ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল সুপার স্পেশালাইজড করাসহ ৯ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল সুপার স্পেশালাইজড করাসহ ৯ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড করাসহ ৯ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৪ হাজার ৮৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৭৩ কোটি ৯৩ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ২০৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। রাজধানীর শাহবাগে দুটি আন্ডারপাস নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি বারডেম থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল পর্যন্ত, অন্যটি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল থেকে জাদুঘর পর্যন্ত। একনেক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোগীদের সহজেই আনানেয়া করতে দুটি আন্ডারপাস নির্মাণ জরুরী। এছাড়া তিনি নার্সিং ট্রেনিং বৃদ্ধি করে নার্সের সংখ্যা বাড়ানো, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইনস্টিটিটিউট এর আধুনিকায়নে প্রকল্প গ্রহণ, সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং যেখানেই সম্ভাবনা রয়েছে সেখানেই গ্যাসের অনুসন্ধানে ব্যাপক তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব তারিক উল ইসলাম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কানিজ ফাতেমা এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম, আইএমইডি সচিব শহিদ উল্লা খন্দকার, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এসএম গোলাম ফারুক প্রমুখ। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেছেন, ভূমিকম্পের ভয়াবহতার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে ফায়ারা সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবন রক্ষার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সরকারী অনেক ভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো রেট্রোফিটিংয়ের মাধ্যমে ভূমিকম্পসহনীয় করে গড়ে তোলা যায়, যা পুনঃনির্মাণ করলে ব্যয় ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের চেয়ে অনেক কম। এই বিবেচনায় সরকারী জনগুরুত্বপূর্ণ ভবনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনগুলোকে এ প্রকল্পের আওতায় রেট্রোফিটিং করার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রকল্পের আওতায় রাজধানী ও এর আশপাশে যেসব ফায়ার স্টেশন রেট্রোফিটিং করা হবে সেগুলো হচ্ছে, খিলগাঁও ফায়ার স্টেশন, মিরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতর, তেজগাঁও ফায়ার স্টেশন, ডেমরা ফায়ার স্টেশন, কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশন, লালবাগ স্টেশন, সাভার ফায়ার স্টেশন, বারিধারা ফায়ার স্টেশন, ধামরাই ফায়ার স্টেশন এবং কেরানীগঞ্জ ফায়ার স্টেশন। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হসপিটাল প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৬৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। টাঙ্গাইলে একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালকে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ২৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। তিতাস গ্যাস ফিল্ডে গ্যাস উদগীরণ নিয়ন্ত্রণ এবং এ ফিল্ডের মূল্যায়ন ও উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ৯০৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ৬১৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, এর ব্যয় ২৫৪ কোটি চার লাখ টাকা। নগরাঞ্চলের ভবন সুরক্ষা প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৭১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। জাতীয় স্যানিটেশন প্রকল্প, এর ব্যয় ১৪৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ফরিদপুর (বদরপুর) সালথা-সোনাপুর-মুকসুদপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ১০৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের বিস্তারিত হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টি সুপার স্পেশালাইজড হলে জনগণের চাহিদা পূরণে স্বাস্থ্য সেবার আওতা বৃদ্ধিপাবে, মেডিক্যাল কেয়ার ও ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের মাধ্যমে সেন্টার বেইজড হেলথ কেয়ার ডেলিভারি সিস্টেম প্রতিষ্ঠা, বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশকের উন্নতি, দেশেই জটিল রোগের উন্নত সেবা নিশ্চিত করে বিদেশ নির্ভরতা কমানো, উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা খাতের পেশাজীবীদের দক্ষতা বাড়ানো, দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্লিনিক্যাল রিসার্চের মাধ্যমে ইভিডেন্স বেইজড মেডিসিন চালু এবং কার্যকর রেফারেল লিংকেজ তৈরি করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের আওতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে দুটি বেইজমেন্টসহ ১৩ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট একটি ১৩তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে হাসপাতালের জন্য আধুনিক মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র সংগ্রহ করা হবে।
×