ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়া-নাটোর সড়ক বেহাল

প্রকাশিত: ০৭:১১, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বগুড়া-নাটোর সড়ক বেহাল

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়া-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের এতটাই বেহাল অবস্থা যে একে প্রতিবন্ধী বলা যায়। ৭২ কিলোমিটার মহাসড়কের অর্ধেকেরও বেশি স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে পাকার চিহ্ন নেই। বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দ তো আছেই। সামান্য বৃষ্টিতেই পথ হারিয়ে যায়। যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি ও কাহিলের মাত্রা অবর্ণনীয়। গত ক’বছর ধরে এই সংস্কার এই বন্ধ এই অবস্থাই যেন নিরন্তর। ঠিকমতো মেরামত আর হয় না। ষাটের দশকের শেষে নির্মিত এই মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৭২ কিলোমিটার। বগুড়া অংশের সদরের শাকপালা থেকে জেলার শেষ প্রান্ত নন্দীগ্রাম উপজেলার রনবাঘা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার এবং পরবর্তী অংশের নাটোর পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার যথাক্রমে বগুড়া ও নাটোর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে। দীর্ঘ এই সড়কের ওপর দিয়ে রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাটোর পাবনা ও দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সকল জেলায় যানবাহন চলাচল করে। উল্লেখ্য, বাংলাবান্ধা থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত ট্রানজিট আন্তঃদেশীয় রুটের যে বৃহৎ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা এই মহাসড়কের ওপর দিয়েই যাবে। তখন মহাসড়কটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহাসড়কে পরিণত হবে। এই বিষয়ে একটি জরিপ হয়েছে। কিছু প্রস্তাবনাও দেয়া আছে, যাতে ভারি যানবাহন দ্রুত চলাচলে কোন অসুবিধার সৃষ্টি না হয়। সড়কের বগুড়া অংশের নন্দী গ্রামের কালিকাপুর, বাঁশবাড়িয়া, কুন্দারহাট, বাবুরপুকুর, টেঙ্গামাগুর অংশের অবস্থা খুবই নাজুক। একইভাবে নাটোর অংশের বেশিরভাগ স্থানেই বিশেষ করে সিংড়া থেকে নাটোর পর্যন্ত সড়কের সামান্য দূরত্বে কার্পেটিং উঠে গিয়েছে। গর্ত তো আছেই। সংস্কার না হওয়ায় গর্তের আকার ও গভীরতা বাড়ছে। সূত্র জানায় গেল ঈদের আগে যানবাহন চলাচলে ও যাত্রী সাধারণের কিছুটা স্বচ্ছন্দ ভ্রমণে দুই জেলার সওজ বিভাগ সড়কের যানবাহন চলাচলের অযোগ্য স্থানগুলোতে ইট ও খোয়া ফেলে সংস্কার করে। সাময়িক এই সংস্কার টেকেনি (না টেকারই কথা)। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গেই এবারের বৃষ্টিপাতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রাস্তাকেই ধকল পোহাতে হয়। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে মালিক ও চালক যেতে চায় না। গাড়ির টায়ার ইঞ্জিনসহ আনুষঙ্গিক কলকব্জা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, এইসব কারণ দেখায় তারা। ক’জন চালক জানান, যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাবার পরও দুর্ঘটনার শঙ্কা থেকেই যায়। মহাসড়কের এই অচলাবস্থার কথা স্বীকার করে সওজ কর্তৃপক্ষের কথা- রাস্তাটি মেরামতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শীঘ্রই দরপত্র আহ্বান করা হবে। তারপর মেরামত কাজ। সুধীজনের কথা : এই কাজ শেষ হতে না জানি কতদিন লাগে! ততদিন যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ- সইতেই হবে। রংপুরে মহাসড়ক খানাখন্দে ভরা স্টাফ রিপোর্টার রংপুর থেকে জানান, ঢাকা দিনাজপুর মহাসড়কের রংপুর অংশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে একদিকে যেমন নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ, অন্যদিকে ঘটছে দুর্ঘটনাও। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইট বালু এবং খোয়া ফেলে গর্ত ভরাটের চেষ্টা চালালেও বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মুছে আবারও নিয়েছে আগের রূপ। যাত্রী এবং চালকরা বলছেন ঈদের আগে স্থায়ীভাবে সংস্কারের ব্যবস্থা করা না হলে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করবে। রংপুর ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধার ধাপেরহাটের পর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রবেশ মুখ থেকে তারাগঞ্জ উপজেলার চিকলীভাটা পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকাজুড়েই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কেই প্রতিদিন চলছে শতশত ভারি যানবাহন। ঈদ সামনে রেখে এরই মধ্যে শুরু হবে ঘরে ফেরা মানুষের চাপ। বাড়বে যানবাহন, ব্যস্ত হবে মহাসড়ক। কিন্তু সড়কের এই বেহাল দশায় এখনই বিকল হয়ে পড়ছে গাড়ির যন্ত্রপাতি। চালক ও যাত্রীরা বলছেন, একটি গ্যাপ পার হলেই আরেকটি গ্যাপ। এতে গন্তব্যে পৌঁছাত সময় লাগছে অনেক বেশি। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই সড়কের এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো যাতে আরও বেড়ে না যায় এজন্যই এই ইট বালু ফেলা হচ্ছে। রায়পুরে সড়ক যেন মরণ ফাঁদ সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, লক্ষ্মীপুুরের রায়পুরের বেহাল সড়কগুলো জনসাধারণের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই চলাচল অনুপযোগী রাস্তাগুলোতে এখন তৈরি হয়েছে হাজারো ছোট-বড় গর্ত। ২-৩ হাত ভাল সড়কও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ভয়ঙ্কর গর্তের পর গর্তে যানবাহনের চালকরাও ত্যক্ত-বিরক্ত। ব্রেক কষতে কষতে তাদের ত্রাহী অবস্থা। শুধু প্রধান সড়কগুলোই নয়, স্থানীয় সড়কগুলোর অবস্থাও একই। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারের অভাবে পথযাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহানোর পাশাপাশি নিত্য বাড়ছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে দেখা গেছে, রায়পুর-হায়দরগঞ্জ সড়ক এখন সবচেয়ে বেশি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এছাড়া কাপিলাতলি সড়কের কেএসপি উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনের রাস্তায় পুকুরের মতো গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রায়পুরের এমপি হারুনুর রশিদ সড়ক বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গিয়ে বড় বড় গর্ত ও উঁচু-নিচু হওয়ায় যানবহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পৌর মেয়র এবিএম জিলানী ও নির্বাহী প্রকৌশলী এটিএম সাদেক বলেন, সড়কগুলো সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। সংস্কার কাজে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে সে কাজগুলো স্থগিত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী আক্তার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কোন বরাদ্ধ না পাওয়ায় সড়কগুলো মেরামত বা সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানরা সড়কের বিষয়ে জানালেও কিছুই করা যাচ্ছে না। তারপরও হায়দরগঞ্জ সড়কটি ইট-বালু দিয়ে সাময়িক মেরামত করে দেয়া হয়েছে।
×