ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চ্যাপেল-হ্যাডলি ট্রফি

অস্ট্রেলিয়াকে লজ্জায় ডুবিয়ে শুরু কিউইদের

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অস্ট্রেলিয়াকে লজ্জায় ডুবিয়ে শুরু কিউইদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়াকে রীতিমতো লজ্জায় ডুবিয়ে ‘চ্যাপেল-হ্যাডলি’ ট্রফিতে দুরন্ত সূচনা করল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের বদলা নিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে চ্যাম্পিয়নদের ১৫৯ রানের বড় ব্যবধানে হারাল কিউইরা। তিন ওয়ানডের সিরিজে ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের দল এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। অকল্যান্ডে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ২৪.২ ওভারে ১৪৮ রানে গুটিয়ে যায় স্টিভেন স্মিথের অস্ট্রেলিয়া! যা নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে অসিদের ‘কম ওভারে’ অলআউট হওয়ার নতুন রেকর্ড। এর আগে ১৯৭৭ সালে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫.২ ওভারে অলআউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ৯০ রানের দুরন্ত ইনিংস উপহার দিয়ে ম্যাচসেরা ওপেনার মার্টিন গাপটিল। বিশ্বকাপের ফাইনালের পর রঙ্গিন পোশাকে এটি ছিল দু-দলের প্রথম দেখা। স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় ‘কী মধুর প্রতিশোধ!’ যদিও বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ার শোধ আরেকটি ফাইনাল ছাড়া হয় না। তবু কিউইদের আনন্দটা কম নয়। কারণ পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়াকে আজ তারা এমন এক হারের লজ্জা দিয়েছে, এর আগে মাত্র তিনবার যার মুখোমুখি হয়েছিল ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা এই দলটি। ওয়ানডেতে চতুর্থবারের মতো ১৫০-এর বেশি রানের ব্যবধানে হারল অস্ট্রেলিয়া। সবচেয়ে বড় কথা, এই প্রথম কোন ওয়ানডেতে ২৫ ওভার পুরো হওয়ার আগেই অলআউটের লজ্জাতেও পড়ল কদিন আগে ভারতকে ৪-১ সিরিজ হারানো অসিরা! গত বছর মার্চে মেলবোর্নে ফাইনালের আগে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেও মুখোমুখি হয়েছিল দু-দল। চ্যাপেল-হ্যাডলি ট্রফিতে কাল সেই একই ভেন্যু অকল্যান্ডে দুর্দান্ত এক সাফল্য তুলে নিল স্বাগতিকরা। টসে হেরে ব্যাটিং পাওয়া নিউজিল্যান্ডের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। ওপেনিং জুটিতে ১০ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৭৯ রান যোগ করেন গাপটিল ও ম্যাককুলাম। ২৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করে আউট হন জীবনের শেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামা অধিনায়ক ম্যাককুলাম। ৭৬ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৯০ রানের ইনিংস খেলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হন ম্যাচের ‘নায়ক’ গাপটিল। ৬৭ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৬১ রানের কার্যকর ইনিংস উপহার দেন হেনরি নিকোলস। মিচেল স্যান্টনার ৩৫, গ্র্যান্ট ইলিয়টের ২১ উল্লেখ্য। সফরকারীদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন জস হ্যাজলউড, জেমস ফকনার ও মিচেল মার্শ। জবাবে এক পর্যায়ে ৯ ওভারে ৪১ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া! সপ্তম উইকেট জুটিতে ম্যাথু ওয়েড আর জেমস ফকনার ৭৯ রানের জুটিটা না গড়লে কী যে হতো। অসিদের মনে হয়ত ১৯৮৬ সালের এ্যাডিলেডের স্মৃতি ফিরে আসছিল। নিউজিল্যান্ডের ২৭৬ এর জবাবে যে ম্যাচে ৭০ রানে অলআউট হয়ে ২০৬ রানে হেরেছিল অসিরা। যেটি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে একমাত্র ২০০ রানের ব্যবধানে হেরে যাওয়া ওয়ানডে ম্যাচ। ট্রেন্ট বোল্ট- ম্যাট হেনরির পেস তোপে অস্ট্রেলিয়া ৯ ওভারেই যখন ৬ উইকেট হারায়, তখনও ২৬৬ রান দূরে স্মিথের দল। সাত আর আট নম্বরে নামা ওয়েডের ৩৭, আর ফকনারের ৩৬ রানের ইনিংস দুটি সফরকারীদের আরও বড় লজ্জা থেকে বাঁচায়। অবশ্য কোরি এ্যান্ডাসন ও এ্যাাডাম মিলনে পরপর দুই ওভারে এই দুজনকে ফিরিয়ে দেয়ার পর আর কেউ ?দাঁড়াতে পারেনি। খেলতে পারেনি ৫০ ওভারের অর্ধেকটাও। এমন কি ২৫ ওভারের চার বল বাকি থাকতেই অলআউট অসিরা। ওয়ানডে ইতিহাসে এই প্রথম কোন ইনিংসে মাত্র ১৪৬ বল (২৪.২ ওভার) খেলে অলআউট অস্ট্রেলিয়া! এর আগে সেই ১৯৭৭ সালে সর্বশেষ ১৫২ বলে (২৫.২ ওভার) অলআউট হয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার এটি দ্বিতীয় বড় ব্যবধানে হার। ওয়েলিংটনে দ্বিতীয় ম্যাচ শনিবার।
×