ্যালেঞ্জ জয় করতে চান কোহলি

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২১ মার্চ ২০১৬

এভাবেই চ্যালেঞ্জ জয় করতে  চান কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইডেনে উন্মদনার ম্যাচে চিরশত্রু পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করে টি২০ বিশ্বকাপে সেমির রেসে টিকে থাকল স্বাগতিক ভারত। ইডেনে মহেন্দ্র সিং ধোনিদের জয় ৬ উইকেটে। যথারীতি আইসিসির টুর্নামেন্টে পাত্তা পেল না শহীদ আফ্রিদির দল। এ নিয়ে ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপ মিলিয়ে ১১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে সবকটিতেই ভারতের কাছে হারল পাকিস্তান! বৃষ্টি-বাগড়ায় ১৮ ওভারে নেমে আসা লড়াইয়ে ৫ উইকেটে ১১৮ রান সংগ্রহ করে আফ্রিদিরা। জবাবে ১৫.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। ৩৭ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৫৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দিয়েন ‘নায়ক’ বিরাট কোহলি। ক্রেজি ব্যাটসম্যানকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন অধিনায়ক ধোনি। ‘সত্যি বলতে প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ওভাবে হেরে যাওয়ায় খুবই কষ্ট পেয়েছি। জানতাম সেদিন আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে আমাদের পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততেই হতো। খেলাটা ইডেনে বলে চ্যালেঞ্জটা আরও বেশি ছিল। কারণ এখানে ওদের রেকর্ড ভাল। কিন্তু আমরা পেরেছি। গুরুত্বপূর্ণ জয়ে ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পেরে ভাল লাগছে। সামনে দলের হয়ে এভাবে আরও অনেক অনেক চ্যালেঞ্জ জয় করতে চাই।’ বিসিসিআই ওয়েবসাইটকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, ‘সেনসেশনাল’ কোহলি। মোহাম্মদ সামির দুর্দান্ত বোলিংয়ে এক পর্যায়ে পঞ্চম ওভারেই ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। তখনই যুবরাজ সিংকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৬১ রানের মহামূল্যবান জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন কোহলি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। উন্মাদনার ম্যাচ দেখতে উপস্থিত গ্রেট শচীন টেন্ডুলকরকে এই হাফ সেঞ্চুরি উৎসর্গ করেন কোহলি। ঢাকায় এশিয়া কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৫৬, ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচজয়ী অপরাজিত ৪১Ñএর পর পাকিস্তান ম্যাচে ৫৫*। সত্যি উইনিং ইনিংস উপহার দেয়ার সামর্থ্যে যেন গ্রেট শচীনকেও ছাড়িয়ে কোহলি। ‘আমি শচীনকে দেখে, তাকে আদর্শ মেনে খেলা শুরু করেছি। ইডেনে ৬৭ হাজার দর্শকের সঙ্গে তিনিও যখন আমার খেলা উপভোগ করছেন, এটা সত্যিকার অর্থে দারুণ এক অনুভূতি।’ দলের সেরা ব্যাটসম্যানকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ধোনিও, ‘গত দশ বছরে আমি কোহলির মতো এমন পারফেক্ট ব্যাটসম্যান আর দেখিনি। কঠিন চাপের মধ্যেও সে ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটিং উপহার দিতে সক্ষম।’ পাকিস্তানকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসটাও ফিরে এসেছে অধিনায়কের মধ্যে, ‘কঠিন পরিস্থিতিতে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয় আমরা সেটা জানি। অতীতে অনেক সিরিজ ও টুর্নামেন্টে সেটি দেখিয়েছি।’ শনিবার উন্মদনার ওই ম্যাচ দেখতে ইডেনে উপস্থিত ছিলেন প্রতিপক্ষ পাকিস্তান কিংবদন্তি ইমরান খান। দেশটির হয়ে একমাত্র বিশ্বজয়ী সেনাপতি বলেন, ‘কোহলির সামর্থ্য অনেক। দল ওর ওপর অনেক দিক দিয়েই নির্ভর করে। সে নিজেকে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় নিয়ে যেতে সঠিক পথেই আছে। আমি ওর মধ্যে অসীম সম্ভাবনা দেখি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ওর ব্যাটিংয়ে দুর্বলতা বের করা কঠিন। উইকেটের দু’দিকেই সে দারুণ। ফ্রন্ট ফুটে যেমন, ব্যাক ফুটেও তেমনি স্বচ্ছন্দ। টেম্পারামেন্ট-টেকনিকে অনেক এগিয়ে।’ ম্যাচে উত্তরসূরি আফ্রিদিরা অনেক বেশি চাপ নিয়েছিল বলেও মনে করেন পাক ক্রিকেটের সাবেক এই সুপার হিরো। আর মাঠের অধিনায়ক আফ্রিদির মতে রানটা কম হয়ে গিয়েছিল,‘ ‘আমি কিছুটা হতাশ। ইডেনে এই ধরনের পিচ আশা করিনি। তার ওপর ম্যাচের আগে বৃষ্টি হয়েছিল। যে কারণে ৩০-৩৫ রান কম হয়ে গেছে। আর বোলাররাও সঠিক জায়গায় বল করতে পারেনি।’ তবে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আশাবাদী আফ্রিদি, ‘আমাদের ভাল খেলার সামর্থ্য রয়েছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে ছেলেরা সেটি প্রমাণ করেছে। নিউজিল্যান্ড ম্যাচেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’ মঙ্গলবার মোহালিতে তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ অপরাজেয় কিউইরা।
×