ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জে গ্যাসের সংকট প্রকট ॥ অবৈধ সংযোগের রমরমা

প্রকাশিত: ০২:২৯, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মুন্সীগঞ্জে গ্যাসের সংকট প্রকট ॥ অবৈধ সংযোগের রমরমা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ॥ মুন্সীগঞ্জে গ্যাস সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ থাকলেও নেই তার প্রতিকার। আর বৈধ গ্রাহকরা পাচ্ছে না গ্যাস। এদিকে সোমবার জেলা উন্নয়ন সভায় তিতাস গ্যাসের কোন প্রতিনিধি ছিল। তাই এমন নানা অভিযোগ থাকলেও আলোচনা হয়নি। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল জানান, গ্যাস সঙ্কট সমাধানে উধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র দেয়া হবে একই সাথে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- শহরের উপকণ্ঠ ধলেম্বরীর ওপারে মুক্তারপুরে কয়েকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরী বিশেষ মেীশনে গ্যাস টেনে নেয়ার কারণে মুন্সীগঞ্জবাসীর গ্যাস সঙ্কটে রান্না বান্না কঠিন হয়ে পরেছে। এদিকে শহরের মানিকপুর, উত্তর ইসলামপুর, মাঠপাড়াসহ আশপাশ এলাকায় অসংখ্য গ্যাস সংযোগ রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে মুন্সীগঞ্জ গ্যাস অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে অবৈধ কোন গ্যাস সংযোগ লাইনের তথ্য নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গ্যাস অফিসের অসাধু কিছু ঠিকাদার ও স্টাফের সাথে যোগসাজসে এসব অবৈধ গ্যাস লাইন বিতরন করা হয় । আবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একজনের বৈধ গ্যাস লাইন থেকে আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজন ঐ গ্যাস লাইন থেকে লাইন টেনে তাদের বাড়িতে অবৈধ গ্যাস লাইন নিচ্ছে। এভাবে নেওয়া অবৈধ গ্যাস লাইনের সংখ্যাই বেশী। কিন্তু স্থানীয়রা এসব অবৈধ লাইনের তথ্য দিচ্ছেনা বলে গ্যাস অফিস কর্তৃপক্ষ জানায়। এদিকে মুন্সীগঞ্জে গ্যাস প্রেসার না থাকায় অধিকাংশ সময়ই গ্যাসের চুলা জ¦লেনা। গভীরে রাতে ২/৩ ঘন্টা গ্যাসের প্রেসার কিছুটা বাড়লেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তার পরও গৃহিনীরা রাত জেগে রান্না করার আসায় বসে থাকেন। আর সারাদিন প্রেসার এতই কম থাকে গ্যাসের চুলাই জলেনা। গত কয়েকমাস ধরে এমন অবস্থা চলে আসছে মুন্সীগঞ্জে। এতে দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে প্রতিটি পরিবারই। গ্যাসর সংযোগ থাকার পরও স্বচ্ছল পরিবারের অনেকেই এলজিপি গ্যাস কিনে দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব করছে। গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও কোন সুবিধা পাওয়া যাচ্ছেনা। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে এলপি গ্যাস কিনতে হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। মানিকপুর এলাকার গৃহিনী আছমা বেগম বলেন, গ্যাসের প্রেসার এতই কম যে রাত্র আড়াইটায় গ্যাসের প্রেসার বাড়লে পরিবারের রান্না করতে হয়। সারারাতই জেগে থাকলে হয় রান্না করার জন্য। গ্যাসের বিল পরিশোধ করেও কোন সেবা পাচ্ছিনা। শহরের জমিদার পাড়ার বাসিন্দা পারভিন আক্তার একই অভিযোগ করে বলেন,রাত জেগে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। মালপাড়ার রুমা আক্তার বলেন, গ্যাসের সমস্যার কারনে এলপিজি গ্যাস কিনে এনেছি। তবে এগারশ’ টাকা দিয়ে একটি এলপি গ্যাস ১৫/২০ দিনেই শেষ হয়ে যায়। এদিকে গ্যাসের টাকাও পরিশোধ করছি। এমন অবস্থা প্রতিটি পরিবারেরই চলছে। এসব বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ তিতাস গ্যাস অফিসের ম্যানেজার মো. রেজাউল করিম জানান, গ্যাসের সমস্যা জাতীয় সমস্যা। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস উত্তোলন না হওয়ার কারনে এসব সমস্যা হচ্ছে। আর অবৈধ সংযোগের কোন তথ্য নেই বলে তিনি জানান। অবৈধ লাইনের কোন তথ্য এলাকার লোকজন দিচ্ছেনা বলে তিনি জানান। তার ধারনা মুন্সীগঞ্জে বর্তমানে কোন অবৈধ সংযোগ নেই।
×