ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ভাজি ভর্তা মাছের ঝোলে কুকিয়ার শিম হলে

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

ভাজি ভর্তা মাছের  ঝোলে কুকিয়ার শিম হলে

ভাজি, ভর্তা, চচ্চড়ি, শিম দিয়ে মাছের ঝোল আহা কি স্বাদ! যেন মুখে লেগে থাকে। আর তা যদি হয় চুয়াডাঙ্গার কুকিয়া চাঁদপুর গ্রামের শিম, তবে তো কথাই নেই। এ গ্রামের শিমের স্বাদ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের শিম থেকে আলাদা। আর এ কারণেই ঢাকাসহ সারাদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। চুয়াডাঙ্গার অর্থনীতিতে এ শিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে অবদান রাখছে শিম। এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকরা। সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা ছোট্ট গ্রাম, নাম তার কুকিয়া চাঁদপুর। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে এ গ্রামের অবস্থান। সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের এ গ্রামে বসবাস করে মাত্র আড়াইশ’ পরিবার। এর মধ্যে দুই শ’ পরিবার সবজি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এদের সবারই রয়েছে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর শিমের চাষ। একসময়ের পশ্চাৎপদ এই গ্রামের কৃষকরা শিম চাষ করে এখন স্বাবলম্বী। খ্যাতি পেয়েছে শিমের গ্রাম হিসেবে। চলতি মৌসুমে জেলায় গ্রীষ্মকালীন শিমের চাষ হয়েছে তিন হাজার পাঁচশ’ ৭৮ বিঘা জমিতে। এর মধ্যে কুকিয়া চাঁদপুর গ্রামেই চাষ হয়েছে ২শ’ ৮০ বিঘা জমিতে। যার মধ্যে রয়েছে রূপভান ও অটো জাতের শিম। শিম চাষী কাসেদ আলী জানান, ধান-গম-পাট চাষ করে যখন প্রতিবছরই লোকসান দিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ঠিক তখনই গ্রামের আশরাফুল, লালচাঁদ, গৌতম ও রমজান মাত্র পাঁচ বিঘা জমিতে শিম চাষ শুরু করে। এদের উৎপাদিত শিমের প্রথম চালান আশরাফুল ঢাকার কাওরানবাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। পরের চালান নিয়ে যাওয়া হলে সবার আগে এদের শিম বিক্রি হয়ে যায়। এভাবেই এগিয়ে যায় শিম চাষ। এখন আশরাফুল ঢাকায় থাকেন। এই গ্রামের শিম কাওরানবাজারে পাঠালে আশরাফুল তা বিক্রি করে টাকা পাঠিয়ে দেন। শিম চাষী আহাদ আলী জানান, এ চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৬৫-৭০ মণ হারে। এখন শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা দরে। তবে শীত মৌসুমে উৎপাদন বাড়লে দাম অর্ধেকে আসে। এ হিসেবে গ্রামের চাষীরা শিম বিক্রি করে পাবে পাঁচ কোটি টাকা। চাষে খরচ হবে ৭০ লাখ টাকা। লাভ হবে চার কোটি ৩০ লাখ টাকা। -রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা থেকে
×