ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুহম্মদ শফিকুর রহমান

জিয়া এরশাদ খালেদার ২১ বছর ছিল আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগ

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

জিয়া এরশাদ খালেদার ২১ বছর ছিল আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগ

বঙ্গবন্ধু ও ৪ নেতার হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের মাধ্যমে দেশকে মধ্যম আয়ের গ্রুপে উন্নীত করার প্রেক্ষাপটে এবারের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদ্যাপনের স্বতঃস্ফূর্ততা যেমন ছিল প্রশ্নাতীত তেমনি কর্মসূচীর ব্যাপকতাও ছিল আগের তুলনায় বিশাল এবং অংশগ্রহণমূলক। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানী হায়েনাদের গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, বুদ্ধিজীবী হত্যা তথা মানবতাবিরোধী অপরাধের সহযোগী জামায়াত-মুসলিম লীগ ও আলবদর, আলশামসের বিচার মানুষের মধ্যে যে আত্মপ্রত্যয় সৃষ্টি করেছে তারই বহির্প্রকাশ ঘটেছে এবারের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানমালায়। মানুষ সেই একাত্তরের মতো এবারের ১৬ ডিসেম্বরকে আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছে। ৩০ লাখ শহীদ, ৬ লাখ নির্যাতিত মা-বোন এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবার দীর্ঘদিন বুকের পাঁজরে যে বেদনা লালন করে আসছিল আলবদর-আলশামস-রাজাকারদের বিচার এবং ফাঁসির কাঠগড়ায় দেখে কিছুটা হলেও স্বস্তিবোধ করেছে। পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলো যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছিল মহাবীর মুজিবের বীরকন্যা শেখ হাসিনা তার অবসান ঘটালেন। শহীদ পরিবার তথা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী প্রতিটি নাগরিক আজ শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন এবং তাঁর সুস্থ দীর্ঘ জীবন কামনা করছেন। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়টা কেমন ছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশটাকে আইয়ামে জাহিলিয়াতের মতো অন্ধকার যুগে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না, নারী হত্যার (বঙ্গমাতা) বিচার করা যাবে না, নবপরিণীতা দুই বধূর (সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল) হত্যার বিচার করা যাবে না, ছোট্ট শিশু রাসেল হত্যার বিচার করা যাবে না! খুনী জিয়া-মোশতাক আইন করেছিলেন, খুনীদের বিদেশী দূতাবাসের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। মূলত ঐ খুনীদের একাত্তর এবং পঁচাত্তরে সভ্যতা ও মানবতা হত্যার পুরস্কার দিয়েছিলেন জিয়া-মোশতাক এবং পরবর্তীতে খালেদা-এরশাদ। সাকা চৌধুরী এবং মুজাহিদ-মোল্লার আস্ফালন সভ্যতাকেই ব্যঙ্গ করেছিল দীর্ঘদিন। ’৭৫-পরবর্তী ২১ বছর। কেবল আইয়ামে জাহিলিয়াতের সঙ্গে তুলনা করা চলে। যে দেশটি ৩০ লাখ শহীদ ও ৬ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এবং যে দেশের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে এত বড় আত্মত্যাগ সেই পাকিস্তানকে ফিরিয়ে এনে মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন জিয়া-মোশতাক এবং এরশাদ-খালেদা তাদের পথেই হেঁটেছেন, এ পথে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছেন। জিয়াকে বলা হয় মুক্তিযোদ্ধা এবং তার হাতে গড়া বিএনপিকে বলা হয় মুক্তিযোদ্ধার দল(!) প্রথমটি হয়ত ঠিক, স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে যেভাবেই হোক জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যায় কিন্তু যে বিএনপি তিনি গড়েছেন এবং স্ত্রী-পুত্রের হাতে রেখে গেছেন তা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল নয়। সাকা চৌধুরীর ফাঁসি হওয়ার পরও খালেদা জিয়া তাকে বহিষ্কার করেননি, গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-কাদের-কামারুজ্জামানের সাজা বাস্তবায়নের পরও তাদের যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতকে জোট থেকে খালেদা জিয়া বাদ দেননি। স্বেচ্ছায় হোক বা বাধ্য হয়ে হোক জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যায়, আমার এ বক্তব্যের সঙ্গে কেউ কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। কিন্তু যদি বলি জিয়া যদি সত্যিকার অর্থে মুক্তিযোদ্ধাই হবেন তবে ‘বাংলাদেশ বেতার’ নামটি প্রথমেই পাল্টে ‘রেডিও বাংলাদেশ’ করলেন কেন? ‘জয় বাংলা’ বলা নিষিদ্ধ করে পাকিস্তানী আদলে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ প্রতিস্থাপন করলেন কেন। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলার মধ্যে অপরাধ নেই ভুলও নয় মানি, কিন্তু প্রশ্নটি হলো এর মাধ্যমে জিয়া পাকিস্তান রাজনৈতিক সংস্কৃতি পুনর্প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। আপত্তিটা এখানেই। জিয়া তার মার্শালতন্ত্রকে গণতন্ত্রের লেবাস পরানোর নামে কারফিউ গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। কারফিউর মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রহসন করে রাষ্ট্রক্ষমতাকে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করেছিলেন এবং সেই দুটি নির্বাচনে শতকরা ৯৮ ভাগ ভোট পড়েছিল, কোথাও কোথাও মোট ভোটের চেয়ে বেশি ভোট গোনা হয়েছিল, এর জবাব কী? জিয়া যদি সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা হবেন তবে যার নামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন তার হত্যাকারীদের কেন বিদেশী দূতাবাসে বড় বড় পদে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন? জিয়া যদি মুক্তিযোদ্ধা বা দেশপ্রেমিকই হবেন তবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী দেশগুলো কেন (পাকিস্তান-চীন-সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্রসহ) বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য জিয়ার ক্ষমতা দখল পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল? কেন বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় স্বীকৃতি দেয়নি? এমনি ভূরি ভূরি প্রশ্ন আছে যার জবাব জিয়ার পোষ্যরা কোনদিন দিতে পারেনি, পারবেও না। যে হায়েনাদের দল জামায়াত-মুসলিম লীগকে বঙ্গবন্ধু নিষিদ্ধ করেছিলেন তাদের কেন রাজনীতিতে পুনর্বহাল করেছিলেন কিংবা গোলাম আযমের মতো যুদ্ধাপরাধী যাদের নাগরিকত্ব বঙ্গবন্ধু বাতিল করেছিলেন জিয়া কেন তাদের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করেছিলেন এবং গোলাম আযমকে জামায়াতের আমির হতে দিয়েছিলেন? এসব প্রশ্নের জবাব কী? জিয়া ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ কে সংবিধানে স্থাপন করেছেন। এখানে জিয়া পবিত্র ধর্মের প্রতি আনুগত্যের কারণে করেননি, যদি তাই হতো তাহলে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক নিষিদ্ধ করা মদ-জুয়া-হাউজি পুনরায় চালু করলেন কেন? মূলত ২টি উদ্দেশ্যে পাকিস্তানকে খুশি করার জন্য ‘বিসমিল্লাহ...’ সংবিধানে স্থাপন করেছেন, প্রথমত পাকিস্তানকে খুশি করা, দ্বিতীয়ত ধর্মনিরপেক্ষতা বা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি বা নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ হিসেবে ঐ আত্মপ্রবঞ্চনা করেছিলেন। এর পেছনে তার আন্তরিকতা ছিল বলে আমি মনে করি না। নইলে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গ্রেফতার সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন থাকা গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, নারী ধর্ষণকারীদের বিচারের কাঠগড়া থেকে ছেড়ে দিতেন না? হত্যা, গণহত্যা, নারী ধর্ষণ কি গুনাহর কাজ নয়? এমন অসংখ্য প্রশ্ন আছে যার জবাব জিয়ার পোষ্যরা তো দিতেই পারবে না, জিয়া পতœী বর্তমান বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও দিতে পারবেন বলে আমি মনে করি না। মিলিটারি এরশাদ জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তার জাতীয় পার্টি বানিয়েছিলেন। জিয়া রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন, এরশাদ সাকা চৌধুরীকে দলে নিয়ে মন্ত্রীর মর্যাদায় নিয়োগ দিয়েছিলেন, আর খালেদা জিয়া আরেক ধাপ এগিয়ে সাকা চৌধুরীকে মন্ত্রীর মর্যাদায় উপদেষ্টা এবং আলবদর নিজামী-মুজাহিদের বাড়ি-গাড়িতে শহীদের রক্তরঞ্জিত লাল-সবুজ পতাকা তুলে দিয়ে মন্ত্রী বানান। খালেদার ছেলে (লন্ডনে পলাতক) তারেক রহমান তো শিবিরকে এক মায়ের পেটের ভাই বলে বুকে তুলে নেন। এসবের জবাব কী? ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ৩০ মার্চ ১৯৯৬ পর্যন্ত এই ২১ বছরকে আইয়ামে জাহিলিয়াত বা অন্ধকার যুগ ছাড়া আর কী বলা যাবে? অবশ্য এরপরেও ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আরেকটি অন্ধকার যুগ আমরা দেখেছি। সেদিন কিভাবে মানুষের হাত-পা কেটে ফেলা হয়েছে, চোখ উপড়ে নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে খালেদা বাহিনী ও হাওয়া ভবন বাহিনীর লুটপাটের বিভীষিকা এখনও ক্ষত হয়ে আছে। যুদ্ধাপরাধীদের মতো তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হলে সেই ক্ষত কিছুটা হলে লাঘব হবে। তবে কি সেই আইয়ামে জাহিলিয়াতের দিন শেষ হতে চলেছে। আজ আর সে অবস্থা নেই যেমন বলা যাবে না তেমনি এখনও জাহিলিয়াত চলছে তাও বলা যাবে না। কেননা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে এতদিন গর্তে লুকিয়ে থাকা বিষাক্ত স্বাপদের দল বেরিয়ে এসেছে শেষবারের মতো কাঠগড়া থেকে বাঁচতে। তাদের গডমাদারের আঁচলে লুকিয়ে আছে এখনও অনেক। যখন দেখি এক এক করে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হচ্ছে তখন স্বস্তিবোধ করি কিন্তু তারপরও যখন দেখি দেশের মিডিয়া এবং শিক্ষিত ভদ্রলোক নামধারী কিছু নাগরিক ঐ স্বাপদদের পক্ষে সাফাই গাইছে তখন সবটুকু নিরাপদ মনে হয় না। তারপরও যখন দেখি আমাদের প্রধানমন্ত্রী দৃপ্তপদে এগিয়ে চলেছেন, দেশকে জঙ্গীমুক্ত সাম্প্রদায়িকতামুক্ত করার কাজে এতটুকু ছাড় দিচ্ছেন না তখন আপনা-আপনিই বুকে সাহস সঞ্চারিত হয়Ñ আমরা পারি, আমরা পেরেছি, আমরা পারব। বীরকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরাও কণ্ঠ মেলাই ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাবে এমন শক্তি নেই, একটা একটা করে সব কটার বিচার হবে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে শহীদের রক্তরাঙা লাল-সবুজের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন তাদেরও বিচার হবে।’ এখন প্রয়োজন শেখ হাসিনার প্রদর্শিত পথেই আমাদের চলা। বাম রাজনীতির নামে কেউ কেউ হয়ত এখনও আইয়ামে জাহিলিয়াত থেকে উত্তরণের কোন পথ দেখছেন না। ভবিষ্যতেও দেখবেন না তাই তাদের দিকে না তাকিয়ে আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে বরং বুক চিতিয়ে আমরা এগিয়ে যাবÑ আজ খাদ্য উৎপাদন ৪ কোটি টন; মঙ্গা দুর্ভিক্ষ এখন আর কোথাও নেই, ডিকশনারিতে ঢুকে গেছে; আমাদের ছোটবেলায় (’৫০/’৬০/’৭০/’৮০/’৯০-এর দশক পর্যন্ত) দেখেছি গ্রামে গরিব নারীরা ভাতের ফ্যানের জন্য সম্পন্ন পরিবারে সকাল-বিকেল ধর্ণা দিচ্ছে, আজ আর সে অবস্থা নেই, একটি মানুষও না খেয়ে থাকে না, গ্রামেও কোন মানুষ খালি পায়ে হাঁটে না, গ্রামে গ্রামে বিদ্যুত, ঘরে ঘরে ডিশ টিভি; আমাদের মেয়েরা এখন আগে আগে চলে। ক্রিকেটে আমরা এখন রয়েল বেঙ্গল টাইগার, আমাদের মুস্তাফিজ এবার গুগলে হলিউড অভিনেত্রী জেনিফার লোপেজকে হটিয়ে এক নম্বরে উঠে এসেছে; শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হচ্ছে, এখন ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা, মাননীয় শেখ হাসিনার ভাষায় ক্রিকেটের মতো বিদ্যুত জেনারেটিং প্লান্ট নির্মাণেও আমরা সেঞ্চুরি করেছিÑ এমনিভাবে আইয়ামে জাহিলিয়াত বা অন্ধকার যুগ থেকে বেরিয়ে মহাবীর মুজিবের বীরকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার সূচকগুলো আজ বিশ্ব পরিম-লে জ্বলজ্বল করছে। তাই তো বাংলাদেশ সফরে এসে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি বিস্ময়কর, চীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে। অর্থনীতিতে বাঙালী নোবেল লরেট প্রফেসর ড. অমর্ত্য সেন বহু আগে থেকেই এমনি ভবিষ্যদ্বাণী করে আসছিলেন। যে কারণে শেখ হাসিনা কেবল ‘ধরিত্রীর আদরের কন্যাই নন, ত্বরিত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশ্বের শত শক্তিধর রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে জার্মানির এ্যাঞ্জেলা মের্কেল এবং রাশিয়ার ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে একই কাতারে রয়েছেন। ঢাকা-১৮ ডিসেম্বর ২০১৫ লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব নধষরংংযধভরয়@মসধরষ.পড়স
×