ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের একুশে অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের একুশে অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শোভা পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ছবি সংবলিত আলপনা আঁকা কাপড়। চূড়ায় শেষবেলার আলোকরশ্মি। বেদির সামনে বসে আছেন দেশের বরেণ্য চার ভাষাসৈনিক। তাদের দুইপাশ ঘিরে রয়েছেন বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। তার পরের স্তরে লাল কার্পেটে দর্শক-শ্রোতা। প্রাঙ্গণজুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেকে। সোমবার বিকেলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত একুশে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী পর্বের চিত্রটা ছিল এমনই। অনুষ্ঠানমালার এবারের সেøাগান ‘রাষ্ট্র চলবে বাংলায় না চলা অন্যায়’। এদিন বিকেলে সম্মিলিতভাবে ১৪ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন চার ভাষাসৈনিক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, অধ্যাপক ড. শরীফা খাতুন, অধ্যাপক ফুলে হোসেন ও সাবির আহমেদ চৌধুরী। জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব আইটিআই সম্মানিত সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ড. মুহাম্মদ সামাদ, বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর, নাট্যজন ঝুনা চৌধুরী, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা প্রমুখ। শুরুতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্প অর্পণ পূর্বক দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয়ভাবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ গান পরিবেশন করে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের শিল্পীরা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একুশে অনুষ্ঠানমালা উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। পরে ‘যে দেশেতে শহীদ মিনার একুশে ফেব্রুয়ারি সেই দেশেতে জন্ম আমার বলছি সবার কাছে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দনের শিল্পীরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধসহ আমাদের সব সংগ্রামের অনুপ্রেরণার মূলে রয়েছে অমর একুশে। আমাদের সংগ্রাম শুরু হয়েছে বাহান্নে। কিন্তু এর কোন শেষ নেই। নানা ক্ষেত্রে প্রতিদিন যুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধ যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজের জন্য। এ দেশে আমরা এমন কিছু দেখতে চাই না, যা একুশের চেতনার বিরুদ্ধে যায়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে একক গান পরিবেশন করেন শিল্পী সমর বড়ুয়া, আরিফ রহমান ও আবিদা রহমান সেতু। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পী রফিকুল ইসলাম। সবশেষে অনিক বসুর পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দনের শিল্পীরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ অনুষ্ঠান চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং শুরু হবে প্রতিদিন বিকেল ৪টায়। ধানম-ি রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চে আগামী ১৮ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠান। জলের ধারা জল রং কর্মশালা শুরু ॥ প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জাতীয়ভাবে জল রং কর্মশালার আয়োজন করে জলের ধারা সংগঠন। রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটি মিলনায়তনে সোমবার সকালে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন সম্মিলিতভাবে চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, হামিদুজ্জামান খান, বীরেণ সোম, অলকেশ ঘোষ ও গৌতম চক্রবর্তী। কর্মশালায় অংশ নেয় ঢাকা চারুকলা, ইউডা চারুকলা, ঢাকা আর্ট কলেজ, জগন্নাথ চারুকলা, জাহাঙ্গীরনগর চারুকলা, নায়ায়ণগঞ্জ আর্ট কলেজ, ত্রিশাল চারুকলা, বগুড়া আর্ট কলেজ, শান্ত মারিয়াম চারুকলা, চট্টগ্রাম চারুকলা ও বুলবুল ললিতকলা একাডেমির ছাত্র-ছাত্রীরা। কর্মশালা চলবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নৃত্যাঞ্চলের পরিবেশনায় ‘নৃত্যমালা’ অনুষ্ঠিত ॥ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে সোমবার সন্ধ্যায় নৃত্যাঞ্চলের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয়ে নাচের অনুষ্ঠান ‘নৃত্যমালা’। এতে সংগঠনের নৃত্য শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন নাচ পরিবেশন করেন। কত্থক, ভরতনাট্যম, লোকনৃত্য, গৌড়ীয় নৃত্য, রবীন্দ্র ও নজরুলের গানের সঙ্গেও ছিল বিশেষ নৃত্য। নৃত্যানুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা ও শিবলি মোহাম্মদ।
×