ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পৌর ও ইউপি নির্বাচনের আগে আর কোন দল নিবন্ধন নয় ॥ সিইসি

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

পৌর ও ইউপি নির্বাচনের আগে আর কোন দল নিবন্ধন নয় ॥ সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে কোন নতুন দলকে নিবন্ধন দেবে না নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, নির্বাচনের আগে হাতে সময় খুব কম রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন দল নিবন্ধনের জন্য সময় দেয়া যাবে না। কারণ নির্বাচনের আগে নিবন্ধনের আবেদন যাচাই-বাছাই করে শেষ করা যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) মিলনায়তনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশন এ বছরের ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচন করতে চায়। স্থানীয় নির্বাচনের তফসিল প্রসঙ্গে বলেন, আইনের জন্য অপেক্ষা করছি। সময় কম পাওয়া যাবে। এজন্য দ্রুত কাজ করতে হবে। সে মোতাবেক বিধি সংশোধনের কাজ এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগেও দলীয় সমর্থনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে। শুধু নির্দলীয় প্রতীক ছিল। এখন দলীয় প্রতীক দিয়ে সে বিষয়টি আনুষ্ঠানিক করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সুযোগও রাখা হবে। নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই নির্বাচন হয়। কোথাও পুলিশও দেখি না। নির্বাচনে সহিংসতা হয় শুধু আমাদের এ অঞ্চলে। তবে আশা করি এমন দিন আসবে আমরাও সহিংসতা ছেড়ে দেব। বিচারের শান্তিপূর্ণ পথ রয়েছে। কারও মাথায় লাঠি মারার প্রয়োজন নেই। আমরা সেটা মোকাবেলার চেষ্টা করছি। এজন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হবে নির্বাচনে। অবৈধ ভোটার ঠেকানো ও মৃত ভোটার কর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। বেলা ১১টায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সম্মেলনকক্ষে ভুয়া জন্ম সনদের মাধ্যমে অবৈধ ভোটার ঠেকাতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সহায়তার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, চার নির্বাচন কমিশনার, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, কাউন্সিলর ও নির্বাচন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, জন্ম সনদে যাতে প্রকৃত বয়স উল্লেখ করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধান, অপ্রাপ্তবয়স্করা যাতে ১৮ বছর দেখিয়ে জন্ম সনদ সংগ্রহ করতে না পারে, মৃত ব্যক্তির তথ্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের তথ্য প্রদান, কবরস্থান বা শ্মশানে রক্ষিত মৃত্যু রেজিস্টারে তথ্য সংগ্রহ ও নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রদান করা এবং মেয়র ও কাউন্সিলরদের কমিশনকে মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও বৈঠকে স্মার্টকার্ড বিতরণে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার বিষয়েও আলোচনা করা হয়। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বৈঠকে জানান, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মৃত ভোটারের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে তালিকা সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাকে দিয়ে দেয়া হবে। গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানে অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে কোন আদেশ এখনও জারি করা হয়নি। কমিশন জানিয়েছে, নতুন এ আইনে দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনে শুধুমাত্র কমিশনের নিবন্ধিত দলই অংশগ্রহণ করতে পারবে। এর বাইরে স্বতন্ত্রভাবেও কোন প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। তবে দলীয়ভাবে বা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন থাকতে হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। যাচাই শেষে কমিশন এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। বর্তমানে কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪০টি। কমিশন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে অনেক নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। অপরদিকে সিইসি বলেছেন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের আগে আর কোন দলকে নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হবে না।
×