ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হিলারির ফাঁস হওয়া ই-মেইলে ইউনূসের তদ্বিরের তথ্য

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

হিলারির ফাঁস হওয়া ই-মেইলে ইউনূসের তদ্বিরের তথ্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ ফিরে পাওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সহায়তা চেয়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ ব্যাংকের ওই পদ ফিরে পেতে হিলারির সঙ্গে লবিং অব্যাহত রেখেছিলেন তিনি। সম্প্রতি হিলারির ফাঁস হয়ে যাওয়া ই-মেইলগুলোর বেশ কয়েকটি প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। প্রকাশিত কয়েকটি মেইলে দেখা যায়, গ্রামীণ ব্যাংক প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারকে প্রভাবিত করতে হিলারির কাছে বারবার তদ্বির করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদকজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর হিলারির প্রায় সাত হাজার ই-মেইল প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে তিন শতাধিক ই-মেইলে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটিতে গ্রামীণ ব্যাংক প্রসঙ্গ রয়েছে। বেশকিছু মেইলে হিলারির জবাব গোপন রেখেছে তারা। হিলারির কাছে পৌঁছুতে মেলানি নামে একজন কর্মকর্তার কাছে মেইল পাঠিয়েছিলেন ড. ইউনূস। এমন একটি ই-মেইল হিলারিকে পাঠিয়ে মেলানি লিখেন, ইউনূস এখনও গ্রামীণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে হিলারির বৈঠক এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শেখ হাসিনার অংশ গ্রহণের ফাঁকে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে আলোচনার অনুরোধ জানিয়ে ইউনূসের পক্ষ থেকে পাঠানো ওই মেইলে লেখা হয়েছে, ‘প্রিয় মেলানি, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ওয়াজেদের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ১৬ সেপ্টেম্বর হিলারি ক্লিন্টনের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। সে সময় বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যু নিয়ে আলোচনার অনুরোধ রইল। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে আমি আমাদের সমস্যা সম্পর্কে জানাতে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত চেয়েছি। কিন্তু ছয় সপ্তাহ ধরে কোন সাড়া নেই।’ ‘আমি প্রেসিডেন্টের স্বাধীনতা পদক (প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম) পাওয়ায় বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সবাই আমাকে শুভেচ্ছা জানালেও প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের পক্ষ থেকে টু শব্দও করা হয়নি। সুতরাং দেখতেই পাচ্ছেন সমস্যা কতটা জটিল রূপ নিয়েছে। আমার মনে হয় আমি এ ব্যাপারে আপনাকে ধারণা দিতে এবং কী করতে হবে তা সম্পর্কে ধারণা দিতে পারব। সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ। এইচকে (হিলারি) শুভেচ্ছা দেবেন। শীঘ্রই দেখা হবে।- ধন্যবাদান্তে ইউনূস।’ এই মেইলটি পাঠানো হয় ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টারে গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ টানা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সব সংবাদপত্রই একই ধরনের সংবাদ ছেপেছে। এটি প্রধানমন্ত্রী হাসিনার জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যের ওপর। আমার নাম উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশ আমাকে নিয়েই। সম্ভব হলে আমার সম্পর্কে তার ভয়ঙ্কর মনোভাব দূর করার উপায় বের করুন। আমি আপনাকে শান্তির দূত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে এটা ভয়াবহ রূপ নেবে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে নিউইয়র্কে আসবেন এবং তখন সম্ভবত সেক্রেটারি এইচ (হিলারি) এর সঙ্গে তার দেখা হবে।’ মেইলের নিচে ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন তুলে দেয়া হয়। ‘ইউনূস ও হাসিনার চলমান বিরোধ’ শিরোনাম দিয়ে মেলানি মেইলটি পাঠান হিলারিকে।
×