ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তথ্যমন্ত্রী

মন্ত্রীর মুখের ওপর তদ্বির ফিরিয়ে দেয়ার সৎসাহস কর্মকর্তাদের থাকতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩১ আগস্ট ২০১৫

মন্ত্রীর মুখের ওপর তদ্বির ফিরিয়ে দেয়ার সৎসাহস কর্মকর্তাদের থাকতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশ ও জাতির উন্নয়নের স্বার্থে সরকারী কর্মকর্তাদের ‘তদ্বির সংস্কৃতি’ থেকে বেরিয়ে এসে সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, কারও মুখের কথায় প্রশাসন চলে না। ‘ওপর মহলের চাপ’ বলতেও আসলে কিছু নেই। সংবিধানের ১৩৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সরকারী কর্মকর্তাদের কর্মপদ্ধতির রূপরেখা দেয়া আছে। সরকারী কর্মকর্তাদের সম্মান ও চাকরির স্থায়িত্বের নিশ্চয়তাও ওই অনুচ্ছেদে দেয়া আছে। তবুও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত তদ্বির সংস্কৃতির কারণে প্রশাসনে মেধার মূল্যায়ন হয়নি। এ অবস্থার অবসানের জন্য সরকারী কর্মকর্তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মন্ত্রীর মুখের ওপর তদ্বির ফিরিয়ে দেয়ার মতো সৎ সাহস কর্মকর্তাদের থাকতে হবে। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন (পিএসসি) ও তথ্য কমিশনের দক্ষতা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির (পিএমএস) ওপর আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের সহযোগিতায় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গবর্ন্যান্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পড়েন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব সা’দত হোসাইন। বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক সুলতান হাফিজ রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, পিএসসির চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ, তথ্য কমিশনার খুরশিদা বেগম সাঈদ, তথ্য সচিব মর্তুজা আহমেদ প্রমুখ। সরকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশপ্রেম না থাকলে কোন দক্ষতাই কাজে দেবে না। দক্ষতা অর্জনে সংশ্লিষ্ট দেশের রাজনৈতিক পদ্ধতি, সামাজিক সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখা জরুরী। দারিদ্র্য, পরিবেশগত অভিঘাত, লিঙ্গ বৈষম্য ও জঙ্গীবাদÑ চিহ্নিত এই চারটি বিষয়ের বিরুদ্ধে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সাফল্য অর্জন করতে চাইলে এগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। তিনি বলেন, দক্ষতা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি কার্যকর করতে হলে পদোন্নতি দিতে হবে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। সরকারী কর্মকর্তাদের সংবিধান ও আইনানুযায়ী চলতে হবে। অপরাধী যেই হোক ছাড় দেয়া যাবে না। তবে ‘ভারসাম্য তত্ত্ব’ প্রতিষ্ঠার নামে মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকারকে এক পাল্লায় মাপা যাবে না। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে জঙ্গীবাদকে রাষ্ট্রীয় ও আইনীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে ২৬০টি আইন প্রণীত হয়েছে। অথচ ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে আইন প্রণীত হয়েছে মাত্র ১৩৭টি। জঙ্গীবাদ দমনে আইন করার পরিবর্তে ওই সময় জঙ্গীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অনেককেই বলতে শুনি, বাংলাদেশ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। সত্যিটা হচ্ছে বাংলাদেশে একটি পক্ষই আছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ। আর যারা বোমা মারে, পেট্রোল মেরে মানুষ পোড়ায়, নারী নির্যাতন করে আইনের উর্ধে থাকতে চায় তারাই দেশটাকে দুই ভাগ করতে চায়। মূল প্রবন্ধে সা’দত হোসাইন বলেন, পিএসসির চেয়ারম্যান, সদস্য, পরিচালক ও উপ-পরিচালকÑ এই চার পর্যায়ে দুর্নীতি না থাকলে প্রশ্নফাঁস বা অন্য কোন অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। একইভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রী, সচিব এবং যুগ্ম-সচিব পর্যায়ে স্বচ্ছতা থাকলে প্রশাসনের অন্য কোন পর্যায়ে কেউ দুর্নীতিতে জড়াতে সাহস করবে না।
×