ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে ১৩ পৌরসভা সুবিধায় আওয়ামী লীগ

বিদ্রোহী দমনে বিএনপি ব্যর্থ

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫

বিদ্রোহী দমনে বিএনপি ব্যর্থ

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ পৌরসভা নির্বাচনে রাজশাহীর ১৩টিতেই আওয়ামী লীগ বিদ্রোহ দমনে সফল হলেও বিএনপি ব্যর্থ হয়েছে। জেলার ১৩ পৌরসভার প্রায় টিতেই বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত পুঠিয়া পৌরসভা ছাড়া বাকিগুলো থেকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় একক প্রার্থীরা রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। এতে নৌকার পালে লেগেছে অনুকূল হাওয়া। বর্তমানে ১৩ পৌরসভার মধ্যে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী রয়েছেন তানোরে ইমরুল হক, মুন্ডুমালায় গোলাম রাব্বানী, কাঁকনহাটে আব্দুল মজিদ মাস্টার, গোদাগাড়ীতে মনিরুল ইসলাম বাবু, ভবানীগঞ্জে আব্দুল মালেক, তাহেরপুরে আবুল কালাম আজাদ, নওহাটায় আব্দুল বারী খান, কাটাখালিতে আব্বাস আলী, কেশরহাটে শহীদুজ্জামান শহীদ, দুর্গাপুরে তোফাজ্জল হোসেন, চারঘাটে নার্গিস বেগম, আড়ানিতে মুক্তার হোসেন ও পুঠিয়ায় রবিউল ইসলাম রবি। এর মধ্যে শুধু পুঠিয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জিএম হিরা বাচ্চু। স্থানীয়রা তাকে সমর্থন দিয়েছে বলে দাবি করলেও কেন্দ্র থেকে মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন রবিউল ইসলাম রবি। জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে পুঠিয়া ছাড়া সবটিতেই বিদ্রোহ দমন হওয়ায় জয়ের ব্যাপারে এখনই আশাবাদী জেলার আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে তাদের দাবি পুঠিয়াতেও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীই জয়ী হতে পারেন। সব শক্তি দিয়ে দলীয় প্রার্থীদের জেতাবেন বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। এদিকে বিএনপি মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বের রেশ কাটাতে শেষ দিন রবিবার পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। ফলে প্রায় পৌরসভাতেই বিদ্রোহী রয়ে গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার তানোরে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন মিজানুর রহমান মিজান। বিদ্রোহী রয়ে গেছেন বর্তমান মেয়র ফিরোজ সরকার। মুন্ডুমালায় মনোনীত প্রার্থী ফিরোজ কবির হলেও বিদ্রোহী রয়েছেন একই দলের মোজাম্মেল হক। গোদাগাড়ীতে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম। এখানে বিদ্রোহী গোলাম কিবরিয়া রুনু সরে এলেও রয়েছেন জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম। দুর্গাপুরে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাইদুর রহমান মুন্টু। বিদ্রোহী থাকলেও সৈয়দ জামাল উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। চারঘাটে মনোনীত প্রার্থী বিকুল আলী। বিদ্রোহী রয়েছেন কায়েম উদ্দিন। আড়ানীতে মনোনীত প্রার্থী তোজাম্মেল হক। বিদ্রোহী রয়েছেন বর্তমান মেয়র নজরুল ইসলাম। নওহাটায় বিএনপির প্রার্থী মকবুল হোসেন তার বিপরীতে দলের বিদ্রোহী রয়েছেন রফিকুল ইসলাম। কাটাখালিতে দলের প্রার্থী মাসুদ রানা তার বিপরীতে বিদ্রোহী রয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। কেশরহাটে মনোনীত প্রার্থী আলাউদ্দিন আলো। বিএনপির বিদ্রোহী নেই। তবে জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন হাফিজুর রহমান আকন্দ। শুধু জেলার কাঁকনহাট, ভবানীগঞ্জ ও দুর্গাপুরে বিদ্রোহী নেই বিএনপিতে। জেলা ও নগর নেতাদের দ্বন্দ্বে ও কেন্দ্র থেকে চাপ সৃষ্টি করতে না পারায় বিএনপির বিদ্রোহ দমন হয়নি। এ জন্য মনোনীত প্রার্থীরা দলের শীর্ষ নেতাদের দায়ী করেছেন। অপরদিকে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ দিন প্রার্থিতা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়ার পর এখন সবাই রয়েছেন আনুষ্ঠানিক প্রচারের অপেক্ষায়। আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ভোটের মূল লড়াই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্রোহী দমনে ব্যর্থ হওয়ায় জয়ের ফসল ঘরে তুলতেও ব্যর্থ হতে পারে বিএনপি। এক্ষেত্রে একক প্রার্থী থাকায় নৌকার পালে লাগতে পারে দমকা হাওয়া। এরই মধ্যে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী আমেজে ভাসছে ১৩ পৌরসভার পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে সবখানে। অধিকাংশ পৌরসভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। ভোটারদের ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। দলীয় নেতাকর্মীরা মাঠে থাকার কারণে এক চেটিয়া ভোটের মাঠ দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা। আর মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্যের কারণে এখনও মাঠে তেমনভাবে নামেনি বিএনপির নেতাকর্মীরা। মনোনীত প্রার্থী না বিদ্রোহীÑ কার পক্ষে সমর্থন দেবেন এ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কে বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে মোতাবেক দলীয় নেতাকর্মীরা দলের দুই প্রার্থীর জন্য ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। তিনি বলেন, শুরুতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বরের পৌর নির্বাচনে তাদের নৌকা মার্কার প্রার্থীই বিজয়ী হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
×