ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন আদলে আসছে জামায়াত- মূল কাজ হবে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫

নতুন আদলে আসছে জামায়াত- মূল কাজ হবে হত্যা

গাফফার খান চৌধুরী ॥ নতুন আদলে আসছে জামায়াতে ইসলামী। তাতে যুদ্ধাপরাধীদের সরাসরি কোন পদ-পদবী রাখা হচ্ছে না। যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নতুন নামে আসবে। অন্যথায় পুরনো নামেই তাদের রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালিত হবে। যদিও আগের নিয়মানুযায়ী প্রকাশ্য ও আন্ডারগ্রাউন্ড দুই প্ল্যাটফর্মেই তাদের তৎপরতা থাকছে। আন্ডারগ্রাউন্ড প্ল্যাটফর্মটির প্রথম ও প্রধান টার্গেট শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, শিক্ষাবিদকে হত্যা করা। দেশে জঙ্গীবাদের ভয়াবহ বিস্তার ঘটার অপপ্রচার চালিয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপের পথ সুগম করে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে চিরতরে মাইনাস করে দেয়া। গাবতলীতে পুলিশ কর্মকর্তাকে চেকপোস্টে ছুরিকাঘাতে হত্যার সূত্র ধরে গ্রেফতারকৃত ছাত্রশিবিরের সাবেক দুই সভাপতিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী টানা তিন মাসের হরতাল-অবরোধ আর কয়েকজন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকরকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের চোরাগোপ্তা পেট্রোলবোমা হামলায় শিশু, নারী, পুলিশ, নিরীহ পথচারীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা, ব্লগার ও লেখক হত্যা এবং বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদদের হত্যার হুমকির ঘটনার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। এসব ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা, পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা, জামায়াত-শিবিরের প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারী নজরদারি ও যুদ্ধাপরাধীদের সহায়-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নেয়ার জোরালো দাবি উঠেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই জামায়াত-শিবিরের মদদে চলতি বছরের ২২ অক্টোবর রাজধানীর গাবতলী-আমিনবাজার ব্রিজের ঢালে চেকপোস্টে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় দারুস সালাম থানার এএসআই ইব্রাহিম মোল্লাকে। হত্যার পর পালানোর সময় গ্রেফতার হয় বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাথী মাসুদ রানা। মাসুদ রানা জানায়, বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি কামাল ওরফে প্রকাশ পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। মাসুদ রানার তথ্যমতে, পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার রাতেই ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে পাঁচটি হ্যান্ডগ্রেনেডসহ এক জামায়াত নেতা ও তার দুই ছেলে ছাত্রশিবিরের সক্রিয় কর্মী গ্রেফতার হয়। কামরাঙ্গীরচর থেকে উদ্ধারকৃত হ্যান্ডগ্রেনেড আর চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর হোসেনী দালানে গ্রেনেড হামলা করে দু’জনকে হত্যা এবং দেড় শতাধিক আহত করার ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত হ্যান্ডগ্রেনেড এক ও অভিন্ন। এতে হোসেনী দালানে বোমা হামলায়ও জামায়াত-শিবিরের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ হয়ে যায়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় চলমান ধারাবাহিক অভিযানে গ্রেফতার হয় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি এ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ জাহিদুর রহমান। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় বিদেশে থাকা জামায়াত-শিবিরের হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার তালিকা ও বিভিন্ন প্রমাণ। গুরুত্বপূর্ণ অনেক গোপন নথিপত্র। চিঠি ও বিভিন্ন প্রস্তাব। অত্যন্ত স্পর্শকাতর অনেক দলিলও উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতারকৃদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং উদ্ধারকৃত আলামতের সূত্র ধরে নতুন আদলে জামায়াত রাজনীতি শুরু করছে এবং সেই রাজনীতির ধরন কেমন হবে সে সম্পর্কে পিলে চমকানোর মতো চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নতুন আদলে আসবে। এজন্য জামায়াতপন্থী বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী লন্ডনে অবস্থানরত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে নতুন আদলের জামায়াতে ইসলামী গঠিত হবে। যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নতুন নামে দলটি মাঠে আসবে। আর নিষিদ্ধ না হলে জামায়াতে ইসলামী নামেই তাদের কর্মকা- চলবে। নিষিদ্ধ হোক আর না হোক ব্যারিস্টার রাজ্জাকের নেতৃত্বে নতুন আদলে জামায়াত গঠিত হচ্ছে। নতুন আদলের জামায়াতে ইসলামীতে যুদ্ধাপরাধীদের প্রকাশ্য কোন পদ-পদবী থাকছে না। তবে আড়ালে থাকবে কি-না সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হয়নি। নতুন জামায়াত দুটি পৃথক গ্রুপে কাজ করবে। একটি গ্রুপ প্রকাশ্য রাজনীতিতে জড়িত থাকবে। অন্য গ্রুপটি আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবে। প্রকাশ্যে রাজনীতিতে থাকা গ্রুপটিকে দ্বিতীয় দল হিসেবে ধরা হচ্ছে। আর আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা গ্রুপটিই প্রথম গ্রুপ। নতুন জামায়াত গঠনে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে সার্বিক সহযোগিতা করছেন তারই সহকারী ব্যারিস্টার ফুয়াদ। এ দু’জনের নেতৃত্বেই ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান মঞ্জু, কেন্দ্রীয় নেতা জাহিদুর রহমান (গ্রেফতারকৃত), সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট শিশির মনির, সাবেক সভাপতি ড. মোঃ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় নেতা ডাঃ লকিয়াত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা আলম শরীফ, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আহসান হাবিব ইমরোজ, কেন্দ্রীয় নেতা ড. আবু ইউসুফ, জামায়াতপন্থী বুদ্ধিজীবী ও কলামিস্ট ড. মিনার, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কেন্দ্র্রীয় নেতা ব্যারিস্টার জুবায়ের সমন্বয়ে গঠিত নতুন জামায়াত মূল কার্যক্রম চালাবে। এদের সঙ্গে ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও তার সহকারী ব্যারিস্টার ফুয়াদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। মূলত এদের নিয়েই হবে জামায়াতের নতুন প্ল্যাটফর্ম। এদের বিভিন্নভাবে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন সাবেক সচিব ও জামায়াতে ইসলামের থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত শাহ আব্দুল হান্নান ও ড. মিয়া মোহাম্মদ আইয়ুব। পরিকল্পনা ও বুদ্ধি পরামর্শ অনুযায়ী নতুন জামায়াতের শীর্ষনেতারা তুরস্কের গুলেন মুভমেন্টের মতো আন্দোলনে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেটওয়ার্ক সৃষ্টির কাজ চলছে। এজন্য একটি পৃথক নেটওয়ার্ক গ্রুপ তৈরির কাজও শেষ হয়েছে। তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। গুলেন মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারণা পেতে চলতি বছরের ২১ অক্টোবর তুরস্কের ইসলামী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিল জামায়াতে ইসলামীর এই গ্রুপটি। সেমিনারের আলোচ্য বিষয়বস্তু রাখা হয়েছিল ‘ক্রস কান্ট্রি ফিউশন’। তুরস্কের ইসলামী নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ রাখতে সেমিনারে অংশগ্রহণকারী জামায়াত নেতারা হোয়াটস এ্যাপে একটি গ্রুপ তৈরি করেন। সেই গ্রুপের মধ্যে বিভিন্ন পরামর্শ হয়। জামায়াতে ইসলামীর এই গ্রুপটি নিজেদের প্রকৃত কর্মকা- আড়াল করতে বিভিন্ন আর্থসামাজিক বিষয়া নিয়ে প্রকাশ্যে আলাপ-আলোচনা চালাতেন। তবে এসব আলোচনা হতো সাঙ্কেতিক ভাষায়। এর ফাঁকে ফাঁকে মূল এজেন্ডা নিয়ে সাঙ্কেতিক আলোচনা এখনও অব্যাহত আছে। এই গ্রুপটিই নতুন জামায়াতের প্রকাশ্য রাজনীতিতে জড়িত থাকবে। গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকাশ্যে থাকা জামায়াতের নতুন গ্রুপটিই আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা অপর গ্রুপটিকে অত্যন্ত কৌশলে নিয়ন্ত্রণ করবে, যা আড়ালেই থাকবে। এ গ্রুপের সদস্যদের ঢালাও নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা প্রশিক্ষিত সদস্যদের প্রথমে বাছাই করা হবে। এরপর তাদের কোচিং সেন্টারের আড়ালে একত্রিত করা হবে ঢাকায়। ৫-৭ জনের ছোট ছোট দল গঠন করা হবে, যা হবে ছোট ছোট আত্মঘাতী স্কোয়াড। অনেকটা সিপি গ্যাং স্টাইলে এসব গ্রুপ তৈরি করা হবে। ইতোমধ্যেই অনেক গ্রুপ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। গ্রুপগুলোকে ঢাকা ও গাজীপুরে ১ থেকে ৩ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। অনেক দলকে ইতোমধ্যেই ট্রেনিং দেয়া হয়েছে। দলগুলোর জন্য ইতোমধ্যেই গাজীপুর ও ঢাকায় বাসা ভাড়া নেয়া হয়েছে। আরও বাসা-বাড়ি ভাড়া নেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের কথিত আকিদা, নিরাপত্তা, কৌশল, অস্ত্র পরিচালনা ও বিস্ফোরক ব্যবহারে হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হবে। অনেক দলের ইতোমধ্যেই প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ হয়েছে। দলগুলো যেসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক চালনায় পারদর্শী হবে, সেসব অস্ত্র-গোলাবারুদ যোগাড় করে মজুদ করা হবে। এরপর নাশকতা চালাতে প্রয়োজন অনুযায়ী সেসব অস্ত্র-গোলাবারুদ টার্গেটকৃত জায়গায় মজুদ করার প্রস্তুতি চলছে। যে গ্রুপকে যেখানে অপারেশন চালানোর নির্দেশ দেয়া হবে, তার আশপাশে অনেক আগে থেকেই অস্ত্র-গোলাবারুদ নিয়ে গ্রুপটি রেকি করতে থাকবে। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী সুযোগ বুঝে মারাত্মক নাশকতা চালাবে। গ্রুপগুলোর সদস্যদের নাম-ঠিকানা বদলে সাঙ্কেতিক নাম রাখা হয়েছে। বাসা ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রেও কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। পুলিশ কর্তৃক সরবরাহকৃত ভাড়াটিয়াদের ফরমের তথ্য যাচাই-বাছাই না হওয়ার সুযোগটিকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছে তারা। নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের আদলে কাটআউট পদ্ধতিতে গ্রুপগুলো তৈরি করা হচ্ছে, যেন একটি গ্রুপ ধরা পড়লে অন্য গ্রুপ সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ না পায়। জেএমবি বা আনসারুল্লাহ বাংলাটিম যেভাবে তাদের অপারেশন চালাচ্ছে, সেই আদলেই তৈরি হচ্ছে গ্রুপগুলো। ইতোমধ্যেই অনেক গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। বেশকিছু গ্রুপ পর্যায়ক্রমে গাজীপুরের শালবনে আউটডোর ট্রেনিংয়ের নামে হামলা পরিকল্পনার মাঠপর্যায়ের মহড়াও সম্পন্ন করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গেছে, এই গ্রুপগুলোর প্রধান টার্গেট শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। গ্রুপগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ে হত্যার টার্গেটে রয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ডাঃ ইমরান এইচ সরকার। এদের নিশ্চিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করবে ছোট ছোট ভয়ঙ্কর এসব গ্রুপ। হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হামলা সফল না হলে হামলা চালানো অব্যাহত থাকবে। পরিকল্পিতভাবে হামলা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি ছাড়াও সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বাধ্য করার পরিকল্পনা রয়েছে গ্রুপগুলোর। এমন হামলার পর আইএসের আদলে গঠিত কথিত উগ্রপন্থী সংগঠন আইএসআইএলের নামে দায় স্বীকার করে ভিডিওবার্তা প্রকাশ করা হবে। এ ধরনের কলাকৌশল রপ্ত করানোর জন্য বিশেষ ইউনিট গঠন করা হয়েছে। সেই ইউনিটের অধীনেও আরও বেশ কয়েকটি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এদের প্রধান কাজ হামলার পর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দায় স্বীকার করে উগ্রপন্থী সংগঠনটির নামে দেশে-বিদেশে বিবৃতি প্রকাশ করা। এ ধরনের কলাকৌশল রপ্ত করানো হচ্ছে গ্রুপগুলোকে। এসব গ্রুপের মূল কাজ হবে দেশ-বিদেশে প্রচার, অপপ্রচার ও প্রপাগা-া চালানো। জামায়াত-শিবির, বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠন ও উগ্র মৌলবাদী সংগঠন সম্পর্কে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে নজরদারি করার বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সারাদেশে জঙ্গী তৎপরতাসহ যে কোন ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে বাড়তি সর্তক অবস্থায় রয়েছে বলেও তিনি গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দফতরে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে জঙ্গীবাদ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় জানান। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, জঙ্গী ও জামায়াত-শিবিরসহ উগ্র মৌলবাদী সংগঠন সম্পর্কে তারা বাড়তি নজরদারি করছেন। নাশকতা প্রতিরোধে তারা বিভিন্ন কৌশলী পদক্ষেপও নিয়েছেন। এ বিষয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, দেশব্যাপী অবরোধ-হরতালে নাশকতার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতারে ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত আছে। আসামিদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী। এছাড়াও জামায়াত-শিবির সম্পর্কে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। তারা যাতে কোন প্রকার নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে না পারে এজন্য বাড়তি সর্তকতা জারি করা হয়েছে।
×