ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইইবির কনভেনশনে প্রধানমন্ত্রী

অহেতুক খরচ না বাড়িয়ে টেকসই, যুগোপযোগী পরিকল্পনা তৈরি করুন

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অহেতুক খরচ না বাড়িয়ে টেকসই, যুগোপযোগী পরিকল্পনা তৈরি করুন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অহেতুক খরচ না বাড়িয়ে টেকসই, সাশ্রয়ী ও যুগোপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন কাজ পরিকল্পিতভাবে হওয়া প্রয়োজন। পরিকল্পনার সময় খরচ বাড়ানোর কথা ভাববেন না। অহেতুক খরচ না বাড়িয়ে টেকসই, সাশ্রয়ী ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা নিতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকা- চালানোর সময় পরিবেশের ক্ষতি যেন না হয়, সে দিকেও সবার নজর রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, স্বাধীনতাই চায়নি- তারা দেশ ও মানুষের অগ্রযাত্রা চায় না। এ কারণেই বিএনপি-জামায়াত জোটের ৫ বছর এবং পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর মিলিয়ে গত সাত বছরে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের অবহেলিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি গতিশীল ও শক্তিশালী করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে যা কিছু করার দরকার- সরকার তা করবে। আমাদের দেশকে আমরাই উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলব। শনিবার রাজধানীর রমনার আইইবি প্রাঙ্গণে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) ৫৬তম কনভেনশনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রকৌশলীদের মেধা-মনন ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন, সবাই মিলে এ দেশকে যেন উন্নত ও সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারি- সেভাবেই আমরা কাজ করি। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলি। নিজস্ব কনসালট্যান্সির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশকে আমরা চিনি। এ দেশের মাঠ-ঘাট, নদী-নালা ও প্রকৃতি- সবই আমাদের চেনা। এ দেশের জন্য কোনটা মঙ্গলজনক- সেটা আমরাই ভাল বুঝি। বাইরে থেকে এসে কে তা বুঝবে? কাজেই এ দেশকে এগিয়ে নিতে যা প্রয়োজন, সেটিই আমরা করব। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি অর্জনের পেছনে রয়েছে ত্যাগ। এ ত্যাগকে শ্রদ্ধা জানাই। দেশের সমৃদ্ধিতে এ ত্যাগের ইতিহাস আমাদের পথ দেখাবে। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করতে চাই, সমৃদ্ধ করতে চাই। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে পারব ইনশা আল্লাহ। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করেছি। পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় আমাদের বদনাম দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। অর্থ বরাদ্দ না দিয়েই অর্থ লোপাটের দুর্নাম দেয়ার চেষ্টা হয়। এর সঙ্গে যেহেতু দেশের ভাবমূর্তি জড়িত তাই আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই পদ্মা সেতুর কাজ নিজেদের অর্থায়নে শুরু করেছি। আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা চাইলে যে কোন অসাধ্যই সাধন করতে পারি। কেউ দেশের বদনাম করুক, আমরা সেটা চাই না। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আইইবি স্বর্ণপদক ২০১৫ প্রদান করেন। এবারে প্রকৌশলী শিল্পে উৎকর্ষ সাধনের স্বীকৃতিস্বরূপ আইইবি স্বর্ণপদক-২০১৫ পেয়েছেন যৌথভাবে প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. আ ম ম শফিউল্লাহ এবং আইইবির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ নূরুল হুদা। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ কবির আহমেদ ভূঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ চৌধুরী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর। অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের নতুন ১৫ তলা ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দফতর ও বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তা, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশে উন্নীত করতে তাঁর সরকারের লক্ষ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশ শোষিত ও বঞ্চিত ছিল। আমরা সে জায়গা থেকে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছি। বিশ^ব্যাপী মন্দা সত্ত্বেও দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এটি সহজ কথা নয়। আমাদের লক্ষ্য প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশে উন্নীত করা। এটি করতে হলে যেসব উন্নয়ন কাজ হাতে নিয়েছি, সেগুলো এগিয়ে নিতে হবে। যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। নির্ধারিত সময়েই তা অর্জন করব। প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় কোন কাজে বেশি বেশি করার আদিখ্যেতা না দেখাতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই আদিখ্যেতাটা ভাল না যে প্রধানমন্ত্রীর জায়গায় বেশি করে ঢেলে দাও। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের এক নম্বর সদস্য। তা ছাড়া আমি একজন এমপিও। তাই নিজের এলাকায় আমার দায়িত্ব আমি পালন করি। সেখানে আমাকে খুশি করতে আলাদা করে কোন প্রকল্প নেয়ার দরকার নেই। নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এক সময় কিছুই পেতাম না। সারাজীবন বঞ্চিত ছিলাম। এখন সবাই দেয়ার জন্য ব্যস্ত থাকেন। এখন তাই পাওয়ার যন্ত্রণায় আছি। এই পাওয়ার ধাক্কা সামাল দিতে আমার কষ্ট হচ্ছে। আমি সবাইকে মানা করছি, এত লাগবে না। যেটুকু লাগবে, সেটুকু করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এলাকায় বেশি বেশি করে দেয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের জলাভূমিতে সøুইস গেট নির্মাণে পরিকল্পনাহীনতার ‘তিক্ত অভিজ্ঞতার’ বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, বেশি বেশি করতে গিয়ে সবকিছু নষ্ট করে দেবেন না দয়া করে। আমার এলাকার পরিবেশটা যেন নষ্ট না হয়। তিনি বলেন, আমার এলাকা, বিল, হাওড়-বাঁওড় এলাকা। সেখানে একটা বিল বা খালের পাড়ে বাঁধ কত ফুট উঁচু লাগে? চার, পাঁচ ফুট বা তিন ফুট উঁচু হলেই তো যথেষ্ট। সেখানে তো সাত ফুট, আট ফুট বা চৌদ্দ ফুট উঁচু বাঁধের কোন প্রয়োজন হয় না। অহেতুক এই খরচ কেন? নিজের শৈশব স্মৃতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যে খালটা যুগ যুগ ধরে আমি দেখছি, জোয়ার-ভাটা হয়। সেই খালের দুই মাথায় সøুইস গেট লাগানোর কোন যৌক্তিকতা নেই। ওই খাল তো কখনও কোন ক্ষতি করে না। অথচ হঠাৎ দেখলাম সেখানে বিরাট প্রকল্প নেয়া হলো। এই ধরনের পরিকল্পনা কেন নেয়া হবে? এই ধরনের পরিকল্পনা পরিহার করতে হবে। সারাদেশে এ পর্যন্ত কতগুলো সøুইস গেট ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে এবং তার ফলাফলটা কী- সে মূল্যায়ন করতে প্রকৌশলীদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ওই বেড়িবাঁধ দিয়ে কতটুকু আমি ধান উঠাচ্ছি আর বিনিময়ে ওটার মেরামতে প্রতিবছর কত খরচ হচ্ছে এবং ওইটার কারণে অন্য জায়গায় জলাবদ্ধতা, জমি নষ্ট এবং নদী ভাঙ্গন সৃষ্টি হচ্ছে কিনা- সবকিছু বিবেচনায় নিতে হবে। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী প্রকৌশলীদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা সবাই দাবি করেন, আমারও কিছু দাবি আছে। সেই দাবিটি হচ্ছে দেশের জন্য কাজ করুন। দেশের উন্নয়ন এবং উৎপাদন কর্মকা-ে প্রকৌশলীরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘর-বাড়ি, মিল-কারখানাÑ সবকিছুর নির্মাণ ও স্থাপনের সঙ্গে আপনারা সম্পৃক্ত। পাশাপাশি, জ্বালানি এবং বিদ্যুত উৎপাদন ও বিতরণ, পানি সরবরাহের মতো সেবাধর্মী সকল কাজও আপনারাই সম্পাদন করে থাকেন। প্রকৌশলীদের কর্মদক্ষতা এবং আন্তরিকতার ওপর নির্ভর করে দেশ দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্প স্থাপনা বা আবাসন করতে গিয়ে প্রতিটি এলাকায় যেন জলাধার থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরিকল্পনা করার সময় প্রতিটি শিল্প-কারখানা বা হাসপাতালে বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং হাঁটাচলা বা খেলাধুলার জন্য প্রতিটি এলাকায় খোলা জায়গাও রাখতে হবে। সোলার প্যানেল এমনভাবে বসাতে হবে যাতে তার নিচে কৃষিকাজ চালানো যায়। তিনি বলেন, যে কোন প্রকল্প আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও পরিবেশসম্মতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমি চাচ্ছি আমাদের উন্নয়ন কাজটা খুব প্লানডওয়েতে হওয়া উচিত। বিদ্যুত, রাস্তা, পয়োনিষ্কাশন সবকিছু এমন পরিকল্পিতভাবে করা উচিত যেন জমি নষ্ট না হয়, আর অল্প খরচে যেন করা যায়। সাশ্রয়ী ও পরিকল্পিতভাবে অধিক সেবা মানুষকে দিতে পারব সেভাবেই পরিকল্পনা করবেন- এটাই আপনাদের কাছে আমার দাবি থাকল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গড়তে আমরা একটি বিজ্ঞানভিত্তিক যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। এতে বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এক সময় বাংলাদেশ শোষিত ছিল, বঞ্চিত ছিল। আমরা সে স্থান থেকে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে এসেছি। ভারত-নেপাল-ভুটান-বাংলাদেশ সমন্বিত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সড়ক যোগাযোগ ছাড়াও মিয়ানমার, চীন, নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ নিয়ে ইকোনমিক কোরিডর সৃষ্টি করেছি। আমরা কাজ করে যাচ্ছি দেশের অর্থনীতিটা যেন আরও গতিশীল হয় ও শক্তিশালী হয়। প্রকৌশলীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমিও তো আপনাদেরই একজন। কারণ, আমিও একজন ইঞ্জিনিয়ারের মা। কাজেই আমার কাছে কোন দাবি করতে হবে না। প্রয়োজন ও দেশের মানুষের চাহিদা অনুসারে সব পূরণ করব। তিনি বলেন, প্রত্যেক ক্যাডারকে গ্রেড-১ এর মর্যাদা দিয়েছি। গ্রেড-২তে অনেক পদ সৃষ্টি করেছি। গ্রেড-২তে ৩৯টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। শতভাগের ওপর বেতন বৃদ্ধি, ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধি কেউ কী করতে পেরেছে? দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও ভূমিকম্পের কথা মাথায় রেখে স্থাপনা গড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খোলামেলা জায়গা থাকলে বাচ্চারা খেলাধুলা করতে পারে পাশাপাশি জনসাধারণও নিশ্বাস ফেলার জায়গা পায়। নদী ড্রেজিং এবং বড় স্থাপনার পাশে জলাধার রাখারও প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরের দুঃসহ যানজট নিরসনের জন্য আমরা মেট্রোরেল প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এয়ারপোর্ট থেকে মাওয়া পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ের কাজ এগিয়ে চলছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহসহ আরও কয়েকটি মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হয়েছে। চালু করা হয়েছে ঢাকা বাইপাস সড়ক। যানজট নিরসনে বনানী ওভার পাস, মিরপুর-এয়ারপোর্ট, কুড়িল-বিশ্বরোড এবং মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার এবং টঙ্গীতে আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু, হাতিরঝিল প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। তিনি বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার তাঁর সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
×