ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যদিনের বিড়ম্বনা

প্রকাশিত: ০৮:২৯, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

নিত্যদিনের বিড়ম্বনা

সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়মে মেয়ে এবং ছেলে পাশাপাশি অবস্থান করে। কিন্তু তাদের এই বসবাস বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। পুরুষ প্রতিনিয়ত মেয়েদের শোষণ-নির্যাতন এবং ভোগ করতে চায়। একটি মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ভোগ করা পুরুষের বিকৃত রুচির বহির্প্রকাশ। শুধুমাত্র ধর্ষণ মানেই নারীভোগ নয়, নারীর প্রতি কু-দৃষ্টি দেয়া, তাকে যে কোন উপায়ে শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিব্রত করাও তাকে ভোগ করা। ঘরে বাইরে সমান তালে কাজ করছে মেয়েরা। স্কুল-কলেজ-কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য কিংবা বেড়াতে বা অন্য প্রয়োজনে কোথাও যাওয়ার জন্য মেয়েরা বাসে উঠছে প্রতিনিয়ত। বেশিরভাগ মেয়েদের বাসে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। কিন্তু বাসে যাতায়াত মেয়েদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যের নয়। বাসে মেয়েরা নানা রকম ঝামেলার শিকার হয়। বাসে ওঠার সময় যদি ভিড় থাকে, তাহলে পেছন থেকে মেয়েদের ঠেলে দেয়, কেউ আবার বাসের ভেতর থেকে ধরে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু একটি মেয়ের এগুলোর কোনটাই দরকার হয় না। সে একা বাসে উঠতে সমর্থ রাখে। এগুলো পুরুষের যৌন সুড়সুড়ি ছাড়া আর কিছু নয়। মেয়েদের এ অভিজ্ঞতা হয় যেমন সিটিং সার্ভিস বাসে, তেমনি লোকাল বাসেও। আবার শুধু বাসে ওঠার সময়ই নয়, সিটে বসার পরও বিড়ম্বনা কম নয়। দেখা যায়, মেয়েটির পাশে কোন পুরুষ বসলে কেউ কেউ খুব ঘেষে বসে, কেউ কেউ অযাচিত হয়ে কথা বলে, অনেকে কথা বলতে বলতে ফোন নম্বর চায়, অনেকে আবার তার সঙ্গে বাস থেকে নেমে চা খাওয়ারও প্রস্তাব দেয়। অনেক সময় দূরে বসেও মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে পুরুষরা। ছোট কাগজে নিজের ফোন নম্বর লিখে হঠাৎই ছুড়ে দেয় কোন মেয়ের দিকে। এই কাগজের টুকরো মেয়েদের গলা লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়, যেন টুকরোটি মেয়েটির জামার ভেতরে চলে যায়। এ হলো বসা অবস্থায়। আর ভিড়ের মধ্যে মেয়েটি দাঁড়িয়ে থাকলে তো কথাই নেই। পিঠের সঙ্গে পিঠ লাগানো, অকারণে পশ্চাদদেশ ছোঁয়া, জোরে নিঃশ্বাস ফেলে মেয়েদের ঘাড়ে-গলায় সুড়সুড়ি দেয়ার মতো কত অসভ্যতা যে সহ্য করতে হয় মেয়েদের। বেশিরভাগ মেয়েই এ সব নীরবে সহ্য করে। এর কারণও সমাজের অসঙ্গতি : মেয়েদের কথা বলা নিষেধ করতে করতে পরিবার সমাজ এমন এক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে যে, তারা সঙ্গত কথাও মুখ ফুটে বলতে পারে না, প্রতিবাদ করতে পারে না। নিজেরা ভেতরে ভেতরে সঙ্কুুচিত হয়, রেগে যায়। তারা মনে মনে এই সব পুরুষকে ঘৃণা করে, এদের মৃত্যু কামনা করে। হয়ত কেউ কেউ পরদিন বাসে উঠতে ভয় পায়, ভীত হয়ে থাকে। অন্যদিকে, কখনও কোন নারী প্রতিবাদ করে, কেউ বা গালে চড় বসিয়ে দেয়, কিন্তু তাদের সংখ্যা খুবই কম। আবার এই প্রতিবাদী নারীর পাশে অন্য কোন মানুষও এগিয়ে আসে নাÑ নীরব হয়ে থাকে। এক কথায় বাসে যাতায়াত আদৌ নারীবান্ধব নয়। এর থেকে মুক্তি প্রয়োজন। তবে চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। যে সব পুরুষ নারীদের এভাবে যন্ত্রণাদগ্ধ করছে, তারা কখনও ভাল মানুষ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। নারীদের গ্রুপ ডব্লিউ-২০ নারীদের নিয়ে নারীদের জন্য উইমেন টোয়েন্টি বা ডব্লিউ২০ নামে নতুন একটি গ্রুপ বা গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায়। গতকাল ডব্লিউ২০ গ্রুপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে (সামনের সারিতে বাঁ থেকে ডানে) তুর্কি উপপ্রধানমন্ত্রী চেভদেত ইলমাজ, ডব্লিউ২০ গ্রুপের প্রেসিডেন্ট গুলদেন তার্কতান, তুর্কি প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সারে দাবুতোগলু, প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাবুতোগলু, পরিবার ও সমাজমন্ত্রী আয়সেন গারক্যান, ওইসিডির মহাসচিব হোসে অ্যাঙ্গেল গরিয়া, উইমেন অ্যান্ড ডেমেক্রেটি অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমাইয়ি এর্দোগান প্রমুখ স্থানীয় পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়ণ নরসিংদী জেলা জজ আদালত ভবনে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে মুখ্য বিচারিক হাকিম শামীমা আফরোজের (বাঁ তেকে চতুর্থ) পরিচিতি সভায় (বাঁ থেকে) জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সুরাইয়া বেগম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীম আহাম্মদ, জেলা ও দায়রা জজ বেগম ফাতেমা নজীব এবং সিভিল সার্জন পুতুল রায়। এ পদগুলোর পাশাপাশি পুলিশ সুপারসহ জেলার বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ পদই এখন অলংকৃত করছেন নারীরা
×