ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বর্ণপদক অক্ষুণ্ন রাখার লড়াই বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

স্বর্ণপদক অক্ষুণ্ন রাখার লড়াই বাংলাদেশের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ শুরু হয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক আসর সাউথ এশিয়ান গেমস (এসএ)। প্রথম দিনই মাঠে গড়িয়েছে পুরুষ ফুটবলের প্রতিযোগিতা। এবার অবশ্য দুটি দল কমে গেছে। পাকিস্তান ফুটবল দল নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে আর আফগানিস্তান এসএ গেমস ফুটবলে অংশ নেবে না। সে কারণে উভয় গ্রুপে তিনটি করে মাত্র ৬ দলের লড়াই। পরিসর কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইটাও কিছুটা সহজতরই হয়ে গেছে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচ জিততে পারলে শেষ চারে ওঠার পথ সুগম হবে যে কোন দলের জন্য। আগামীকাল নিজেদের প্রথম ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দুর্বলতর দল ভুটানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ অলিম্পিক ফুটবল দলের। দলের কোচ গঞ্জালো সানচেজ মরেনো আশাবাদী দারুণভাবে শুরুর। এবার এ স্প্যানিশ কোচের জন্য চ্যালেঞ্জ সর্বশেষ এসএ গেমসে জেতা স্বণ পদক অক্ষুণœ রাখার। গঞ্জালো জানিয়েছেন অনুশীলন ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলেও সম্প্রতিই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ খেলে বেশ ভাল অবস্থাতেই আছে তার শিষ্যরা। আর নেপালের কাছে প্রথম ম্যাচে ভুটান হেরে যাওয়ায় ন্যূনতম ব্যবধানে জিতলেই ‘বি’ গ্রুপ থেকে শেষ চার নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১০ সালে আবার এসএ গেমস ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশের পুরুষ দল। ফাইনালে আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল। এর মাঝে দুটি এসএ গেমস চলে গিয়েছিল। কিন্তু দেশের মাটিতে দারুণ কিছু সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ফুটবলেও শ্রেষ্ঠত্ব পায়। এরপর আর এসএ গেমস অনুষ্ঠিত হয়নি। এবার ভারতে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়াযজ্ঞ চলছে। বাংলাদেশ অলিম্পিক ফুটবল দল ইতোমধ্যেই গুয়াহাটিতে পৌঁছেছে। এবার মিশনে নামার অপেক্ষা। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ ভুটান। অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভুটান প্রথম ম্যাচেই নেপালের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে বেকায়দায় পড়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ জিতলেই সেমিতে উঠবে। আর স্বর্ণ পদক ধরে রাখার মিশনটাও এগিয়ে যাবে এক ধাপ। এবার গঞ্জালোর শিষ্যরা গত মাসে বাংলাদেশে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবলে অংশ নিয়েছে। কোন ম্যাচ জিততে না পারলেও অলিম্পিক দলটি দারুণ খেলা উপহার দিয়ে নজর কেড়েছে। এমনকি গ্রুপ পর্বে শক্তিশালী বাহরাইনের বিপক্ষে নিশ্চিত জয় তুলে নেয়ার ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র করেছে। এ কারণে এবারও দলটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন সবাই। বাংলাদেশ অলিম্পিক দলে আছেন জাতীয় দলের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়। তারা অলিম্পিক দলের হয়ে শুধু বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপেই খেলেননি, পাশাপাশি শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবল ও সাফ সুজুকি কাপ খেলেছেন। মিডফিল্ড শক্ত হয়েছে জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় জামাল ভূঁইয়াকে দলে নেয়ার কারণে। এছাড়া অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রেজাউল করিম আছেন নেতৃত্বে। সবমিলিয়ে জাতীয় দলের ৬ ফুটবলার আছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক দলে। তাই স্বপ্নটা দেখছেন কোচ গঞ্জালো নিজেও। কিন্তু তিনি মনে করেন টানা খেলার মধ্যে থাকার পর কিছুদিন ম্যাচ থেকে বাইরে বিশ্রাম নিয়ে নিজেদের আরও ভালভাবে প্রস্তুত করতে পেরেছে খেলোয়াড়রা। আর অনুশীলন তো ছিলই। মানসিকভাবেও তাই এখন বেশ চাঙ্গা ফুটবলাররা। অবশ্য কোন অনুশীলন ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি পৌঁছে তিনদিন অনুশীলন করেই নিজেদের প্রস্তুত করতে হয়েছে। এবার পরিস্থিতিটা বেশ সহজ হয়ে গেছে। ভুটানকে হারালেই সেমিতে বাংলাদেশ। অবশ্য আগেই গঞ্জালো এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ম্যাচ বাই ম্যাচ জেতা। প্রধান লক্ষ্য ভুটানকে হারানো। এর পরের ম্যাচটা দেখা যাক কি হয়।’ ভারতে গিয়ে কোন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারলে চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার সব প্রস্তুতিই ভালভাবে সম্পন্ন হয়ে যেত। কিন্তু দলের অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে বলে দাবি করেছেন গঞ্জালো। বিশেষ করে তিনি ডিফেন্স ও মিডফিল্ড নিয়ে দারুণ সন্তুষ্ট। এবার কথার সঙ্গে কাজের মিল ঘটানোর অপেক্ষা। আগামীকাল ভুটানের বিপক্ষে জিতলে শুধু সেমিই নিশ্চিত হবে না একই সঙ্গে দলের ওপর থেকেও চাপটা কমে যাবে। তখন এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সেমিফাইনাল নিয়ে পরিকল্পনা করা যাবে। আগামীকাল বিকেল ৫টায় নেহরু স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। ভুটান যে পরিষ্কারভাবেই অনেক দুর্বলতর দল সেটা পরিষ্কার হয়ে গেছে রবিবার প্রথম ম্যাচেই। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ জিতে দারুণ ছন্দে থাকা নেপালের কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে তারা। আর সে কারণেই দারুণ আত্মবিশ্বাসী গঞ্জালো ও রেজাউল করিমরা।
×