ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জে আগাম কপির বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত

প্রকাশিত: ০৬:২২, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মুন্সীগঞ্জে আগাম কপির বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার আগেই শুরু হয়েছে কৃষকের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আসন্ন শীতের সবজি বাজারকে সমৃদ্ধ করতে চলছে বীজতলা তৈরির কাজ। তাই জেলার উঁচু জমিগুলোতে কপির বীজতলা তৈরি নিয়ে ব্যস্ত কৃষকরা। জেলার ১০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে এবার বীজতলা হয়েছে। বপনের পর মাত্র ২০ দিবসে এই বীজতলা বাজারজাতের উপযোগী হচ্ছে। এতে অল্প সময়েই লাভবান হচ্ছে কৃষক। এই কফি চারার অধিকাংশই যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। মুন্সীগঞ্জের উঁচু জমিগুলোর যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই এখন বীজতলা। চারাগুলোকে রোপণের উপযোগী করতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এখানকার কৃষকরা। সদর উপজেলার পঞ্চসার, দশকানি, ভট্টাচার্যের বাগ, রামপাল, সুখবাসপুর, হাতিমারা, জোড়ারদেউল, পানাম, পাইট্টালপাড়া, রামেরগাঁও, কেপিবাগ, দালালপাড়া, ধলাগাঁও, রামশিং, বজ্রযোগিনি, সুয়াপাড়া, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বড়লিয়া, পাইকপাড়া, রান্ধনীরাড়ি, কান্দাপাড়া গ্রামের উঁচু জমিগুলোতে এখন কপির বীজতলা তৈরি নিয়ে কৃষকের ব্যস্ততার যেন নেই শেষ। শুধু দিনের বেলায়ই নয় রাতের কুয়াশা এবং বৃষ্টি থেকে রক্ষায় বীজতলা ঢেকে রাখা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই যথাযথ পরিচর্যা এবং যতেœ বীজতলাগুলো সবুজ হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া, মাটি এবং কৃষকের বিশেষ দক্ষতার কারণে অল্প সার ও বীজ ব্যবহার করে শক্ত সবল ও উন্নতমানের বীজ উৎপাদন হচ্ছে এখানে। এবার বীজের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ অপেক্ষাকৃত বেড়ে গেলেও চারা উৎপাদন বেড়েছে। তবে বিদেশী এই বীজ সরকারীভাবে কৃষকদের মাঝে পৌঁছানোর দাবি উঠেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অবগত করা হয়েছে। যাতে সরকারীভাবে এই উন্নত বীজ আমদানি করে তা সহজে এবং সূলভ মূল্যে পৌঁছানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এছাড়া বর্ষায় বিদায়লগ্নে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের মধ্যে শঙ্কাও কাজ করছে। তিস্তার ভাঙ্গনে তিন দিনে ৫শ’ পরিবার গৃহহারা স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর ॥ আবারও নতুন করে নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তাপারের মানুষ। গত কয়েকদিনে সেখানকার অন্তত ৫শ’ পরিবার ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে গরু-ছাগল-হাঁস- মুরগি ছাড়াও গাছপালা। সর্বস্বান্ত এ মানুষের অনেকেই এখন আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বাঁধে। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষই কমবেশি নদী ভাঙ্গনের শিকার হলেও পাউবো কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গন রক্ষায় কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। বুধবার মধ্যরাত থেকেই ভাঙ্গনের ভয়াবহতা আকস্মিকভাবে বেড়ে যায়। নদীর এ ভাঙ্গন সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে উপজেলার আলমবিদিতর আর কোলকোন্দ ইউনিয়নে। বুধবার রাত থেকে এ দুটি ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের ৫শ’ পরিবারের ঘরবাড়ি গিলে খেয়েছে সর্বগ্রাসী তিস্তা। কেউ কেউ তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিলেও অনেকেই কিছুই সরাতে পারেনি। ফলে এক রাতেই নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই। বর্তমান চরম হুমকির মুখে রয়েছে পাইকান আকবরিয়া ইউসুফিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, পাইকান জুম্মাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইকান আকবরিয়া শিশু সদনসহ একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা। ইতোমধ্যেই ফাজিল মাদ্রাসার ৮টি কক্ষ বিলীন হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আফতাবুজ্জামান জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই মাদ্রাসাটি এর আগে তিনবার স্থানান্তর করা হয়েছে। এবার বিলীন হলে এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙ্গে পড়বে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে কোন রকমে তা রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, যে পরিমাণ বালু দিয়ে বস্তা ভরাট করে ফেলার কথা তা ঠিকাদার করছে না। ফলে ভাঙ্গন রক্ষা কতটা সম্ভব তা নিয়েও সন্দিহান তারা। অন্যদিকে ভাঙ্গন কবলিত মানুষের অভিযোগ, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলেও সরকারী-বেসরকারীভাবেও কেউ তাদের খোঁজখবর নেয়নি। এ ব্যাপারে পাউবোর শাখা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান নদী ভাঙ্গনের জন্য তিস্তার ক্যারেক্টারকে দায়ী করে বলেন, ভাঙ্গন রোধে আবার নতুন করে তারা কাজ শুরু করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী¡ মশিউর রহমান রাঙ্গা জনকণ্ঠকে জানান, ভাদ্রমাসে এবার হঠাৎ করেই এমন বৃষ্টির কারণে এই ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিনি জানান, স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধের জন্য ১শ’ ২১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি পাস হলে ভাঙ্গন সমস্যা দূর করা সম্ভব। খানাখন্দে অচল ঠাকুরগাঁওয়ের অধিকাংশ সড়ক নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৫ সেপ্টেম্বর ॥ অধিকাংশ সড়কেরই কার্পেটিং উঠে গেছে। সড়কে তৈরি হয়েছে ছোটবড় অসংখ্য খানাখন্দ। বৃষ্টিতে এসব গর্তে পানি জমে থাকায় পাড়া-মহল্লাসহ এলাকাবাসীর যেন ভোগান্তির অন্ত নেই। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এসব রাস্তার এমন বেহাল দশা। সরেজমিনে দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে পৌর শহরের চৌরাস্তা, বসিরপাড়া, সরকারপাড়া, পূর্ব গোয়ালপাড়া, মুন্সিপাড়া, আশ্রমপাড়া, হঠাৎপাড়াসহ উপজেলার সড়ক মহাসড়কগুলোতে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ। পাথর ও ইটের খোয়া বেরিয়ে এসেছে। ঝাঁকি খেতে খেতে আগাচ্ছে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাসহ নানা যানবাহন। খানাখন্দে জমে থাকা কাদা পানি ছিটকে নোংরা হচ্ছে পথচারীদের পোশাক। শহরের সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কের বসিরপাড়া, সরকারপাড়া ও পূর্ব গোয়ালপাড়া এলাকায় চারটি বেসরকারী ক্লিনিক রয়েছে। ওই এলাকার রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙা। ফলে এলাকাবাসীসহ ক্লিনিকগুলোতে আসা রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বসিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আক্কাছ আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার রাস্তাটি কয়েক বছর ধরেই ভাঙা। রাস্তাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অথচ এটি চলাচলের অনুপযোগী।’ এ ছাড়া মুন্সিপাড়ার রাস্তার কার্পেটিং উঠে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। দুই পাশ ভেঙে সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলও হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। সামান্য বৃষ্টিতেই নরেশ চৌহান সড়কের হলপাড়ার সংযোগ রাস্তা দুটোতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে নর্দমার ময়লা-আবর্জনা রাস্তায় চলে আসে। মহল্লাবাসীকে নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হয়। আশ্রমপাড়ার বঙ্গবন্ধু সড়কের সংযোগ রাস্তাগুলোর দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। ঈশ্বরদীর অধিকাংশ রাস্তাই বেহাল স্টাফ রিপোর্টার ঈশ্বরদী থেকে জানান, এক দশমিক ৩৩ কিলোমিটার মোট রাস্তার মধ্যে প্রায় ১শ’ কিলোমিটার রাস্তায় খানাখন্দে ভরা ও চলাচলের অযোগ্য। পৌর এলাকায় বিটুমিনাস কার্পেটিং রাস্তা ৭৪ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার, এইচবিবি ৩৩ দশমিক ৩০ কিলোমিটার, সিসি রাস্তা ৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার, ডাব্লু বি এম রাস্তার পরিমাণ ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার ও কাঁচা রাস্তা সাড়ে ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এসব রাস্তার মধ্যে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়ক, ঈশ্বরদী-পাকশী ইপিজেড সড়ক, ঈশ্বরদী-লালপুর বিমানবন্দর সড়ক, ঈশ্বরদী বেনারশি পল্লী হয়ে মাজগ্রাম সড়ক, চাঁদআলীর মোড় থেকে কলেজ হয়ে অরণখোলা মোড় সড়ক, ভেলুপাড়া থেকে ইস্তা সড়ক, পৌরসভা থেকে উমিরপুর সড়ক, রেলগেট থেকে সাঁড়াঘাট সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তার প্রায় ৬০ ভাগ রাস্তায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব রাস্তার খানাখন্দে পানি জমে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে রাস্তা ভাঙার কারণে। যানবাহনও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভাঙা রাস্তার কারণে। দীর্ঘদিন থেকে জনগণের ভোগান্তি থাকলেও এসব রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে না। সম্পতি ঈশ্বরদী-পাকশী ইপিজেড রাস্তা মেরামতের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করে এমনকি রাস্তার খানা-খন্দে ধান ও কলাগাছের চারা রোপণ করে রাস্তা মেরামতের দাবি ও জনভোগান্তির প্রতিবাদ জানায়। এসব কর্মসূচী পালন করার পরও রাস্তাটি মেরামত না করায় বর্তমানে চলাচলের বেশি অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তালতলীতে তুচ্ছ ঘটনায় দোকান কর্মচারীর পায়ের রগ কর্তন নিজস্ব সংবাদদাতা,আমতলী (বরগুনা), ৫ সেপ্টেম্বর ॥ শুক্রবার রাতে তালতলী উপজেলার বড় অংকুজানপাড়া খোট্টারচরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী রুবেল হোসেনের (২৫) পায়ের রগ কেটে দিয়েছে মাহবুব ও খায়রুলসহ সন্ত্রাসীরা। আহত রুবেলকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার ছোট ভাইজোড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রুবেল হোসেন ও খায়রুল চায়ের দোকানে চা পান করতে যায়। এ সময় রুবেল গ্লাস থেকে কিছু পানি ফেলে দেয়। ওই পানি খায়রুলের গায়ে পরে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা মীমাংসার জন্য শুক্রবার রাতে একই এলাকার মাহবুব মিয়া রুবেলকে ডেকে বড় অংকুজানপাড়া খোট্টার চরে নিয়ে যায়। পরে ওই স্থানে থাকা খায়রুল, মিরাজ, ইলিয়াস, মন্টু, গিয়াস ও হালিমসহ ১০/১২ জন সন্ত্রাসী রড দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাথা, হাত জখম ও ডান পায়ের রগ কেটে দেয়। রুবেলকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তালতলী হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাতেই বরিশাল রুবেলকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
×