ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চুক্তি স্বাক্ষর আগামীকাল

লিবিয়ায় ঐক্য সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানাল পশ্চিমারা

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

লিবিয়ায় ঐক্য সরকারের উদ্যোগকে  স্বাগত জানাল পশ্চিমারা

পশ্চিমা দেশগুলো লিবিয়ায় একটি ঐক্য সরকার গঠন পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। উত্তর আফ্রিকার এ দেশটিতে জঙ্গী গ্রুপ ইসলামিক স্টেট (আইএস) আধিপত্য বিস্তার করতে যাওয়ার পটভূমিতে ঐক্য সরকার গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই আহ্বান এলো। খবর ওয়েবসাইটের। লিবিয়ায় বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে বুধবার একটি চুক্তি সম্পাদনের কথা রয়েছে। চুক্তিটি হবে প্রস্তাবিত নতুন ঐক্য সরকারের ভিত্তি। জাতিসংঘ প্রতিনিধি মার্টিন কোবলারসহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও পাওলো জেনটিলোনি প্রস্তাবিত ঐক্য সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বিবৃতিতে বিবদমান পক্ষগুলোর প্রতি অতিসত্বর অস্ত্রবিরতি এবং যেসব দল বা উপদল এই সমঝোতার আওতায় আসবে না তাদের সঙ্গে সম্পর্কছেদ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতালির রাজধানী রোমে মিসর, জার্মানি, রাশিয়া, তুরস্ক এবং চীনসহ ১৭ দেশের প্রতিনিধিরা রবিবার একটি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। বৈঠকে লিবিয়ার বিভিন্ন গ্রুপের প্রতিনিধিত্বকারী দেশটির ১৫ জন নাগরিকও উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে চলমান গোষ্ঠী সংঘাতের জন্য লিবিয়ায় ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠার সময়সীমা এর আগে কয়েকবার হাতছাড়া হয়েছে। রবিবার স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় সমঝোতার ভিত্তিতে লিবিয়ায় যে ঐক্য সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। রাজনৈতিক বোঝাপড়ার আলোকে গঠিত নতুন সরকারকে সমর্থন করতে আমরা প্রস্তুত আছি। এই সরকারের প্রতি অর্থনৈতিক, কারিগরি ও সন্ত্রাস দমনে প্রয়োজনীয় সহায়তাসহ আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’ সভায় কেরি ও জেনটিলোনি যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। উত্তর আফ্রিকায় আইএসের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার পর লিবিয়ায় এ ধরনের একটি ঐক্য সরকার গঠনের প্রয়োজনিয়তা অনুভূত হচ্ছিল। জেনটিলোনি বলেন, ‘আজকের বৈঠকের বার্তা অত্যস্ত পরিষ্কার। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা একান্ত প্রয়োজন।’ চার বছর আগে পশ্চিমা জোটের সামরিক আক্রমণের মুখে দেশটির দীর্ঘকালীন শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর নৈরাজ্যের কবলে পড়ে লিবিয়া। স্থানীয় বিভিন্ন সশস্ত্রগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত অব্যাহত থাকায় কোন স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তেল উৎপাদনকারী ও ওপেকের সদস্য লিবিয়ায় বর্তমানে দুটো সরকার ও দুটো পার্লামেন্ট রয়েছে। দুই সরকারকে আবার সহায়তা দিচ্ছে পৃথক পৃথক মিলিশিয়া বাহিনী। উভয় মিলিশিয়া বাহিনীতেই গাদ্দাফির সমর্থক যোদ্ধারা রয়েছে। জাতিসংঘের উদ্যোগে আলোচনার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা টেকসই হবে না বলেই মনে করেন ত্রিপোলিভিত্তিক জিএনসি (জেনারেল ন্যাশনাল কংগ্রেস) সরকারের পার্লামেন্ট সদস্য আবদুল কাদের হাওয়ালি। তিনি বলেছেন, তাদের সরকারের হয়ে যারা ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছেন তারা প্রকৃতপক্ষে জিএনসি সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন না। গত মাসে প্যারিস হামলার পর আইএসের নয়া প্রভাব বলয় হিসেবে লিবিয়ার দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়েছে। ইতালির লাম্পেডুসা দ্বীপ থেকে ভূমধ্যসাগরের মধ্য দিয়ে লিবিয়ার দূরত্ব ৩শ’ কিলোমিটারেরও কম। ধারণা করা হচ্ছে, লিবিয়ায় এখন প্রায় তিন হাজার আইএস সদস্য সক্রিয় রয়েছে। বিষয়টি পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের।
×