ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভিয়েনায় শান্তি বৈঠকে নমনীয় হোন ॥ মুন

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

ভিয়েনায় শান্তি বৈঠকে নমনীয় হোন ॥ মুন

সিরীয় গৃহযুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর প্রতি সমর্থন প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে শুক্রবার অনুষ্ঠেয় ভিয়েনা বৈঠকে নমনীয় হওয়ার জন্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। ভিয়েনা শান্তি আলোচনাকে সামনে রেখে ওয়াশিংটন বৃহস্পতিবার সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার দাবিতে দৃঢ়তা ব্যক্ত করেছে। খবর বিবিসি অনলাইন ও ওয়েবসাইটের। বান কি মুন ভিয়েনা বৈঠকে প্রধান পাঁচ অংশগ্রহণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও তুরস্কের প্রতি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের জন্য জাতীয় দৃষ্টিকোণ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ধরনের এটাই হবে প্রথম বৈঠক যেখানে ইরানকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ইরান রাশিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি সমর্থন যোগাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীদের জোর দাবি, আসাদকে কোন সমাধানের অংশীদার করা যাবে না। চার বছরের সিরীয় গৃহযুদ্ধে নিহত হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ কোটির বেশি। রাশিয়া ও ইরান এ সংঘাত এ সংঘাতে সম্প্রতি আসাদের অনুগত বাহিনীর প্রতি সামরিক সহযোগিতা প্রদান জোরদার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক, সৌদি আরব ও অন্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেÑ সিরিয়ার ভবিষ্যত গঠনে আসাদ কোন দীর্ঘমেয়াদী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারবেন না। কিন্তু ভিয়েনা আলোচনার পূর্ব মুহূর্তে পাঁচ প্রধান অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতি তাদের তাৎক্ষণিক স্বার্থের বাইরে ভাবার জন্য আহ্বান জানান বান কি মুন। তিনি বলেন, তারা যত বেশি জাতীয় দৃষ্টিকোণের কথা ভাববে তত বেশি দুর্ভোগ পোহাবে মানুষ এবং দুর্ভোগ পোহাবে সমগ্র বিশ্ব। আমি সব সময় বলি, সমস্যার কোন সামরিক সমাধান নেই। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশগুলো ও সৌদি আরবসহ যে দেশগুলো জোর দাবি করে আসছে আসাদের পদত্যাগের সে দেশগুলো সিরীয় শান্তি আলোচনায় ইরানকে অন্তর্ভুক্ত করতে এখন সম্মত হয়েছে এবং এটা হয়েছে রাশিয়া, সিরিয়ার আসাদের শত্রুদের ওপর স্থল হামলা শুরু করার চার সপ্তাহ পর। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জরিফ বৃহস্পতিবার ভিয়েনা পৌঁছে বলেছেন, যারা সিরীয় সঙ্কট সমাধানের চেষ্টা করেছেন তারা এখন একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ইরানের উপস্থিতি ছাড়া এ সঙ্কট উত্তরণে যুক্তিসঙ্গত কোন উপায় নেই। জরিপ ইরান ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে জুলাইয়ে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার ভিয়েনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপদেষ্টা টম শ্যানোন ওয়াশিংটনে বলেছেন, তেহরান ও মস্কো দামেস্কে নেতৃত্বের পরিবর্তন মেনে নিতে ইচ্ছুক কিনা এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে কিনা এসব বিষয় বোঝার জন্য কেরি এ শান্তি সম্মেলনে সুযোগ নেবেন। শ্যানোন বলেন, সিরীয় রাজনৈতিক উত্তরণ প্রক্রিয়ার সময় আসাদকে ক্ষমতা থেকে অবশ্য সরে যাওয়ার ব্যাপারে তাকে সম্মত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিস্তৃতভাবে কাজ করতে কতটুকু প্রস্তুত তা নিরূপণ করবেন কেরি। যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ইউরোপীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের সহযোগী দেশগুলোর দাবি, যে কোন শান্তিচুক্তির অংশ অনুযায়ী আসাদকে ক্ষমতা ত্যাগে সম্মত হতে হবে। কিন্তু আসাদ পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন এবং রাশিয়া ও ইরান ওই ধরনের যে কোন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে বারবার। পাশ্চাত্যের কর্মকর্তারা শুক্রবারের শান্তি আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে নৈরাশ্য প্রকাশ করেছেন।
×