ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ৪৩ দশমিক ৭১ শতাংশ

প্রকাশিত: ০০:২০, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ৪৩ দশমিক ৭১ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেনের সঙ্গে কমেছে সব ধরনের মূল্য সূচক। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পড়তি বাজারে এমনিতেই বিক্রয়চাপ বেশি। এর ওপর প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) পর লেনদেন শুরুর দ্বিতীয় কার্যদিবসেই একটি শেয়ারের বাজার দর ইস্যুমূল্যের নিচে নেমে আসায় অনেক বিনিয়োগকারী হতাশ হয়েছেন, সার্বিক আত্মবিশ্বাসের ওপর যার প্রভাব পড়েছে। নতুন শেয়ারে মার্জিন ঋণ সুবিধা না থাকা এবং তালিকাভুক্তির পর উদ্যোক্তাদের বোনাস শেয়ার বিক্রিতে সাম্প্রতিক কড়াকড়িও এর একটি কারণ। তালিকাভুক্তির পর পর দরবৃদ্ধিতে বিশেষ সুবিধা না থাকায় উদ্যোক্তাদের কাছে এখন সেকেন্ডারি বাজারে শেয়ারের দর আগের তুলনায় কম মনোযোগ পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া ৩১ ডিসেম্বর বর্ষ সমাপনীকে কেন্দ্র করে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যস্ত হচ্ছে, ক্ষেত্র বিশেষে নিট বিক্রিও বেড়েছে বলে জানা গেছে। বিক্রয়চাপে এসবের একটি বড় প্রভাব রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের কাছে গত সপ্তাহের উল্লেখযোগ্য খবরগুলো ছিল মিউচুয়াল ফান্ডের রূপান্তর-অবসায়ন সম্পর্কে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা। এর প্রভাবে দুটি তালিকাভুক্ত ফান্ডের অবসায়ন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যেতে পারে। অবশ্য উচ্চ আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এদিকে খাত ও অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট খবরগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) হ্রাস, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সার্বিক রফতানি এক বছর আগের তুলনায় ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ বৃদ্ধিও বিনিয়োগকারীদের বিবেচনায় ছিল। তবে বাজারে এসবের প্রভাব ছিল মিশ্র। গেছে, আগের সপ্তাহের চেয়ে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৯৪৭ কোটি ৫৮ টাকা। আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৬৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। এদিকে, ডিএসইর সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ৬২ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বা ২১ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ১৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট। সপ্তাহ জুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৮টি কোম্পানির; দর কমেছে ২৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির। আর লেনদেন হয়নি ৪টি কোম্পানির শেয়ার। সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বে´িমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, কাসেম ড্রাইসেল, রিজেন্ট টেক্সটাইল, ডেল্টা লাইফ, বিএসআরএম স্টিল, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, সাইফ পাওয়ার টেক, আফতাব অটোস ও কেডিএস এক্সেসরিজ। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কাসেম ড্রাইসেল, বিডি ল্যাম্পস, এ্যাপেক্স স্পিনিং, ফাস্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড, ব্র্যাক বন্ডস, আরামিট, ৫ম আইসিবি, দেশ গার্মেন্টস, এমারেল্ড ওয়েল ও সিঙ্গার বাংলাদেশ। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বিআইএফসি, সিমটেক্স ইন্ড্রাস্টিজ, মিথুন নিটিং, তাল্লু স্পিনিং, বঙ্গজ, আইএসএন, তসরিফা ইন্ড্রাস্টিজ, এইমস ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, মেট্রো স্পিনিং ও হাক্কানী পাল্প। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫১টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টি কোম্পানির শেয়ার।
×