জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট ॥ জেলা শহর হতে মাত্র ১৫/২০ কিলোমিটার দূরে তিস্তা নদীর পাড়ের গ্রাম রাজপুর খুনিয়াগাছ ও কালমাটি। এই গ্রাম দু’টোতে কার্তিক মাস এলেই খবর পাওয়া গেছে, অনাহারে মানুষ মরছে। সরকারীভাবে বলা হয়েছে- অনাহারে নয়। মারা গেছে অপুষ্টিতে। সরকার ঘুরিয়ে কথাটা স্বীকার করে নিয়েছে। এরশাদ ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিলেন, কার্তিক মাসে রংপুর এলাকার কোন মানুষ না খেয়ে মারা যাবে না। তা মেনে নেয়া হবে না। দেশে সামরিক আইন চালু আছে, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। মিডিয়ায় অপপ্রচার বন্ধ করুন। সে সময় কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চলছিল মঙ্গা। দিনমজুরদের হাতে কাজ ছিল না। রৌমারীতে এক দিনমজুর কয়েকদিন উপোস থেকে মারা গেছে। মৃত্যুর আগে ওই দিনমজুরের ভাগ্যে ছিল দুধকলা। বাড়ির পাশে এক পরিবারের গাভীর বাছুর হয়। প্রথম দিনের দুধকে উত্তরের মানুষ খায় না। একে কাইচলা গাইয়ের দুধ বলে। এ দুধ ফেলে দেয়া হয়। দিনমজুরের বাড়িতে খাবার নেই। দিনমজুরের স্ত্রী পাশের বাড়ি থেকে ওই দুধ চেয়ে নিয়ে আসেন। তারা চালও দেয়। সামনের দোকানি দু’টি পচা কলাও দেয়। শেষে ফেলে দেয়া দুধ আর পচা কলা দিয়ে ভাত মেখে দিনমজুর খেয়ে মারা যান।
গত সাত বছর ধরে মঙ্গার কোন সংবাদ মিডিয়ায় আসেনি। মঙ্গা নেই। রাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফা। তিনি বিএনপি নেতা। জানান, এখন রাজপুরে মঙ্গা নেই। মানুষ না খেতে পেয়ে মরে না। রাতে মানুষ খেয়ে ঘুমাতে যায়। বাজারে চালের কমতি নেই। আছে কাজের অজস্র সুযোগ। তাই অভাবও নেই।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: