ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২৬ অক্টোবর ২০১৫

শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিম্নতম স্তর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সর্বশেষ ধাপের শিক্ষার্থী পর্যন্ত টিউশন ও পরীক্ষার ফি আদায়ে কোন সুষ্ঠু নিয়ম না থাকায় এ ক্ষেত্রে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতাই চলে আসছে। উদাহরণস্বরূপ একাদশ শ্রেণীর কথাই ধরা যাক। গত জুনে রাজধানীর বেসরকারী কলেজগুলোতে একাদশ শ্রেণীর ভর্তির বেলায় প্রত্যক্ষ করা গেছে, মনগড়া ফি নির্ধারণ। ভর্তি নীতিমালায় নির্দিষ্ট টাকার অঙ্ক দেয়া থাকলেও একেক কলেজ একেক ধরনের ফি নির্ধারণ করেছিল। কলেজে ভর্তি ফি ন্যূনতম ১২ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পূর্বেকার স্ট্যাটাস বা সুনাম এবং বিদ্যমান স্ট্যান্ডার্ড ও সুবিধাদি বিবেচনা করা হয়নি। টিউশন ফির বেলায়ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। এর ফলে খেয়ালখুশিমতো ফি নির্ধারণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। সরকার অবশেষে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৈরি করা হচ্ছে ‘শিক্ষা আইন-২০১৫’। খসড়া আইন অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে কিন্ডারগার্টেন, ইংরেজী মাধ্যম ও এবতেদায়ী মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষা আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হলেও এতদিন বিষয়টি ঝুলেছিল। তবে এবার সরকারের অনুমোদন ছাড়া বেতন-ফি নির্ধারণে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদ- বা উভয় দ-ের বিধান রেখে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। যে কেউ এ বিষয়ে আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মতামত দিতে পারবেন। বছরখানেক আগে দেশের বেসরকারী ইংরেজী মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন ও ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়ে একটি নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একটি খসড়াও তৈরি করা হয়েছিল। সরকার-নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি নেয়া হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছিল। খসড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। মহানগর এলাকায় অবস্থিত ‘এ’ শ্রেণীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাসিক বেতন ধরা হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা এবং মহানগরের বাইরের জন্য দেড় হাজার টাকা। এছাড়া ভর্তি ও সেশন ফি মহানগর এলাকায় অবস্থিত ‘এ’ শ্রেণীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ হাজার এবং মহানগরের বাইরে অবস্থিত একই শ্রেণীর প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। রাজধানীর ইংরেজী মাধ্যম স্কুলের সেশন চার্জ না নেয়ার ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও সেশন চার্জের সমপরিমাণ অর্থ বারো মাসে ভাগ করে প্রতিমাসে সেটি আগের টিউশন ফির সঙ্গে যোগ করে বাড়তি ফি আদায়ের দৃষ্টান্ত রয়েছে। শিক্ষায় ভ্যাট আরোপের বিষয়টি নানা মহলে সমালোচিত হয়েছে। তাই এ ব্যাপারেও সরকার একটি অভিন্ন নীতি অনুসরণ করবেÑ অভিভাবক মহলের এটাই প্রত্যাশা।
×