ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জমি অধিগ্রহণ চলছে

কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার রাজবাড়ী ও বরিশালে সেনানিবাস হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৩ নভেম্বর ২০১৫

কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার রাজবাড়ী ও বরিশালে সেনানিবাস হচ্ছে

নাজনীন আখতার ॥ রাজবাড়ী, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ ও কক্সবাজারে নতুন চারটি সেনানিবাস স্থাপন করা হচ্ছে। বিদ্যমান সেনানিবাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে স্থাপিত সেনানিবাসকে ‘বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস’ নামকরণের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছে সামরিক, ভূমি ও সেনানিবাস অধিদফতর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে মোট ২১টি সেনানিবাস রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে ঢাকার মিরপুর ও পোস্তগোলায়, সাভার, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর, মোমেনশাহী, শসাসে-ঘাটাইল, বগুড়া, রংপুর, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, রাজশাহী, কাদিরাবাদ, যশোর, খুলনার জাহানাবাদ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেটের জালালাবাদ, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং আলীকদম। এর বাইরে রাজবাড়ী, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার মধ্যবর্তী পায়রা নদী সংলগ্ন এলাকা, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার রামুতে সেনানিবাস স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। রাজবাড়ী সেনানিবাস হবে অন্য তিনটি জেলার চেয়ে তিনগুণ বড়। এর মধ্যে রাজবাড়ী জেলার সেনানিবাসের আয়তন হবে ৩ হাজার ৫৩৪ দশমিক ০১ একর। এই জমির মধ্যে ২ হাজার ১২৩ দশমিক ১৪ একর জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন ও বন্দোবস্তকৃত। বাকিটা সরকারী খাস জমি। ব্যক্তিমালিকানাধীন ও বন্দোবস্তকৃত জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম মন্ত্রণালয় পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খাস জমি সরকারী অনুমোদন পেয়ে সেনাবাহিনীর অনুকূলে গত ৯ জুন ইজারা দলিল করা হয়েছে। অবশিষ্ট খাস জমি হস্তান্তরের কার্যক্রম জেলা প্রশাসকের দফতরে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পায়রা নদী সংলগ্ন এলাকায় প্রস্তাবিত সেনানিবাসের আয়তন হবে ১ হাজার ৫৭৬ দশমিক ৬৩ একর। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ৭৩০ দশমিক ১৬ একর এবং পটুয়াখালী জেলায় রয়েছে ৮৪৬ দশমিক ৪৬ একর জমি। প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ার পর জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চলছে। কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলায় সেনানিবাস স্থাপন হবে ১ হাজার ৪৩ দশমিক ৬২ একর জমির ওপর। এর মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৯০১ দশমিক ০১ একর এবং বাকিটা সরকারী খাস জমি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য সেনাসদর থেকে এমইওএর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস অধিদফতর থেকে গত ১১ অক্টোবর প্রশাসনিক অনুমোদনের চিঠি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কক্সবাজার জেলার রামুতে প্রস্তাবিত সেনানিবাসের ১ হাজার ৫২৯ দশমিক ০৯ একর জমির পুরোটাই বন বিভাগের ডি-রিজার্ভকৃত সরকারী জমি। প্রস্তাবিত জমি প্রতীকী মূল্যে এক লাখ এক টাকা সেলামিতে প্রদানের জন্য প্রস্তাব করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় গত ১২ জুলাই একটি বৈঠক করে। বৈঠকে প্রস্তাবিত জমি বিনামূল্যে দেয়ার বিধান নেই বলে জানানো হয়। তবে কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে পরবর্তীতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার আগে প্রথমে সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস পরিদফতরের একটি উপ-পরিচালকের কার্যালয় ছিল। ১৯৭২ সালে পরিদফতরের প্রধান পদ পরিচালক হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস পরিদফতর একটি পূর্ণাঙ্গ অধিদফতরে উন্নীত হয়। এই অধিদফতর প্রতিরক্ষা বিভাগীয় ভূমির ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ, সামরিক প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ, ডিওএইচএস স্থাপন ও এর প্লট/ফ্ল্যাট হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকরণ এবং বিভিন্ন সেনানিবাসের পৌর কার্যাদি পরিচালনা করে।
×