ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পোল্ট্রি খাতে বিনিয়োগ হবে ৫০ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০২:২৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫

পোল্ট্রি খাতে বিনিয়োগ হবে ৫০ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে দৈনিক প্রায় সাড়ে ৪ কোটি ডিম এবং প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন মুরগির মাংসের প্রয়োজন হবে। বিনিয়োগ দরকার হবে প্রায় ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা। এই চাহিদা কিংবা বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হলে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা বাড়াতে হবে, সরকারকে পোল্ট্রিখাতে আরও বেশি নজর দিতে হবে। বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়নে অনুষ্ঠিত ২০২১ সালের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের চ্যালেঞ্জ : সরকারি-বেসরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ পোল্ট্রি শিল্প সমন্বয় কমিটি (বিপিআইসিসি)। গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর রিসার্চ ফেলো ড. সুবীর কান্তি বৈরাগী। বিপিআইসিসি’র আহ্বায়ক মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন,মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। বক্তব্য রাখেন বিপিআইসিসি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক শামসুল আরেফিন খালেদ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেন ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে না আসলে পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ সম্ভব হবে না। ১২ থেকে ১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে শিল্প করা কঠিন। ডিম, দুধ, মাছ ও মাংস সকল বয়সের মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুর জন্য খুবই দরকারি খাদ্য। তবে ২০২১ সাল নাগাদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে পোল্ট্রিখাত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। সেক্ষেত্রে পুষ্টি-স্বল্পতা কিংবা অপুষ্টি দূর করতে হলে ডিম ও মাংস খাওয়ার পরিমান অনেক বাড়াতে হবে। পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে প্রাণিজ আমিষের যোগান নিশ্চিত করতে হবে। এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, পোল্ট্রি খাত অবশ্যই বীমার আওতায় আনতে হবে। কেননা একটি স্থানে বার্ড ফ্লু হলে দেখা যায় পুরো এলাকার ভাল মুরগীও মেরে ফেলা হয়, এতে খামারীরা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ভোক্তার কাছে আকর্ষনীয় মাংস হচ্ছে পোল্ট্রি। কেননা এর দামও কম এবং স্বাস্থ্যসম্মত মাংস পাওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে পুষ্টি ও বিনিয়োগ দু’টিই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সাল নাগাদ পোল্ট্রি শিল্পে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ বাড়াতে এবং পোল্ট্রি শিল্পের অগ্রগতিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে এফবিসিসিআই। বিপিআইসিসি’র আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন,একটি লাগসই পোল্ট্রি শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে জাতীয় কৌশলপত্র ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করাই আজকের কর্মশালার মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, পোল্ট্রি শিল্পে বিনিয়োগ ২৫ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করতে হবে। এজন্য সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। শিগগিরই হালাল মাংস রপ্তানীর জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাই রপ্তানীর ক্ষেত্রে বাঁধাগুলো দূর করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট মাংসের চাহিদার ৪০-৪৫ শতাংশই আসছে পোল্ট্রি শিল্প থেকে। তাছাড়া বর্তমান চাহিদার শতভাগ ডিম, মুরগি, বাচ্চা এবং ফিড এখন দেশীয়ভাবেই উৎপাদিত হচ্ছে। মাংস হচ্ছে ‘হাইলি নিউট্রিসাস ফুড’ এবং সমকালের বিজ্ঞানীদের মতে এটি বিশেষ করে এইচআইভি ইনফেকটেড কমিউনিটি’র জন্য একটি দরকারি খাদ্য। ২০১৬’র মার্চ মাসে পোল্ট্রি মিডিয়া এওয়ার্ড প্রদানের ঘোষণা দেন তিনি।
×