ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জানালেন অর্থমন্ত্রী

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে তহবিল গঠন করা হবে

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে তহবিল গঠন করা হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে সরকারী উদ্যোগে তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও টেকসই হবে। তিনি আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস সঠিক নয়, চলতি অর্থবছরে অবশ্যই ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে পৃথক দুটি সভায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘প্রস্তাবিত জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল’ সংক্রান্ত একটি কর্মশালা হয়। ২২টি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুহিত। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে টেকসই বলা যায় না। টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য দক্ষ মানবসম্পদ দরকার। এ জন্য সরকারী উদ্যোগ থাকতে হবে। এ রকম একটি উদ্যোগ (মানবসম্পদ উন্নয়নে তহবিল গঠন) ১৯৮১ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামসুল হক নিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেটি বন্ধ হয়ে যায়, কেন বন্ধ হয়েছিল তা কেউ জানে না। প্রায় ৪০ বছর পরে এসে আবারও সেই তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। অবকাঠমো খাতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক ঘাটতি আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত ৫-৬ বছর ধরে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছি। সেটি এখন অনেকটা কমে আসছে। এখন আমাদের পরের স্তরের কাজ করতে হবে। অবকাঠামোর পরেই মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের বাজেট বরাদ্দ, উন্নয়ন সহযোগীদের অনুদান, দেশের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সিএসআর তহবিলের অনুদান, রিক্রুটিং এজেন্সির চাঁদা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের অনুদান দিয়ে এ তহবিল গঠন করা হবে। এ ধরনের তহবিল ভারত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে রয়েছে বলে জানান মুহিত। এ ছাড়া বৃস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহারে দেশয় চাহিদার গুরুত্ব সংক্রান্ত অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আইএমএফের পূর্বাভাস সঠিক নয়, চলতি অর্থবছরে অবশ্যই ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। ওয়েট এ্যান্ড সি। আইএমএফ সব সময় বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য দেয়। তারা কখনও কম ছাড়া বেশি পূর্বাভাস দেয় না। এর পরই অস্থান থাকে বিশ্বব্যাংকের আর তার চেয়ে একটু বেশি পূর্বাভাস দেয় এডিবি। সুতরাং তাদের কোনটিই সঠিক হবে না। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন ইউএসএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়ানিনা জেরুজালেস্কি ও ইআরডির মনোয়ার ইসলাম। এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব জিডিপিতে পড়েনি বলেই চূড়ান্ত হিসেবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তিনি বলেন আমার গর্ব হচ্ছে আগে জাতীয় বাজেট হতো শতভাগ বৈদেশিক সহায়তায় আর এখন হচ্ছে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৫২ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৭০ শতাংশের মধ্যে। কিন্তু তাই বলে দাতাদের ফান্ডের প্রয়োজন নেই তা নয়। আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা দারিদ্র্য নিরসনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তার জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের ফান্ডের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে চায়নি। ওই সময়ে বিশ্বব্যাংক প্রধান ম্যাকনামারা বলেছিলেন বাংলাদেশ টিকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। তারা ভেবে ছিল বাংলাদেশ টিকতে পারবে না। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সেই ভুল ধারণা ভেঙ্গে যায়। তারা ভুল বুঝে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি পর্যায়ে খাতভিত্তিক সহায়তা নিয়ে ভাবতে হয়। আমরা সেই ভাবনা ভেবে অগ্রসর হচ্ছি। যেমন প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে পিইডিপি-৩ কর্মসূচী বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে সুফল এসেছে। উন্নয়ন সহযোগীরাও সহায়তা দিচ্ছে। এর পরই নেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতের কর্মসূচী। সেটিও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এগুলোর সুফর পাওয়া যাচ্ছে।
×