ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর সমাবেশে ১৭ নবেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি

বেতন বৈষম্য নিরসনে সরকারী কলেজ শিক্ষকদের আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২ নভেম্বর ২০১৫

বেতন বৈষম্য নিরসনে সরকারী কলেজ শিক্ষকদের আল্টিমেটাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান বেতন কাঠামোতেই সব স্তরে বেতন বৈষম্য নিরসনে সরকারকে এবার ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনরত সারাদেশের সরকারী কলেজশিক্ষকরা। এই সময়ের মধ্যে বেতন বৈষম্য নিরসন করে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সাড়ে ১৫ হাজার সদস্যের মর্যাদা ও বেতন সমুন্নত করা না হলে ১৭ নবেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। রবিবার রাজধানীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) চত্বরে বিশাল সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচী থেকে এ ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। তবে তারা বলেছেন, শিক্ষা ক্যাডারের ওপর প্রশাসন ক্যাডারের ছড়ি ঘোরানো চলবে না। এ আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এটা শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। পূর্ব ঘোষণা অনুসারে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে সকালে মাউশি চত্বরে জমায়েত হয়েছিল সারাদেশে ৩০৫ সরকারী কলেজ, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা। যা ছিল সরকারী কলেজ ও সংশ্লিষ্ট দফতরে কর্মরত শিক্ষকদের সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় জমায়েত। শিক্ষা ক্যাডারে সক্রিয় সকল সমিতি ও ফোরামের সদস্যরা ঐক্যবদ্বভাবে জমায়েতে অংশ নেন। সবাবেশে বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগ, মহাসচিব আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, সাবেক মহাসচিব মাসুমে রব্বানী খান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব সাহেদুল খবীর চৌধুরী, সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রতিনিধি ইউনূস হাসান, নারায়ণগঞ্জের প্রতিনিধি জীবনকৃষ্ণ মোদক প্রমুখ। শিক্ষক নেতারা তাদের দাবি তুলে বলেন, আলাদা বেতন স্কেল নয়, বর্তমান বেতন কাঠামোতেই সব স্তরে বেতন বৈষম্য নিরসন করতে হবে। বর্তমান সরকার সম্প্রতি ৮ম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণা করেছে। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। পে-স্কেলের অনেক ইতিবাচক দিক আছে। কিন্তু র্শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিকে বিবেচনায় না এনে অধ্যাপক পদের বেতন স্কেল ও গ্রেড অবনমন করা হয়েছে। সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপকসহ র্শিক্ষা ক্যাডারের সব স্তরের বেতন বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শিক্ষা ক্যাডারের ১৫ হাজার সদস্য এটি উপভোগ করতে পারছে না। শিক্ষকরা তথ্য প্রমাণ তুলে ধরে বলেছেন, এখনও বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা পঞ্চম গ্রেড হতে পদোন্নতি পেয়ে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত হন। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপকরা পঞ্চম গ্রেড হতে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান, যা বৈষম্যমূলক। শিক্ষক নেতারা বলেন, প্রাপ্য মর্যাদায় উন্নীত না করে স্কেল ও পদ অবনমনে শিক্ষকরা মর্মাহত। অন্যদিকে দুটি সুপার গ্রেডের ফলে বৈষম্য আরও তীব্রতর হয়েছে। সমাবেশে ঘোষণা করা হয়, আগামী ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলবে। স্বাক্ষর সংবলিত দাবিনামা ১৭ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর পেঁৗঁছানোর জন্য শিক্ষামন্ত্রীর হাতে হস্তান্তর করা হবে। ওইদিন আবার নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। এর মধ্যেও দাবি মানা না হলে প্রয়োজনে লাগাতার কর্মবিরতি দেয়া হবে। শিক্ষকরা বলেন, আমাদের বক্তব্য, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করায় প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপকসহ শিক্ষা ক্যাডারের সব স্তরের বেতন বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে শিক্ষা ক্যাডারের বিভিন্ন স্তরের প্রায় ১৫ হাজার সদস্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
×