ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নোয়াখালীর তিন পৌরসভায় নৌকা-শীষে লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫

নোয়াখালীর তিন পৌরসভায়  নৌকা-শীষে লড়াই

গিয়াস উদ্দিন ফরহাদ, নোয়াখালী ॥ পৌর নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে নোয়াখালীর চার পৌরসভায় প্রচারও তত জমে উঠছে। প্রচার এখন আর মাইকিং, পোস্টার-লিফলেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। বিভিন্ন পৌরসভার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ার কারণে এবারের নির্বাচনী লড়াই প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মর্যাদার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয় নির্বাচনী মাঠে। পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে গভীর রাত অবধি প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দোরগোড়ায়। জেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বেগমগঞ্জের চৌমুহনী, কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট, চাটখিল ও হাতিয়া। চারটি পৌরসভার মধ্যে একমাত্র চাটখিল ছাড়া বাকি তিনটি পৌরসভা আওয়ামী লীগের দখলে। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চায় সবগুলো পৌরসভায় দলীয় প্রার্র্থীর বিজয়। আর বিএনপি চায় ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের মাধ্যমে তাদের হারানো আসন ফিরে পেতে। চাটখিল পৌরসভায় মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ছয় প্রার্থী। একজনের মনোনয়পত্র বাতিল হওয়ার পর প্রার্থী থাকে পাঁচজন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বেলায়েত হোসেন ও তার স্ত্রী ফজিলাতুন নেছা নির্ধারিত সমেয়র আগেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। বাকি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ উল্লাহ পাটোয়ারীসহ তিনজন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন মেয়র পদে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ও জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে এ পৌরসভার একমাত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ উল্লাহ পাটোয়ারী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পথে। এই পৌরসভায় বর্তমানে ভোটযুদ্ধ চলছে সংরক্ষিত নারী আসন ও সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মধ্যে। এরমধ্যে সংরক্ষিত নারীদের তিনটি আসনে ৮ জন আর সাধারণ আসনের ৯টি ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলার প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী পৌরসভায় মেয়র পদে লড়ছেন তিন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন ফয়সল, বিএনপির প্রার্থী পৌর বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্র্থী মোঃ জাকির হোসেন। এই পৌরসভায় সংরক্ষিত নারীদের তিনটি আসনে ১৬ জন প্রার্থী আর সাধারণ সদস্যের ৯টি আসনে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এই পৌরসভায় মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা। কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে মেয়র পদে লড়ছেন চারজন। তারা হলেনÑ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, বিএনপির সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরী, জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি স্বতন্ত্র মোঃ মোশারফ হোসাইন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মোকাররম বিল্লাহ। মেয়র পদে এই পৌরসভায় জামায়াত স্বতন্ত্র নির্বাচন করায় এই পৌরসভায় ভোটের রাজনীতিতে বেশ পিছিয়ে পড়েছে বিএনপি। আর সুবিধাজনক অবস্থানে আছে আওয়ামী লীগ। অপরদিকে হাতিয়া পৌরসভায় মেয়র পদে লড়ছেন ছয় প্রার্থী। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এখানে বর্তমান মেয়র একেএম ইউছুফ আলী। তার ছেলে ইলিয়াছ উদ্দিন এখানে প্রার্থী হয়েছে তার বাবার ডেমি হিসেবে। তিনি লড়ছেন মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট মোঃ সাইফ উদ্দিন আহম্মেদ প্রার্থী হয়েছেন বিদ্রোহী হিসেবে। তিনি লড়ছেন জগ প্রতীক নিয়ে। আবার তিনি ডেমি প্রার্র্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন তার ছোট ভাই নেওয়াজ উদ্দিন (ক্যারমবোর্ড) ও চাচাত ভাই মনছুর উল্লাকে (নারকেল গাছ)। এই পৌরসভায় বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবদুর রহিম।
×