ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিরোপা কার মাশরাফি না মাহমুদুল্লাহর?

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

শিরোপা কার মাশরাফি না মাহমুদুল্লাহর?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সবার মনেই একটা প্রশ্ন, মাশরাফি বিন মর্তুজাকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিতে পারবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ? দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে মাশরাফির কাছে হারের ক্ষত এবার দূর হবে? পারবে প্রথমবারের মতো বিপিএলের শিরোপা হাতে তুলে নিতে? না কি টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হবেন মাশরাফিই? সব উত্তর মিলে যাবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও মাহমুদুল্লাহর বরিশাল বুলস মুখোমুখি ম্যাচে। যে জিতবে, শিরোপা হয়ে যাবে তারই। বিপিএলে দেশী অধিনায়কদের মধ্যে শুধু দুইজন ফাইনালে নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন। একজন টানা তিনবার ফাইনালে খেলছেন। তিনি মাশরাফি। বিপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনায়কও। এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় আসরে নেতৃত্ব দিয়ে ঢাকাকে চ্যাম্পিয়নও করান ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। এবার কুমিল্লাকেও ফাইনালে ওঠান। আজ জিতলে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হবেন মাশরাফি। আরেকজন টানা দুইবার ফাইনালে খেলছেন। তিনি মাহমুদুল্লাহ। যিনি দ্বিতীয় আসরেও ফাইনালে খেলেছেন। চিটাগাং কিংসকে এর আগে ফাইনালে উঠিয়েছেন। কিন্তু মাশরাফির ঢাকার কাছে হেরে গেছেন। এ দুইজনের মধ্যেই আজ তৃতীয় আসরের শিরোপা জেতার লড়াই হবে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে চ্যাম্পিয়ন করাতে মাশরাফি ও বরিশাল বুলসকে শিরোপা জেতাতে মাহমুদুল্লাহ জোর লড়াইয়ে নামবেন। যেই জিতুক, জয় হবে দেশী অধিনায়কেরই। কারণ, বিদেশী কোন ক্রিকেটার অধিনায়ক হয়ে যে এখন পর্যন্ত বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। এ নিয়ে তিন আসর হচ্ছে। প্রথম আসরে ২০১২ সালে বরিশাল বার্নার্স যে ফাইনালে ওঠে, মাশরাফির ঢাকার বিপক্ষে হারে, সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্র্যাড হজ। দ্বিতীয় আসরে ২০১৩ সালে মাশরাফি-মাহমুদুল্লাহর মধ্যকার ফাইনাল হয়। এবারও তাই হচ্ছে। তার মানে, তিন আসরের মধ্যে প্রথম আসরেই শুধু বিদেশী অধিনায়ক একটি দলে থাকেন। বাকি দুই আসরেই দেশী অধিনায়করাই থাকেন প্রতিপক্ষ। আগের দুই আসরেই মাশরাফি চ্যাম্পিয়ন হন। এবার নিশ্চিতভাবেই দেশী ক্রিকেটারের হাত ধরেই দল চ্যাম্পিয়ন হবে। আর তাই জয় হবে দেশী ক্রিকেটারদেরই। এখন শিরোপা মাশরাফি না মাহমুদুল্লাহর হাতে শোভা পায় সেই দিকেই সবার নজর থাকছে। অবশ্য লীগ পর্বের হিসেব আনলে এগিয়ে থাকছে কুমিল্লাই। এবার ৬ দলের টুর্নামেন্টে ডাবল লীগ পদ্ধতিতে খেলা হয়। লীগ পর্বে কুমিল্লা ও বরিশাল পরস্পরের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে। দুটিতেই জিতে কুমিল্লা। প্রথমটিতে ৮ উইকেটে ও দ্বিতীয়টিতে ৭ উইকেটে জিতে কুমিল্লা। ক্রিস গেইলকে ছাড়াও জিততে পারেনি। ‘ব্যাটিং দানব’কে নিয়েও জিততে পারেনি বরিশাল। আজ ফাইনাল ম্যাচেও থাকছেন না গেইল। স্বাভাবিকভাবে কুমিল্লাই এগিয়ে থাকছে। তবে ম্যাচটি ফাইনাল। বরিশাল যেভাবে গেইলকে ছাড়াই সাব্বির রহমান রুম্মনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে জিতেছে, ফাইনালও জিতে যেতে পারে। স্নায়ুচাপ যে দল নিতে পারবে, তাদেরই তো শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জেতার কথা। টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ মাশরাফির সামনে। যদিও এবার দল পরিবর্তন হয়েছে। দৃষ্টি শিরোপাতেই আছে। বলেছেন, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত। একটা নতুন দলের হয়ে খেলছি। এর আগে যে দলের হয়ে খেলেছি, তারা দুইবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটা খুবই পরিষ্কার যে আমরা যেভাবে খেলতে চেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ এ পর্যন্ত সেভাবেই খেলে আসতে পেরেছি। আর এখন তো দুই দলের জন্যই ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। আমরা ইনশাল্লাহ আশাবাদী এবং ইতিবাচক। আশা করি যে, আমরা শেষ যত ম্যাচ জিতেছি, যেভাবে ইতিবাচকভাবে খেলে এসেছি, এভাবে যদি খেলতে পারি ইনশাল্লাহ ভাল কিছু হবে।’ মাহমুদুল্লাহর জন্যও ফাইনালটি রোমাঞ্চেরই। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলছেন। একবার রানার্সআপ হয়েছেন। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচের আগে খানিক ইনজুরিতে পড়েছেন মাহমুদুল্লাহ। এরপরও ম্যাচটি ফাইনাল বলে খেলবেন। এমন ম্যাচে প্রতি দলই জেতার জন্যই খেলে। বরিশালই তাই করবে। মাহমুদুল্লাহই যেমন বলেছেন, ‘আমরা দল হিসেবে ভাল ক্রিকেট খেলেছি। আরেকটি ম্যাচ আছে এখন। আশা করি, সেটিতেও ভাল কিছু করব। দলের সবাই খুশি। তবে সেই খুশি আরও বেড়ে যাবে যদি ফাইনালেও জিততে পারি।’ এখন দেখা যাক, হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হন মাশরাফি, নাকি গত আসরে মাশরাফির কাছে ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতেন মাহমুদুল্লাহ।
×