ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাইব্রিড প্রযুক্তি পারে কৃষি খাতের চিত্র পাল্টে দিতে

প্রকাশিত: ০১:৪৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

হাইব্রিড প্রযুক্তি পারে কৃষি খাতের চিত্র পাল্টে দিতে

বিশেষ প্রতিনিধি॥ কৃষি খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি দেখে বিস্মিত হলেন বিশ্বের সর্ববৃহদ কৃষি ফার্ম সিনজেনটার চীফ অপারেটিং অফিসার দাভোর পিস্ক। দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসে মাঠ পর্যায় পরিদর্শন করে এসে তিনি বললেন, বাংলাদেশে কৃষি খাতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এটা মাঠে না গেলে বুঝার উপায় নেই। তবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে মাঠ পর্যায়ে কৃষি প্রযুক্তির বিস্তার ঘটাতে হবে। এজন কৃষকদের প্রশিক্ষতি করতে হবে। সোমবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে জনকণ্ঠসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামনে কৃষি খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ বদলে যাচ্ছে। ফলে পানির প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিই হবে বাংলাদেশের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে খাদ্য শস্যের ফলন বৃদ্ধির জন্য মি. দাভোর হাইব্রিড প্রযুক্তিকে উপযুক্ত মনে করেন। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য শস্যের ফলন বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। কিন্ত উন্নত দেশগুলোতে ফলন বৃদ্ধির সুযোগ কম। সে সব দেশে উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগে কারণে কৃষি ফলন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছেছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ফলন বৃদ্ধির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। কৃষি এই ফলন বৃদ্ধিধর জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে হাইব্রিড জাত ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এ জাত ব্যবহারে কৃষককে প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। বাজার সৃষ্টি করতে হবে হাইব্রিড ধানের। কেবলমাত্র উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড প্রযুক্তি পারে বাংলাদেশের কৃষি খাতের চিত্র পাল্টে দিতে।’ মি. দাভোর বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সব প্রযুক্তিই বাংলাদেশে বিদ্যমান। এগুলোকে কৃষকের দোড়গোড়ায় নিয়ে যেতে হবে। সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে কৃষককে প্রযুক্তিনির্ভর করতে হবে। কৃষির যান্ত্রিকীকরণ হলেই কৃষির ফলন বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি জমির আওতা বৃদ্ধির সুযোগ নেই। বরং নদী ভাঙ্গন ও শিল্পায়ানের কারণে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ফলন বৃদ্ধির দিকেই মনোযোগ দিতে হবে। চীনের বৃহত্তম সরকারি কৃষি সংস্থা কেম-চায়নার সঙ্গে সিনজেনটার একীভূতকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেম-চায়নার সঙ্গে সিনজেনটার একীভূতকরণ হলেও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ও কৌশলগত কোন পরিবর্তন হবে না। বরং সিনজেনটা আরও শক্তিশালী হবে এবং কৃষি খাতে সংস্থাটির বিনিয়োগ বাড়বে। এই একীভূতকরণে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের কোন পরিবর্তন ঘটবে না। সিনজেনটা বাংলাদেশ আয়োজিত এই প্রেসমিট অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনজেনটা আঞ্চলিক পরিচালক টিনা লোটন, সিনজেনটা ভারতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিপিন সোলাঙ্কি এবং সিনজেনটা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদুল হাসান। গোল্ডেন রাইস প্রসঙ্গে টিনা লোটন বলেন, গোল্ডেন রাইস উদ্ভাবনটি বর্তমানে বাণিজ্যিকীকরণের জন্য আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থার (ইরি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইরি এ বিষয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে।
×