ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্মরণসভায় বক্তারা

জ্যাকবের বুদ্ধিমত্তায় পাকি সৈন্যরা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছিল

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

জ্যাকবের বুদ্ধিমত্তায় পাকি সৈন্যরা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জেনারেল জ্যাকব মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের যুদ্ধটা ভাল বুঝেছিলেন। আপত্তি সত্ত্বেও অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণ করিয়েছিলেন জেনারেল জ্যাকব। মুক্তিযুদ্ধের মহান এই বন্ধু ছিলেন অত্যন্ত প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অতুলনীয়। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের মহান বন্ধু জেনারেল জে. এফ. আর জ্যাকব স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিসিএস মুক্তিযোদ্ধা ও মুজিবনগর অফিসার ও কর্মচারী সমিতির উদ্যোগে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। অুনষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মিত্রবাহিনী গঠনে জেনারেল জ্যাকবের অবদান অতুলনীয়। শুধু তাই নয়, তিনি মিত্রবাহিনীর মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। যুদ্ধের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কৌঁশলী। পাকিস্তানীরা যদি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ না করত তাহলে ঢাকায় বসবাসকারী মানুষের ক্ষয়ক্ষতি আরও বৃদ্ধি পেত। সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে তারা মুক্তি কামনা করত। এছাড়া সপ্তম নৌবহর চলে আসলে ইতিহাস ভিন্নভাবেও রচিত হতে পারত। আপত্তি সত্ত্বেও অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করিয়েছিলেন জেনারেল জ্যাকব। মন্ত্রী আরও বলেন, যুদ্ধের শেষ মুহূর্তে মিত্রবাহিনী গঠন করে তিনি আমাদের সঙ্গে সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী জানজুয়ার মৃত্যুতে তিনি রাষ্ট্রীয় শোক পাঠাতে পারেন অথচ মুক্তিযদ্ধের মহান বন্ধু জেনারেল জ্যাকবের ক্ষেত্রে তিনি নীরব থাকেন। এ সময় তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সকল সৈন্যকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। এমপি মোরশেদ আলম বলেন, জেনারেল জ্যাকবের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা সবাই জানি; কিন্তু যা জানি না তা হচ্ছে-তার প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার কথা। তিনি বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিয়াজীকে মানসিকভাবেও পরাজিত করেন। পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনীর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণে জ্যাকব আমাদের কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন বলেন, তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে নিজের চাওয়া পাওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের যুদ্ধে অনেক উপাদান ছিল, যা অন্য কোন দেশের যুদ্ধে অনুপস্থিত। দেশের ভেতর যারা যুদ্ধ করেছি তারা যুদ্ধের কোন ব্যাকরণ মেনে চলিনি। আর সে অবস্থা জেনেই জ্যাকব পরিকল্পনা করেন, চারদিক থেকে পাকিস্তানীদের ঘিরে ফেলেন। তিনি ছিলেন বিচক্ষণ। তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিসিএস মুক্তিযোদ্ধা ও মুজিবনগর অফিসার ও কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার আসাদুজ্জামান।
×